Skip to content

৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শনিবার | ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস আজ

আজ ৩১ মে, বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। প্রতি বছর এই দিনে বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালন করা হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘কমিট টু কুইট’। আর এবছর বাংলাদেশে দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে, 'আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি, জীবন বাঁচাতে তামাক ছাড়ি।' 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সদস্য রাষ্ট্রসমূহ ১৯৮৭ সাল থেকে প্রতি বছর 'বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস' চালু করে। স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়িয়ে- স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করার জন্য এ দিবসটি তে নানা ধরনের আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। দিবসটি সরকার, জনস্বাস্থ্য সংগঠন, ধূমপায়ী, উৎপাদনকারী, এবং তামাক শিল্পের কাছ থেকে উদ্যম এবং প্রতিরোধের লক্ষ্যে উভয়ের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে পালিত হয়ে আসছে। 

তামাকবিরোধী প্রচারাভিযানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস জানিয়েছেন, দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি ধূমপায়ীদের করোনায় মৃত্যুর ৫০ শতাংশ ঝুঁকি বেড়ে যায়। শুধু কোভিড থেকে সুরক্ষা নয়; ধূমপান ছাড়লে ক্যান্সার, হৃদরোগ ও ফুসফুস আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে যাবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, তামাক ব্যবহারে মুখ গহ্বর, ফুসফুস, খাদ্যনালীসহ প্রায় ২০ ধরনের ক্যানসার হয়।  অধূমপায়ীদের তুলনায় ধূমপায়ীদের ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে ২৫ গুণ। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদি ফুসফুস সংক্রমণে (সিওপিডি) ধূমপায়ীদের মৃত্যু ঝুঁকি অধূমপায়ীদের তুলনায় ১৩ গুণ পর্যন্ত বেশি।

দিবসটি উপলক্ষে আজ বাংলাদেশেও তামাক বিরোধী বিভিন্ন সংগঠন আজ কর্মসূচি পালন করছে। বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে এক প্রতিক্রিয়ায় তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা’র (প্রগতির জন্য জ্ঞান) নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, দরিদ্র জনগোষ্ঠী পণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতি অধিক সংবেদনশীল। তামাক পণ্যের দাম বাড়লে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে তামাকের ব্যবহার, তামাকজনিত মৃত্যু ও অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতি অধিকহারে হ্রাস পায়। তাই তামাকে বর্ধিত করারোপ একটি দরিদ্র-বান্ধব পদক্ষেপ।

সাম্প্রতিক গবেষণায় রাজধানী ঢাকার প্রাথমিক স্কুলে পড়া ৯৫ শতাংশ শিশুর শরীরে উচ্চমাত্রার নিকোটিন পাওয়া গেছে, যার মূল কারণ পরোক্ষ ধূমপান। গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস) এ ২০১৭ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী, কর্মক্ষেত্রসহ পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে ৩ কোটি ৮৪ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন। বাড়িতে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন ৪ কোটি ৮ লক্ষ মানুষ এবং এক্ষেত্রে নারীরা ও শিশুরা অনেক বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। 

তামাক মুক্ত দিবসে সারা বিশ্বে সেমিনার, সম্মেলন এবং অন্যান্য প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয় যেন বক্তারা এবং আমন্ত্রিত ব্যক্তিরা ধূমপান সম্পর্কে সমস্ত ব্যাখ্যা করে এবং বর্ণনা করে যে কীভাবে ধূমপান ত্যাগ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা যায়, চিকিৎসা নেওয়া যায়। এসব অনুষ্ঠান সংবাদমাধ্যম দ্বারা সম্প্রচার করা হয় যেন সারা পৃথিবীতে সচেতনতা ও জ্ঞান ছড়িয়ে পড়ে। 

আমাদের সকলের এই সত্যটি বুঝতে হবে যে- "ধূমপান অবশ্যই খারাপ তবে ধূমপায়ী খারাপ নয়।" সুতরাং ধূমপায়ীদের ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখা উচিত নয়। বরং তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে ধূমপান ছাড়তে উৎসাহিত করা উচিত। যদি সমাজের সকলে মিলে ধূমপান হ্রাসে নিজেদের ভূমিকা পালন করি, তবে এটি অনেকাংশে হ্রাস করা যেতে পারে।

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ