পেঁপের যত গুনাগুণ
পেঁপে একটি সুস্বাদু ফল এবং স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। পুষ্টিগুণ বিবেচনায় অন্যান্য ফলের চেয়ে পেঁপে এগিয়ে রয়েছে। পেঁপের আরেক নাম পাওয়ার ফ্রুট কারণ, অনেক রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা রয়েছে। সহজলভ্য এবং কম দামে পাওয়া যায় বলে, পেঁপের জনপ্রিয়তাও অগণিত। এ ফলটি কাঁচা ও পাকা দুই ভাবেই খাওয়া যায়। কাঁচা পেঁপে সালাদে ও রান্নায় এবং পাকা পেঁপে ফল হিসেবে খাওয়া যায়। পেঁপের পেপেইন নামক উপাদানটি আমিষ জাতীয় খাবারকে দ্রুত হজম করতে এবং পরিপাক তন্ত্রকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: পেঁপেতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি ও ই। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। এতে উপস্থিত ভিটামিন সি ত্বক, চুল ও মাড়ির জন্য খুবই উপকারী। এছাড়া পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকায় চোখের জন্য তা উপকারী।
ওজন কমায়: প্রাকৃতিকভাবে অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে পেঁপে। পেঁপেতে ক্যালোরির পরিমাণ খুব কম থাকে এবং উপকারী ফাইবার বা আঁশ বেশি থাকে বলে, যারা ওজন সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা নিয়মিত পেঁপে খেতে পারেন।
হজমশক্তি বাড়ায়: পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে এনজাইম থাকে। যা খাবার হজমে সহায়তা করে। এছাড়া প্রচুর পানি ও দ্রবণীয় ফাইবার আছে। হজম সমস্যার সমাধানে নিয়মিত পাকা বা কাঁচা পেঁপে খেতে পারেন। এক্ষেত্রে পেঁপে খুব কার্যকারী।
কোলেস্টেরল কমায়: পেঁপেতে কোনো কোলেস্টেরল নেই। পেঁপেতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। যা ধমনীতে কোলেস্টেরল জমতে বাঁধা প্রদান করে। অন্যান্য কোলেস্টেরল যুক্ত খাবারের বদলে পেঁপে খান। তাহলে আপনার কোলেস্টেরলের পরিমাণ থাকবে নিয়ন্ত্রণে।
ত্বকের জন্য উপকারী: ত্বকের জন্য পেঁপে অনেক উপকারী। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে, একজিমা রোধে এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে পেঁপে খুবই উপকারী।
ভিটামিন বি এর অভাব পূরণ: পেঁপেতে আছে ভিটামিন বি-১, ভিটামিন বি-৬, এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ফলিক এসিড নামের উপকারী ভিটামিন। তাই ভিটামিন বি এর অভাব পূরণ করার জন্য নিয়মিত পেঁপে খাওয়া উচিত।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ক্যারোটিনের উৎস: পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিটা ক্যারোটিন, ফ্লেভানয়েড, লুটেইন, ক্রিপ্টোক্সান্থিন আছে। যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। ক্যারোটিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফুসফুস ও ক্যান্সারের ঝুঁকির হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধ: চিনির পরিমাণ কম থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পেঁপে একটি আর্দশ ফল। যাদের ডায়াবেটিস নেই তাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পেঁপে রাখা উচিত। পেঁপে ডায়াবেটিস হওয়া প্রতিরোধ করে। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাঁরা পাকা পেঁপের বদলে কাঁচা পেঁপে খান। কারণ পাকা পেঁপে খেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে।
হাড় মজবুত করে: পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং কপার রয়েছে। যা নিয়মিত খেলে শরীরে ক্যালসিয়াম তৈরি হয় এবং হাড় মজবুত করে। তাছাড়া আর্থারাইটিস, অস্টিও আর্থারাইটিস দূর করতে সাহায্য করে পেঁপে।
ক্যান্সার প্রতিরোধক: ক্যান্সার নিরাময়ে পেঁপে বেশ ভূমিকা রাখে, পেঁপেতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্ল্যাভোনোক্সিড। যা দেহে ক্যান্সারের কোষ তৈরিতে বাঁধা দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁপের বিটা ক্যারোটিন উপাদান কোলন ক্যান্সার, প্রোসটেট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
উচ্চ রক্তচাপ কমায়: পেঁপে আমাদের দেহের সঠিক রক্ত সরবরাহে কাজ করে। আমাদের দেহে জমে থাকা সোডিয়াম দূর করতে সহায়তা করে। যা হৃদপিণ্ডের রোগের জন্য দায়ী। উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিয়মিত কাঁচা বা পাঁকা পেঁপে খেতে পারেন।
তাছাড়া শ্বাসকষ্ট সমস্যার সমাধানে পেঁপের ভূমিকা অনেক। নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার ফলে শ্বাসকষ্ট সমস্যা কমে যায়। দাঁতের যন্ত্রণার অব্যর্থ ওষুধ হল পেঁপে। কৃমি রোধেও পেঁপে খুব কার্যকারী।