হিজাব পরতে পারবে উজবেকিস্তানের শিক্ষার্থীরা
মধ্য এশিয়ার একটি স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র হল উজবেকিস্তান। দেশটির প্রধান ধর্ম ইসলাম। জেনে অবাক হবেন যে, মুসলিম দেশ হয়েও এখানে শিক্ষার্থীদের হিজাব পরায় ছিল কঠোর নিষেধাজ্ঞা। এর মূল কারণ হল দেশটির সরকারের কঠোর নীতি।
উজবেকিস্তানের কর্তৃত্ববাদী সরকার কার্যত কঠোর অসাম্প্রদায়িক নীতি মেনে চলে। উজবেকিস্তান আগে রাশিয়ার শাসনাধীন ছিল। বৃহৎ সোভিয়েত ইউনিয়নের ১৫ রাষ্ট্রের একটি হল এই উজবেকিস্তান। ১৯৯০ সাল থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন শুরু হলে, ১৯৯১ সালে উজবেকিস্তান স্বাধীন হয়ে যায়। সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতার তিন দশকে দেশটির ধর্মনিরপেক্ষ সরকার ক্ষমতায় থেকে মুসলিমদের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। আর কেন্দ্রীয় সরকারের অসাম্প্রদায়িক নীতির কারণে এই কঠোরতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে উজবেকিস্তানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট শাভকত মিরজিয়োইয়েভ ক্ষমতায় আসার পর ২০১৬ সালের পর থেকে কিছু কিছু নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি হিজাবের ওপর কঠোরতা উঠিয়ে নেয় মির্জিওয়েভ সরকার। তাতে স্বীকৃত ধর্মীয় ব্যক্তি ছাড়া অন্যদের প্রকাশ্যে ধর্মীয় পোশাক পরার নিষেধাজ্ঞাকে বাতিল করা হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়সহ সরকারি অফিসগুলো পোশাক বিধি অনুসারে নিজেদের একটি ইউনিফর্ম তৈরি করে। নারীদের পোশাকে শিক্ষা বিভাগ নিজেদের অবস্থান শিথিল করে। বহু সংখ্যক অভিভাবকের আবেদনের প্রেক্ষিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মেয়ে শিক্ষার্থীদেরকে সাদা অথবা হালকা রংয়ের হিজাব বা মাথার টুপি পরার বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছে সরকার। শিক্ষার্থীদের ধর্ম নিরপেক্ষ শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্য এই সিদ্ধান্ত প্রয়োজন ছিল।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলিম শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে হিজাব পরার বিষয়ে অনুমতি দেওয়া হলেও মুসলিম শিক্ষার্থীরা সেটি ব্যবহার করে তাদের থুতনি ঢাকতে পারবেন না।
আগে স্কুলের নির্দেশনা ক্রমে শিক্ষার্থীদের ধর্মনিরপেক্ষ ও ইউরোপীয় পোশাক পরতে হতো। ফলে মেয়ে শিক্ষার্থীদের মাথার স্কার্ফ ছাড়াই হাঁটু পর্যন্ত দৈর্ঘ্যের স্কার্ট পরতে হতো। আর হিজাবও ছিল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে এখন থেকে মুসলিম মেয়েরা স্বেচ্ছানুযায়ী পোশাক পরতে পারবে।