Skip to content

লকডাউনে কেমন আছেন বিউটি পার্লারের কর্মীরা?

লকডাউনে কেমন আছেন বিউটি পার্লারের কর্মীরা?

এই লকডাউনের চক্করে জীবন যেমন ঝুঁকিতে পড়েছে, তেমনি পড়েছে জীবিকাও। জীবিকার যাতাকলে মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্তদের আর্থিক টানাপোড়েনই বেশি ঝুঁকিতে পড়েছে। আর এই কাতারের প্রথম সারির দিকেই আছে পার্লার কর্মীরা। যারা নিজের জীবিকার টানে সাজিয়ে তোলে অন্যদের। 

 

লকডাউন প্রায় সব কর্মক্ষেত্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পার্লারগুলোও বন্ধ হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে এমন পরিস্থিতি চলায় অনেক পার্লার কর্মী খুঁজে নিয়েছে অন্য কর্মসংস্থান। অনেকেই অনলাইন ব্যবসা নির্ভর হয়ে উঠেছেন। 

 

কিন্তু যারা পার্লারের কর্ণধার তারা কিভাবে সামলে নিচ্ছেন? একটা পার্লারকে সাজিয়ে গড়িয়ে নেওয়া চারটে খানি কথা নয়। সরঞ্জাম থেকে শুরু করে সাজার প্রতিটি মেকআপ সামগ্রী, ঘর সবকিছুই আয়োজনে রাখতে হয়। এসবের জোগাড় দিতে অনেক টাকা মূলধনও খাটাতে হয়। সেখানে করোনায় সেসবই খালি পড়ে আছে। যারা ভাড়া ঘর নিয়ে পার্লার দিতেন তারা সহজেই সে ঘর ছেড়ে দিতে পারছেন না।

 

কারণ ঘর ছেড়ে দেওয়া মানেই যেন পার্লারটি উঠিয়ে নেওয়া। আবার ঘর ধরে রাখা মানেও প্রতি মাসে ঘরের ভাড়া গুনতে হচ্ছে। লকডাউনে পার্লার না চললেও ভাড়া কিন্তু ঠিকই চালাতে হচ্ছে।  সেখানে কোন ঘরের মালিকই তা ছাড় দিতে রাজি নন। এমনটাই বলছিলেন পার্লার কর্মী স্মৃতি আক্তার।  যিনি "স্মৃতি'স মেকওভার সেলুন" নামে  একটি পার্লার দীর্ঘদিন ধরেই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। 

 

কিন্তু করোনার ঝুঁকিতে পড়ে পার্লার বন্ধ হয়ে যায়। অথচ একসময় রমরমা অবস্থা ছিল পার্লারের। প্রতিদিনের কাস্টমার সামলাতে ৪-৫ জন কর্মীর প্রয়োজন হত। সেসময় সকল কর্মীদের বেতনসহ সমস্ত খরচ বহন করেও মাসিক আয় থাকতো ৫০ হাজারেরও উপরে। আর বর্তমানে তা নেমে এসেছে শূন্যের খাতায়। কর্মীরা যে যার মত উপায় বেছে নিয়েছেন। কেউ কেউ অন্য ব্যবসায় যোগ দিয়েছে। যার অধিকাংশই অনলাইন ব্যবসা। আর কেউ হয়তো আর্থিক টানাপড়েনে দিন গুনছেন কবে সব ঠিক হবে। 

লকডাউনের সময় নিজের সঞ্চয় থেকে সব ভরণপোষণ মিটিয়ে আসলেও সেটা প্রায় ফুরিয়ে এসেছে বলেও জানান স্মৃতি। বলেন," সঞ্চয় শেষ হয়ে গেলে কিভাবে কি করবো আসলেই জানিনা। আর এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে শখের পার্লার টিকিয়ে রাখতেও হয়তো পারবো না। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা মনে হলেই চারদিকটা কেমন অন্ধকার লাগে।" 

 

অনেক নারী কর্মী আছেন যারা পার্লারে কাজ করে নিজের পরিবারের দায়িত্ব নেন। যারা হয়তো এখন অন্যকাজও পাচ্ছেন না। এমন সময়ে তারাই বেশি অর্থনৈতিক দুর্ভোগে পড়েছেন৷ কেননা এই কঠিন সময়ে কাজ পরিবারের ভার বহন তো দূর, নিজেই যেন পরিবারের বোঝা হয়ে উঠছেন।  অথচ এরাও নিজেদের একসময় স্বাবলম্বী করতে তুলেছিলেন।  

 

স্মৃতি আক্তার সরকার বা বিভিন্ন নারী অধিকার সম্পর্কিত এনজিও যারা নারীদের অসহায় অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য কাজ করেন তাদের নিকট সাহায্য চেয়ে বলেন, "এইসব মেয়েদের জন্য হলেও সরকার বা বিভিন্ন এনজিও গুলো পাশে এসে দাঁড়ায় তাহলে হয়তো এসময়ের টানাপোড়েন কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পারবে।"