মন্ত্রীসভা সম্প্রসারণেও নারী বিহীন তালেবান সরকার!
এ যেন এক হীরক রাজার দেশ! নিজেদের ইচ্ছা খুশিমতো এই গঠনতন্ত্রকে সাজিয়ে নিচ্ছে তারা। এমন কোন দেশ কি আছে যেখানে নারী বিহীন মন্ত্রী সভা আছে? সাময়িকভাবে এমনটা খুঁজে পাওয়া খুবই কষ্টকর ছিল তবে এমন একটি রাজ্যের জন্ম নিতে চলেছে। আফগানিস্তানে তালেবান সরকার গঠন হওয়ার পর থেকে দফায় দফায় তাদের গঠনতন্ত্রের মাত্রা প্রকাশ করছে। তবে এখানে নারী-মুখ দেখা যেন অমাবস্যায় চাঁদ দেখার সমতুল্য।
অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রীসভা সম্প্রসারণ করেছে তালেবান। মঙ্গলবার নতুন করে আরও কয়েকজন মন্ত্রী নিয়োগ দেয়ার পাশাপাশি নিয়োগ দেয়া হয়েছে উপ-মন্ত্রীদের। এর আগে ৩৩ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রীসভা ঘোষণা করেছিল তালেবান। তবে গতবারের মত এবারও মন্ত্রীসভায় কোনো নারী জায়গা পাননি।
গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে তালেবান। তারা গুটি কয়েক দেশের সমর্থন পেলেও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বৃহৎ পরিসরে সমর্থন এখনও পায়নি তারা। বিশ্বনেতারা বলছেন, তালেবানের কাজ দেখে তবেই তাদের স্বীকৃতি দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে। কিন্তু তালেবান এখন পর্যন্ত যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়নি। নারীদের ব্যাপারে নেয়া তালেবানের বিভিন্ন উদ্যোগের ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে আন্তর্জাতিক আঙিনায়।
মন্ত্রীসভা সম্প্রসারণের ব্যাপারে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে ডিফেন্ড করেছেন তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ। তিনি বলেছেন, ‘মন্ত্রীসভায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাগরিকদের জায়গা দেয়া হয়েছে। নারীদেরও পরে মন্ত্রীসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।’
নতুন করে যাদের মন্ত্রীসভায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে পানশির এবং বাঘলান প্রদেশের বাসিন্দাও রয়েছেন। পানশির হচ্ছে ন্যাশনাল রেসিস্ট্যান্স ফ্রন্টের ঘাঁটি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তালেবানের কাছে এটি নিশ্চিত হতে চায় যে, যখন তারা নতুন সংবিধান তৈরি করবে এবং নতুন নির্বাচন আইন করবে সেখানে নারী এবং সংখ্যালঘুদের অধিকারের স্বীকৃতি দেয়া হবে। যদিও বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।
তালেবান সরকার দেশকে শাসন করতে তাদের বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে চলেছে। তবে নারী শব্দটি চলে আসলে তাদের ভ্রু কুচকে যাচ্ছে। বিষয়টিকে কোনদিক থেকেই স্বাভাবিকভাবে নিতে নারাজ তিনি। দেশটির পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও আন্তর্জাতিক মহল এমন নেতৃত্ব নিয়ে সন্দিহান।