অধিকার আদায়ে বিক্ষোভে কাবুলের নারীরা
শত বছর আগে নারীর অধিকার সংগ্রাম আদায়ের যে ইতিহাস শুরু হয়েছিল, তার সুফল এখনও সর্বস্তরের নারীরা ভোগ করতে পারছে না। তাই নারীর অধিকার আদায়ের সংগ্রাম আজও শেষ হয়নি। ইতিহাস বারবার প্রমাণ করেছে, যে নারী লাজুক মুখে সংসার ও সম্পর্ক জোড়া লাগিয়ে দিতে পারে, সেই নারী নিজ অধিকার আদায়ে ও আপনজনের কল্যাণে পথেও নামতে পারে। এই ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি করলো আফগানিস্তানের কাবুলি নারীরা।
আমরা সবাই আফগানিস্তানের অবস্থার সাথে অবগত। গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখলের মাধ্যমে পুরো আফগানিস্তান চলে আসে তালিবানদের নিয়ন্ত্রণে। এরপর থেকেই দেশের নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে। আফগান নারীদের অধিকার নিশ্চিত নিয়েও সংশয় প্রকাশ করতে থাকে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা। কারণ তালেবানরা কট্টর ইসলাম শরীয়ত মেনে চলায় নারীদের কঠোর পর্দার মধ্যে থাকা অনিবার্য করে তোলে তালেবানরা। কেবল পর্দাই নয়, নারীদের প্রায় সকল অধিকার খর্ব করা হয়। ইতিহাস তো তাই বলে।
এর আগে যখন আফগানিস্তান তালবানের অধীনে ছিল তখন নারীদের অবস্থা ছিল শোচনীয়। তালেবানরা নারীর জন্য ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে দিয়েছিল। সেই সময় নারীদের বোরকা পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। ১০ বছর ও তার বেশি বয়সী মেয়েদের স্কুলে যাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছিল তারা।
এরমধ্যেই তালেবানরা কাবুল দখলের পর তালেবানের পক্ষ থেকে নারীদের ঘরে থাকতে বলা হয়। এর পক্ষে যুক্তি হিসেবে তারা বলেছিল, নবীন তালেবান সদস্যদের এখনো নারীদের সঙ্গে আচরণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। তাই নিজেদের নিরাপত্তার জন্যই নারীদের ঘরে থাকা ভালো। তাই বর্তমান পরিস্থিতি কোনদিকে যাবে তা এখনো বলা যাচ্ছেনা। বর্তমান সরকার নারীদের জন্য ইতিবাচক হবে নাকি নেতিবাচক তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। তাই সম্প্রতি আফগানিস্তানে নতুন সরকার গঠন করার ঘোষণা দেয়া হলে কাবুলের নারীরা নিজ অধিকার আদায়ে বিক্ষোভে নেমে পড়েন।
নতুন সরকারে ও রাজনীতিতে নারীদের অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন দেশের সুশীল সমাজকর্মী নারীরা ও সাধারণ নারীরা। নারীদের শিক্ষাসহ নানা অর্জন রক্ষার জন্য তালেবানের প্রতি দাবি জানিয়েছেন তারা। কাবুলে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের বাইরে নারীরা বিক্ষোভ করেছেন। এসব দাবিতে কাবুলে একটি সমাবেশও করেছেন তারা। এখন সমগ্র বিশ্বের আশা যেন আফগান নারীদের অধিকার যেন কেবল নারী হওয়ার জন্য খর্ব করা না হয়।