হেডফোন ব্যবহারে শ্রবণেন্দ্রিয়ের হুমকি
জীবনকে আরামদায়ক ও জাঁকজমকপূর্ণ করতে প্রযুক্তির উন্নয়ন ধারার স্রোত যেন বয়েই চলছে প্রতিনিয়ত। বিজ্ঞানের এই আশীর্বাদ কখনো কখনো ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় সচেতনতার ভিত্তিতে।এমনকি অনেক সময় মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে নিয়ে দাড় করায়। তেমনই প্রযুক্তির বেশ জনপ্রিয় আবিষ্কার হেডফোন যার রয়েছে বেশকিছু ক্ষতিকর দিক। ছোট্ট এই ডিভাইসটি ছোট-বড় সবাই ব্যবহার করলেও এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে অনেকেই অজ্ঞাত।তবে আসুন জেনে নেই এর ক্ষতিকর প্রভাব গুলো-
শ্রবণে জটিলতা: হেডফোন বা ইয়ারফোন ব্যবহারের সময় সে অডিও সরাসরি আপনার কানে প্রবেশ করে। ৯০ ডেসিবেল বা তার বেশি মাত্রার শব্দ যদি আপনার কানে গেলে ঘটতে পারে শ্রবণ জটিলতা। এমনকি এজন্য আপনি আপনার শ্রবণ ক্ষমতা হারাতেও পারেন চিরতরে। বিশেষজ্ঞদের মতে ১০০ ডেসিবলের উপরে হেডফোন ব্যাবহার করলে মাত্র ১৫ মিনিটে নষ্ট হতে পারে শ্রবণশক্তি।
শ্রুতিপথে বাতাসের বাধা: আজকাল প্রযুক্তির বাজারে কিছু এয়ারফোনের সাউন্ড কোয়ালিটি ভালো পাওয়া গেলেও তার রয়েছে ব্যাপক স্বাস্থ্যঝুঁকি। এসব এয়ারফোন এয়ারক্যানেল পর্যন্ত প্রবেশ করানো হয়। এতে কানের ভিতর বায়ু প্রবেশে বাধার সৃষ্টি করে। যার ফলে ইনফেকশনের সম্ভাবনা আরো বেশি হয়।
কানে ব্যথা: যারা দিনের বেশিরভাগ সময় হেডফোন ব্যবহার করেন তারা সাধারণত এর সমস্যায় ভুগেন। মাঝে মাঝে কানের ভেতরে ঝিম ধরা আওয়াজ হয়ে থাকে। এটিও কিন্তু কানের মারাত্মক ক্ষতির উপসর্গ।
অসচেতনতায় কানের ইনফেকশন: একটি হেডফোন একজনেরই ব্যবহার করা উচিৎ। কিন্তু আমরা একটি এয়ারফোন একাধিক ব্যক্তি, বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শেয়ার করে থাকি। এতে কানে ইনফেকশনের সম্ভাবনা থাকে। কারণ এয়ারফোনের মাধ্যমে কানের মধ্যে থাকা জীবাণু একজন থেকে অন্যজনে বাহিত হয়। তাই এয়ারফোন কখনোই শেয়ার করা উচিত নয়। করলে অবশ্যই ব্যবহারের পূর্বে জীবাণুনাশক ব্যবহার করে নিবেন।
শ্রবণ শক্তির জড়তা: কিছু সমীক্ষায় জানা যায়, যারা এয়ারফোন ব্যবহার করে উচ্চ শব্দে মিউজিক শোনেন তাদের কানে জড়তা চলে আসে। এই জড়তা স্বাভাবিক হলেও দীর্ঘ সময় উচ্চস্বরে মিউজিক বাজালে শ্রবণশক্তিও হারাতে পারেন।
মস্তিষ্কের উপর বিরুপ প্রভাব: হেডফোনের দ্বারা সৃষ্ট ইলেক্ট্রম্যাগনেটিক তরঙ্গ আপনার মস্তিষ্কের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। আর ব্লুটুথ হেডফোন ব্যবহারে এর ঝুঁকি রয়েছে শীর্ষে। কান সরাসরি মস্তিষ্কের সাথে যুক্ত। তাই হেডফোন সরাসরি আপনার মস্তিষ্কতে আঘাত হানতে পারে।
হেডফোনের ব্যবহার তো একেবারে ছেড়ে দেয়া যাবে না, তাই না? তবে এর সঠিক ব্যবহার সুরক্ষিত রাখবে আপনার কান ও জীবন। যে ব্রান্ডের মোবাইল ব্যবহার করছেন, ঠিক সেই ব্রান্ডের ইয়ারফোনই ব্যবহার করুন। আওয়াজ কমিয়ে ইয়ারফোন ব্যবহার করুন যেন বাইরের আওয়াজ শোনা যায়। হাঁটার সময় বা রাস্তা-লাইন পেরনোর সময় হেডফোন ব্যবহার করবেন না। একটানা আধ ঘণ্টার বেশি ইয়ারফোন ব্যবহার করবেন না। কিছু নিয়মের রাস্তায় চললেই আমরা উপভোগ করতে পারবো প্রযুক্তির উৎকর্ষতা তবে অতিরিক্ত নয় পরিমিত ব্যবহারেই সচেতনতা।