সীতার ‘অক্সিজেন অটো’ বাঁচিয়েছে ৩০০ প্রাণ
করোনা ভাইরাস বর্তমানে অত্যন্ত বিপদজনক হয়ে উঠেছে ভারতে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে দেশটি। পুরোপুরি ভেঙে পরেছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। হাসপাতালে নেই সিট, নেই পর্যাপ্ত অক্সিজেন। এমনকি রোগীর সংখ্যা এতোই বেশি চিকিৎসকরাও পরে গেছেন মহাসংকটে।
এমনই সংকটে পরে প্রতিদিন মারা যাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। তার মধ্যে একজন বিজয়া দেবী। অক্সিজেনের অভাবে গত পহেলা মে চেন্নাইয়ের রাজিব গান্ধী সরকারি হাসপাতালের বাইরে প্রাণ হারান তিনি। অক্সিজেনের অভাবে চোখের সামনে শ্বাসকষ্টে ছটফট করতে করতে মায়ের মৃত্যু দেখে বিজয়া দেবীর মেয়ে সীতা দেবী। এরপরই তিনি সিদ্ধান্ত নেন আর এমন দৃশ্য যাতে আর কাউকে দেখতে না হয় সে উদ্দেশ্যেই কাজ করবেন তিনি।
এরপর শুরু হয় তার অক্সিজেন অটোর যাত্রা। চেন্নাইয়ের রাস্তায় দিনভর ছুটে বেড়ান অটোতে অক্সিজেন নিয়ে। দীর্ঘ সময় হাসপাতালের বাইরেও সেই অটো নিয়ে অপেক্ষা করেন ৩৬ বছর বয়সী সীতা। উদ্দেশ্য কোন রোগীর প্রয়োজন পরলে তাকে যতদ্রুত সম্ভব অক্সিজেন সরবরাহ করার ব্যবস্থা করা।
সীতার এই কাজে তাকে সাহায্য করেছে স্ট্রিট ভিশন চ্যারিটেবল ট্রাস্ট নামক একটি এনজিও। ৬ মে থেকে এই কাজটি করে আসছেন তিনি। আর শুরু থেকেই সীতার পাশে থেকে সাহায্য করে যাচ্ছেন এই ট্রাস্টটি। তাদের সাহায্যে সামান্য একটি অটোকে হাতিয়ার করে মানুষের প্রাণ বাঁচানোর মতো মহৎ কাজ করে যাচ্ছেন সীতা। ইতিমধ্যেই ৩০০ রোগীর প্রাণ বাঁচিয়েছেন তিনি। এবং এ থেকে আশার সঞ্চার করে ভবিষ্যতে অটোর সংখ্যা বাড়িয়ে আরো অনেক মানুষের পাশে দাঁড়াতে চান সীতা।
করোনার এই ভয়ংকর সময়ে হাসপাতালের বাইরে নিজেদের কাছের মানুষদের হারিয়ে যখন সকলে স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে দোষারোপ করতে ব্যস্ত, ঠিক তখনই মাতৃমৃত্যুর শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করেছেন সীতা দেবী। একজন মেয়ে হয়েও সমাজের বিভিন্ন বাঁধা নিষেধ ভেঙে এগিয়েছেন নতুন উদ্যোমে। বাঁচিয়েছেন কয়েকশো মানুষের প্রাণ।