ফেসবুকের নেতিবাচকতা তুলে ধরেছেন নোবেলজয়ী নারী
বর্তমান সময়ে আমরা সবাই ফেসবুকের এক বেড়াজালের মধ্যে আবদ্ধ আছি। অজ্ঞাতসারেই আমরা বেশির ভাগ মানুষই আজ ফেসবুকের সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে নিজেদের জীবন জড়িয়ে ফেলেছি। কিন্তু ফেসবুকের অনেক ইতিবাচক দিক গ্রহণ করলেও নেতিবাচক দিকগুলো বেশির ভাগ সময় আমাদের নজরের বাইরেই থেকে যায়। সম্প্রতি ফেসবুককে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ফিলিপাইনের সাংবাদিক মারিয়া রেসা।
মারিয়া রেসা র্যাপলার নামে একটি সংবাদ সাইটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। তিনি মত প্রকাশের স্বাধীনতার আদর্শ সমুন্নত রেখে তার নিজের দেশ ফিলিপিনে ক্ষমতার অপব্যবহার, ঊর্ধ্বমুখী সহিংসতা এবং ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্বপরায়ণতার খবর প্রকাশ করায় এবার শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন। রুশ সাংবাদিক দিমিত্রি মুরাতভের সঙ্গে যৌথভাবে নোবেল জিতেছেন তিনি। সম্প্রতি রয়টার্সের এক সাক্ষাৎকারে তিনি ফেসবুকের নেতিবাচক দিক তুলে ধরেছেন আমাদের সামনে।
তিনি বলেন, ফেসবুকের কল্যাণে রাগ এবং হিংসা যেন সত্যকে ছাপিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি ফেসবুকের বিরুদ্ধে একটু গুরুতর অভিযোগ ওঠে। তাদের সাবেক এক কর্মচারী অভিযোগ তোলেন- হেট স্পিচ দমন ও ভুল তথ্য প্রতিরোধে ফেসবুক যতটা না ব্যস্ত তার চেয়ে বেশি ব্যস্ত অর্থ উপার্জনে। ৩০০ কোটিরও বেশি মানুষের এই বিশাল পরিবারের কর্তারা অবশ্য এই বক্তব্য অস্বীকার করেছে।
তিনি আরো বলেন, 'যদিও ফেসবুকই এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গণমাধ্যম তবুও এখনও এটি সত্য ও গণমাধ্যমের বিপরীতে দাঁড়িয়ে। প্রকৃত ঘটনা না জানলে আপনি সত্য জানতে পারবেন না। আপনি তখন বিশ্বাস থেকে দূরে সরে যাবেন। প্রকৃত ঘটনা, সত্য এবং বিশ্বাস- এ তিনটির একটিও যদি আপনার কাছে না থাকে তবে আপনি গণতন্ত্রহীন হয়ে যাবেন। রেসা বলেন, আর যদি সত্য জানার পরও আপনি সেটা সঠিকভাবে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে না পারেন- তবে আপনি অনেককে অনেক কিছু জানা থেকে বঞ্চিত করবেন।'
ফেসবুক গণতন্ত্রের প্রতি চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে, এমন মন্তব্য করে মারিয়া রেসা বলেন, ‘আপনার কাছে যদি তথ্য না থাকে, তবে আপনি প্রকৃত সত্য জানতে ও বিশ্বাস স্থাপন করতে পারবেন না। আর এসবের অভাব গণতন্ত্রকে দুর্বল করে তোলে।’
মারিয়ার ফেসবুক সম্বন্ধীয় মন্তব্যের ভিত্তিতে ফেসবুকের একজন মুখপাত্র বলেন, ফেসবুক এর মধ্যেই দৃশ্যমান ক্ষতিকর কনটেস্ট সরাতে বিপুল অর্থ লগ্নি ও জনবল নিয়োগ করেছে। আমরা মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী এবং অবশ্যই আশা করি পৃথিবীব্যাপী গণমাধ্যমকর্মীরা তাঁদের কাজ সঠিকভাবে করে যাবেন। তিনি যুক্ত করেন।