বিশ্ব পর্যটন দিবস আজ!
ভ্রমণ যা মানুষের মনে নিয়ে আসে প্রশান্তি। কাজ করতে করতে মানুষের জীবনে যখন এক গাদা অবসাদ চলে আসে,ঠিক তখনেই ভ্রমণ মানুষকে তার আত্মিক শক্তিকে প্রফুল্ল করে। ভ্রমণ পিপাসু মানুষদের জন্য একটি নির্ধারিত দিনেই রয়েছে।পর্যটন শিল্প কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে নানা কর্মক্ষেত্র। কার্যত ক্ষেত্রে বলা চলে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে পর্যটন শিল্প দেশের একটি চালিকা শক্তি বটে। তারই ধারাবাহিকতায় একটি দিনকে বিশ্ব পর্যটন দিবস হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
আজ সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব পর্যটন দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হবে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির জন্য পর্যটন’। জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থার (ইউএনডব্লিউটিও) উদ্যোগে ১৯৮০ সাল থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর দিবসটি পালন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের মতামত প্রকাশ করেছেন। রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রপতি মোঃ. আবদুল হামিদ এক বাণীতে স্থানীয় কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও মূল্যবোধকে সমুন্নত রেখে পর্যটনের উন্নয়নের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে পর্যটন সংশ্লিষ্ট সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, পর্যটন শিল্প বর্তমান বিশ্বে শ্রমঘন এবং সর্ববৃহৎ শিল্প হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে দারিদ্র্য দূরীকরণ ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নসহ দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য পর্যটনের গুরুত্ব অবশ্যম্ভাবী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে পর্যটনের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রে এই শিল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। আবহমান গ্রাম বাংলার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রেখে যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দায়িত্বশীল পর্যটন কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য সকলকে।
দিবসটির লক্ষ্য পর্যটনের ভূমিকা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক উপযোগিতাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া। প্রতিবছরের মতো এবারও বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডসহ বিভিন্ন পর্যটন সংস্থা দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
এছাড়া বাদ্যযন্ত্রসহ ২০টি সুসজ্জিত রিকশার একটি র্যালি রাজধানীর গুলশান-বারিধারা কূটনৈতিক এলাকায় বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে প্রচারণা চালাবে। দেশের প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পর্যটন অংশী-জনদের নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন থাকবে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন আয়োজনের পাশাপাশি আগামী ২ অক্টোবর নড়াইল জেলায় জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের আয়োজনে নৌকা-বাইচ অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশের বৈচিত্র্যময় পর্যটন আকর্ষণসমূহকে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে তুলে ধরার প্রয়াসে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশের সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের পাশাপাশি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া গেলেই আলোর মুখ দেখবে উক্ত খাতটি। একইসঙ্গে বিশ্ব দরবারে দেশের পর্যটন শিল্পকে কার্যকর-ভাবে তুলে ধরায় সক্ষম হবে।