প্রিন্সেস ডায়ানার সাক্ষাৎকার নিতে প্রতারণা করেছিলো বিবিসি!
১৯৯৫ সালে বিবিসি প্রকাশ করে প্রিন্সেস ডায়ানার একটি সাক্ষাৎকার। যা তখন বহুল আলোচিত একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। দীর্ঘদিন পর প্রশ্ন উঠেছে সেই সাক্ষাৎকার নিয়ে। এক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে বিবিসির সাংবাদিক সেই বিখ্যাত সাক্ষাৎকার এর জন্য প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং তা ধামাচাপা দিয়েছিলো খোদ বিবিসি।
ঐ সাক্ষাৎকার নেয়ার ২৬ বছর পার হয়ে যাওয়ার পর প্রতারণার বিষয়ে মিলেছে সত্যতা। তদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে সাংবাদিক বশির ডায়ানার ভাই আর্ল স্পেনসারের সাথে প্রতারণা করেছিলেন। তিনি স্পেনসারের আস্থা অর্জনের জন্য তাকে জাল নথিপত্র দেখান, যাতে তিনি প্রিন্সেস ডায়ানার কাছে সহজে পৌঁছতে পারেন।
এই তদন্তে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারপতি লর্ড ডাইসন। এই প্রতারণার বিষয়ে তিনি বলেন, "বিবিসি বস্তুনিষ্ঠতা ও স্বচ্ছতার ব্যাপারে যে উঁচু মানদণ্ড মেনে চলে, যেটা তার সাংবাদিকতার মূল স্তম্ভ, এক্ষেত্রে তার ব্যত্যয় ঘটেছে।"
অন্যদিকে এ বিষয়ে বিবিসি থেকে বলা হয়েছে, এই রিপোর্টে স্পষ্ট ব্যর্থতার চিত্র বেরিয়ে এসেছে এবং আমরা এ জন্য খুবই দুঃখিত। বশির বিবিসির ম্যানেজারদের মিথ্যা বলেছিলেন যে তিনি কাউকে কোন জাল নথিপত্র দেখাননি।
বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভি বলেছেন, "বিবিসি ২৫ বছর পর সময়ের কাঁটা পিছিয়ে এখন অতীতে ফিরে যেতে পারবে না, কিন্তু বিবিসি এর জন্য আজ পূর্ণাঙ্গ এবং নিঃশর্তভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে।"
এ বিষয়ে সাংবাদিক বশির বলেন, তাকে সাক্ষাৎকার দিতে প্রিন্সেস ডায়ানা ব্যক্তিগতভাবে রাজি হয়েছিলেন এবং ব্যাংকের ওই দলিলপত্রের সাথে তার সিদ্ধান্তের কোন যোগাযোগ ছিল না।
উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালের বিবিসির প্যানোরামা অনুষ্ঠানের সেই সাক্ষাৎকারে তার ব্যক্তিজীবন, দাম্পত্যজীবন এবং রাজ পরিবার নিয়ে বেশ খোলামেলা ভাবে কথা বলেন। ডায়ানার ওই সাক্ষাৎকারে বিশ্ববাসীর সামনে ব্রিটিশ রাজ পরিবারে নারীদের অবর্ণনীয় কষ্টের গল্প ফুটে ওঠে।
সেই সাক্ষাৎকারের আগে প্রিন্স চার্লস আর ডায়ানা আলাদা থাকলেও বিচ্ছেদ হয় সাক্ষাৎকার প্রকাশের পর। এমনকি তার ঠিক এক বছরের মাথায় প্যারিসে এক রহস্যময় সড়ক দুর্ঘটনায় মাত্র ৩৬ বছর বয়সে মারা যান ডায়ানা। যার জন্যও মানুষ সেই সাক্ষাৎকারকেই অনেকাংশে দায়ী করেন।