‘তুমি মেয়ে, বাড়িতে ফিরে যাও’
আফগানিস্তানের একজন নারী সাংবাদিক শবনম দওরান। প্রতিদিনের মতোই সাংবাদিকতার কাজ শুরু করা উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি রওনা হন অফিসে। সময়মত পৌঁছেও যান। কিন্তু সেদিনের সকালটা অন্য দিনের থেকে অনেক আলাদা। আশেপাশের পরিবেশের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অফিসে ঢুকে কাজ করতে গেলে তাকে বাধা দেয়া হয়। পরিচয়পত্র দেখালো শবনম যে, সে এখানেই কাজ করে। কিন্তু তারপরও তাকে কাজে যোগ দিতে দেয়া হলোনা।
তিনি খেয়াল করলেন যে তার পুরুষ সহকর্মীদের ঠিকই অফিসে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু তাকে দেয়া হচ্ছেনা। তাকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে তাকে আর এখানে কাজ করতে হবে না। এর কারণ জানতে চাইলে জবাবে তাকে বলা হলো, ‘তুমি মেয়ে। যাও নিজের বাড়িতে ফিরে যাও এবার।’ হ্যাঁ, কেবল নারী হওয়ার কারণেই কাজ থেকে বিতাড়িত করা হয় শবনমকে।
এই হলো আফগানিস্তানের বর্তমান নারীদের অবস্থা। শবনম দওরান আরটিএ পশতু নামের একটি সরকারি আফগান সংবাদমাধ্যমে কাজ করতেন। কিন্তু আফগানিস্তান তালেবানের দখলে যাবার পরদিন সকালে অফিসে গিয়েই তাঁকে শুনতে হয়েছিল আর অফিসে আসতে হবে না। কর্মজীবনে এখানেই সমাপ্তি ঘটে তার।
শবনম জানিয়েছেন, ‘আমি জানতে চেয়েছিলাম কেন আমি আর কাজ করতে পারব না? আমাকে বলা হয়েছিল আইন বদলে গিয়েছে। আর আরটিএ–তে মেয়েদের কোনও জায়গা হবে না।’ তিনি আরো জানিয়েছেন, ই মুহূর্তে আফগানিস্তানে থাকাই কঠিন হয়ে পড়ছে। কারও থেকে সমর্থন পেলে আমি দেশ ছাড়তে রাজি।’
আফগানিস্তান দখলের পর তালেবানরা জানিয়েছিল, নারীদের শিক্ষা ও কাজের অধিকার থাকবে ইসলামি শরিয়াহ আইন অনুসারে। অথচ সত্যিটা যে একদমই তা নয়, তা টের পেয়েছেন সাংবাদিক শবনম দওরান ও তার মতো নারীরা। আদলে তালেবানরা আগের মতোই আছে।
এ অবস্থায় আফগানিস্তানে নারী নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা গড়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক মহলে।