ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্-র মৃত্যুবার্ষিকী আজ
ভারতীয় উপমহাদেশের চিরস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্। যিনি ছিলেন একাধারে শিক্ষাবিদ, দার্শনিক ও বহুভাষাবিদ। আজ এই গুণী মানুষটির ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকী।
তিনি ১৯৬৯ সালের ১৩ জুলাই ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ঢাকা হলের পাশেই এই কিংবদন্তীকে সমাহিত করা হয়। ভাষা ক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদানকে শ্রদ্ধা জানাতে সেই বছরই ঢাকা হলের নাম পরিবর্তন করে শহীদুল্লাহ্ হল রাখা হয়।
ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ ১৮৮৫ সালের ১০ই জুলাই চব্বিশ পরগণা জেলার পেয়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মকালীন নাম ছিল মুহাম্মদ ইব্রাহীম। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ ছিলেন ভাষা আন্দোলনের প্রথম প্রধান উদ্যোক্তা। ভাষা আন্দোলনের সুত্রপাত হয়েছিল তাঁর লেখা ''দ্য ল্যাংগুয়েজ প্রব্লেম অব পাকিস্তান" নামক নিবন্ধের মধ্য দিয়ে।
ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সেরা ভাষাবিদ। তিনি মোট ২৪ টি ভাষার উপর গভীর পান্ডিত্য অর্জন এবং ২৭ টি ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারতেন। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ শুধুমাত্র ভাষাবিজ্ঞানীই নন, তিনি ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের প্রখ্যাত সমাজসেবক এবং বাঙালি জাগরণের প্রবক্তা। এছাড়া পেশাজীবনে তিনি শিক্ষক ও আইনজীবী ছিলেন।
ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ ১৯৬৭ সালে ফ্রান্স সরকার সম্মানজনক "নাইট অব দ্য অর্ডারস অব আর্টস অ্যান্ড লেটার্স" পদক ও ১৯৫৮ সালে পাকিস্তান সরকার তাকে "প্রাইড অব পারফরম্যান্স" পদক প্রদান করেন। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ বাংলা একাডেমি পঞ্জিকার তারিখ বিন্যাস কমিটির সভাপতি ছিলেন এবং তাঁর হাত ধরেই বাংলা পঞ্জিকা একটি আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত রূপ পায়। এছাড়া তিনি সর্বপ্রথম বাংলাভাষার প্রথম নিদর্শন "চর্যাপদ"-এর সম্পাদনা করেন।
ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মরণোত্তর ডি. লিট উপাধি ও মরণোত্তর বাংলাদেশ স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন। বিবিসির জরিপে "সর্বকালের সর্বশেষ্ঠ বাঙালি"-র তালিকায় ১৬ তম স্থানে উঠে আসে তাঁর নাম। আজ ৫২ তম প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হচ্ছে চিরস্মরণীয় এই ব্যক্তিত্বকে।