Skip to content

৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | সোমবার | ২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্লাস্টিক থেকে পেট্রোল-গ্যাস!

পুরো বিশ্ব নির্ভর করছে তেলের উপরে। একসময় এই খনিজ তেল ফুরিয়ে গেলে অচল হয়ে পরবে সারাবিশ্ব। তবে এই খনিজ সম্পদ চিরকাল পৃথিবীবাসীকে সাহায্য করবে কিনা সন্দেহ। ভবিষ্যতে এর বিকল্প শক্তি কল্পনা করা ব্যতীত মানবজাতির কোন উপায় নেই। তাই এই খাতে প্লাস্টিক কে ব্যবহার করে জ্বালানী তৈরির চেষ্টা।

 

একদিকে যেমন পণ্যের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সারা দুনিয়া জুড়ে চলছে হাহাকার, তেমনি অন্যদিকে প্লাস্টিক পরিবেশের পক্ষে প্রায় ক্যান্সারের মতই। দুটোই বর্তমানে ভীষণ বড় সমস্যা মানুষের কাছে। যা নিয়ে দিন রাত গবেষণা করে চলেছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। এমনকি ইতিমধ্যে আবিষ্কৃত হয়েছে এমন ফাঙ্গাসও যা নষ্ট করবে প্লাস্টিক। কিন্তু এবার এমন এক সমাধান নিয়ে এলেন এক বাঙালি বিজ্ঞানী, যাতে সাপও মরবে অথচ লাঠিও ভাঙবে না। অর্থাৎ প্লাস্টিক দূরীকরণও হবে অথচ পেট্রোলেরও দাম বাড়বে না।

 

তেল সংকট দূর করার জন্য দুর্দান্ত আবিষ্কার করলেন বাঙালি বিজ্ঞানী ড. পুণ্যব্রত চক্রবর্তী। শান্তিনিকেতনের এই বিজ্ঞানী গবেষণা চালিয়ে আসছেন গত ১২ বছর ধরে। অবশেষে এমন এক মেশিন বানাতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। যার দ্বারা প্লাস্টিক রূপান্তরিত হবে পোট্রলে এবং তা থেকে রূপান্তরিত হবে গ্যাস। এই বছরের জুন মাসে তার এই গবেষণাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে ভারত সরকারের ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি বিভাগের তরফ থেকে।

 

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই রসায়নবিদ্যা বিভাগ থেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পরবর্তীতে পিএইচডি করেন পুণ্যব্রত। একদিন হঠাৎ তার মনে হয়, প্লাস্টিক পরিবেশের পক্ষে ক্যান্সার, অথচ এই প্লাস্টিক তৈরি হয় পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থ পলিমার দিয়ে। নিজে নাইজেরিয়াতে কাজ করেছিলেন পেট্রোলিয়াম বিশেষজ্ঞ হিসেবে, তাই তার মনে হয় এমন কোন মেশিন কি বানানো সম্ভব নয়, যা দিয়ে প্লাস্টিককে পুনরায় পেট্রোলে পরিণত করা যায়। সেই থেকে শুরু গবেষণা, এবং অবশেষে এসেছে সাফল্য।

বিজ্ঞানী বলেন, “কর্মসূত্রে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় প্লাস্টিক দেখে মাথায় আসে পেট্রল উৎপাদনের কথা । তারপরেই শুরু করি গবেষণা । এই পদ্ধতিতে পেট্রল ও গ্যাস উৎপাদনে কোনও রকম পরিবেশ দূষণ হয় না । অথচ দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়া যায় । সহজ পদ্ধতিতে এই উৎপাদন করার জন্য ভারত সরকার আমাকে স্বীকৃতি দিয়েছে ।”

 

ডক্টর পুণ্যব্রত চক্রবর্তীর বক্তব্য, তার তৈরি পেট্রোল পুরোপুরি পরিশোধিত নয়, তাই এই পেট্রোল দিয়ে কম শক্তির ইঞ্জিন আরামসে চালানো যেতে পারে। কিন্তু যদি এই পেট্রোল রিফাইন করা সম্ভব হয়, তাহলে আগামী দিনে এ দিয়ে মোটর গাড়িও চালানো সম্ভব। তিনি নিজে এই পেট্রোল এবং গ্যাস ঘরের যাবতীয় কাজে ব্যবহার করেন। 

জ্বালানীর পরিবর্তে ইলেক্ট্রেসিটিকে ব্যবহার করছে বহিঃবিশ্বের অনেক রাষ্ট্র। সকলেই অদূর ভবিষ্যতে জ্বালানীর সংকটের কথা মাথায় রেখে পাশাপাশি সমাধান খুঁজে নিচ্ছে। তারই এক অভিনব আবিষ্কার এই তেল।

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ