গণপরিবহনে গনধর্ষণ, আর কত?
সমাজে প্রতিনিয়ত ঘটমান সকল অপরাধের মধ্যে নিঃসন্দেহে ধর্ষণ অন্যতম নিন্দনীয় এক অপরাধ। প্রায় প্রত্যেকটি দিনই খবরের কাগজের কোন এক অংশে উঠে আসে ধর্ষণের কোন না কোন লোমহর্ষক ঘটনা। আর প্রায়শই সবথেকে বেশি নজর কাড়ে গণপরিবহনে গনধর্ষণের ব্যাপারগুলো। সম্প্রতি আবারও খবরের প্রধান শিরোনাম চলন্ত বাসে তরুণীকে গনধর্ষণ।
আশুলিয়া সিএন্ডবি বাইপাস সড়কে শুক্রবার রাত সাড়ে দশটার দিকে এ গনধর্ষণের ঘটনা ঘটে। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে এক তরুণী মানিকগঞ্জ তার বোনের বাড়ি থেকে নারায়ণগঞ্জের বাসে উঠেছিলেন কিন্তু রাত আটটার দিকে নবীনগর বাস স্ট্যান্ডে তাকে বাস থেকে নামিয়ে দেয়া হয়।
এরপর তিনি 'নিউ গ্রাম বাংলা পরিবহন' নামে একটি বাসে উঠেন টঙ্গী যাওয়ার উদ্দেশ্যে। পথে আশুলিয়া গরুর হাট এলাকার আগেই ওই বাসের অন্য যাত্রীদের নামিয়ে বাস আবার নবীনগরের দিকে নিয়ে যায় চালক। এরপর বাস চলন্ত অবস্থায় বাসের দরজা জানালা বন্ধ করে তাকে ধর্ষণ করে চালক ও হেলপারসহ অন্যান্যরা।
এরপর রাত এগারোটার দিকে আশুলিয়া ব্রিজ এলাকায় বাইপাস সড়কে বাসটিকে সন্দেহ হলে টহলরত পুলিশ বাসটিকে ধাওয়া করে। এবং একপর্যায়ে তারা বাসটিকে আটক করতে সক্ষম হয়। এরপর সেখান থেকে সেই তরুণীকে উদ্ধার করে এবং তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত ছয়জনকে বাসসহ আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। আর পরের দিন সকালে ওই তরুণীকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
তবে বাংলাদেশে এমন ঘটনা একদমই নতুন কিছু নয়। এর আগেও চলন্ত বাসে তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বহুবার। এর আগে ২০১৭ সালেও এক তরুণীকে গনধর্ষণের ঘটনায় পুরো দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সেবার একটি চলন্ত বাসে একজন তরুণীকে গণধর্ষণের পর তাকে ঘাড় মটকে হত্যা করে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়া হয়।
২০২০ গাজীপুরে তাকওয়া পরিবহনের চলন্ত বাসে ১৬ বছরের এক কিশোরীকে মুখ বেঁধে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। একই বছরে গাজীপুরে চলন্ত বাসে এক নারীকে (৩৫) গণধর্ষণের অভিযোগে চালকসহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছিলো পুলিশ। পরিসংখ্যান দেখতে গেলে এমন বহু ঘটনা নিমিষেই চোখের সামনে চলে আসবে। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, দিনের পর দিন এ সংখ্যা শুধু বৃদ্ধিই পাচ্ছে। কিন্তু এ দায় কার? হাজার বার প্রশ্ন করেও মেলেনি এর উত্তর। তাই এখন সময়ের প্রশ্ন, গণপরিবহনে গনধর্ষণ আর কত?