এমসিসির সুদীর্ঘ ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট!
ক্রিকেটের আইন-প্রণেতা হিসেবে কিছুদিন আগেই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি)। ক্রিকেটের আইনে এসেছে সম্প্রতি এক যুগান্তকারী পরিবর্তন । যে পরিবর্তনের ধারায় থাকবে না লিঙ্গ বৈষম্য। তাদের কর্মস্থলকেও দেখা হবে না আলাদা চোখে। নারী পুরুষের ভেদাভেদ আর লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে ব্যাটসম্যানের জায়গায় 'ব্যাটার' শব্দের সার্বজনীন ব্যবহারের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দিয়েছে এমসিসি। এবার খোদ এমসিসিতেই লাগল পরিবর্তনের ছোঁয়া। ক্লাবটির ২৩৪ বছরের সুদীর্ঘ ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্টও নির্বাচিত করেছে এমসিসি।
ইংল্যান্ডের সাবেক অ্যাশেজ জয়ী অধিনায়ক ক্লেয়ার কনর পেয়েছেন এই গুরুদায়িত্ব। শুক্রবার এমসিসির লর্ডসের অফিসে প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করেছেন। ইংল্যান্ডের হয়ে ১৬ টেস্ট, ৯৩ ওয়ানডে ও দুটি টি-টুয়েন্টি খেলেন কনর। কুমার সাঙ্গাকারার স্থলাভিষিক্ত হলেন কনর। গত বছরের জুনে তার নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান।
প্রাথমিকভাবে গত বছরই দায়িত্ব নেওয়ার কথা ছিল ইংল্যান্ডের অ্যাশেজ জয়ী তারকা কনরের। তবে বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে তা এক বছর পিছিয়ে যায়। এই সময়ে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন শ্রীলঙ্কার সাবেক অধিনায়ক সাঙ্গাকারা।
ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডে (ইসিবি) নারী ক্রিকেটের পরিচালকের দায়িত্বেও আছেন কনর। ১৭৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত ক্লাবটির প্রেসিডেন্টের সম্মানিত দায়িত্ব গ্রহণ করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ৪৩ বছর বয়সী কনর। ক্রিকেট নিয়ে তার কাজের অভিজ্ঞতা দিয়ে সেরাটা ঢেলে দিতে চান নতুন পরিচয়ে। তিনি বলেন "এমসিসির প্রেসিডেন্ট হতে পেরে আমি সত্যিই সম্মানিত বোধ করছি। কুমার সাঙ্গাকারাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই এই গুরুত্বপূর্ণ পদে আমার উপর আস্থা রাখার জন্য।”
তিনি আরো বলেন "ড্রেসিংরুম ও বোর্ডরুমে অর্জিত অভিজ্ঞতা দিয়ে আগামী ১২ মাসে চেষ্টা করব ক্লাবের নেতৃত্ব ও কমিটির সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার, ভূমিকা রাখার ও তাদের সমর্থন দেওয়ার। আমি সত্যিই এমসিসি দলের অংশ হওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।"
নারী ক্রিকেটের অন্যতম সেরা তারকা হিসেবে বিবেচিত কনর ২০০০ সালে ইংল্যান্ডের নেতৃত্ব পান। ৪২ বছরের মধ্যে ২০০৫ সালে দেশকে জেতান প্রথম অ্যাশেজ ট্রফি। ২০০৭ সালে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের নারী ক্রিকেটের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি।
যেকোনো কর্মক্ষেত্রেই মেয়েরা প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে সাফল্যের জয় আনতে পারে। কোনো বাধাই যে নারীদের কাছে বড় নয় তা প্রতিনিয়ত প্রমাণ করছেন নারীরা । ক্লেয়ার কনর যেন নতুন করে এর সুস্পষ্ট ইঙ্গিত দিলেন এমসিসির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে। ৪৫ বছর বয়সী এই নারী অলরাউন্ডার এমসিসির ইতিহাসে রেখে গেলেন এক স্বরনালী অধ্যায়।