কারামুক্তির ১৩ দিনের মাথায় প্রাণ গেলো মিনুর

একটি হত্যা মামলায় অন্যের হয়ে তিন বছর কারাভোগ করেছিলেন তিনি। অবশেষে কারাভোগ শেষ হলো। মুক্তিও পেলেন তিনি। কিন্তু হতে হল মৃত্যুর সম্মুখীন। কারাগার থেকে মুক্তির ১৩ দিনের মাথায় নিহত হয়েছেন অন্যের হয়ে শাস্তি গ্রহণকারী চট্টগ্রামের মিনু।
গত ২৮ জুন দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী ফৌজদার হাট সংযোগ সড়কের আরেফিন নগর এলাকায় দ্রুতগতির একটি ট্রাক মিনুকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। ট্রাকচাপায় গুরুতর আহত হন তিনি। খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। সেখানে ২৯ জুন ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। কোন পরিচয় না পাওয়ায় এক দিন পরে অজ্ঞাত হিসেবে তার লাশ দাফন করে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম। গতকাল শনিবার রাতে পুলিশ ও পরিবার নিশ্চিত হয় যে অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা লাশটি মিনুর।
তদন্ত শেষে জানা যায়, দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তি আলোচিত সেই মিনু আক্তার। রোববার (৪ জুলাই) বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন বিষয়টি।
২০০৬ সালে চট্টগ্রাম নগরের রহমতগঞ্জ এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় পোশাককর্মী কোহিনুর বেগমকে হত্যা করা হয়। ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর এই মামলার রায়ে কুলসুমাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। কিন্তু আসামি কুলসুম আক্তার কুলসুমার বদলি হয়ে তিন বছরেরও অধিক সময় কারাভোগ করেন।
পরবর্তীতে প্রকৃত আসামি কুলসুমা আক্তারের কারা রেজিস্ট্রারে থাকা ছবি এসময় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মো. শফিকুল ইসলাম খান আদালতে উপস্থাপন করা হয়। দুজনের ছবির মধ্যে পার্থক্য পাওয়া যায়। চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ নিরপরাধ মিনুকে সকল আইনি সহায়তা প্রদান করেন। শেষে মিনু চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্ত হন।
মুক্তির পর মিনু বলেছিলেন, মর্জিনা আক্তার নামের পূর্বপরিচিত এক নারী তাকে টাকা দেওয়ার কথা বলে কারাগারে যেতে বলেন। তিনি কুলসুমাকে চিনতেন না। কিন্তু ভয়ে কাউকে কিছু বলেননি। গত ১৬ জুন চতুর্থ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঞা মিনুকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন।