Skip to content

৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বুধবার | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ওজন বাড়ার পেছনে প্রচলিত এক ভুল

রাত জেগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরাঘুরি, সকালে ঘুমোতে যাওয়া। কিন্তু দিনের বেলায়ও রয়েছে নানান কাজ তাই কোনোমতে নিয়মের ঘুম ঘুমিয়ে  বেরিয়ে পড়া; বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে এমন প্রবণতা।  বিশেষ করে শহরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে। আর শুধু এক-দু’দিন নয়,  প্রাত্যহিক জীবনের রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে এই নিয়ম। 

আর এ বিষয়ে অনেকের একটা বড় ভুল ধারনা রয়েছে যে কম ঘুমোলে  ওজন কমে যায়। সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে জানা গেছে, দিনে ৫ ঘণ্টার কম বা ৯ ঘণ্টার বেশি ঘুমোলে শরীরে এমন সব পরিবর্তন হয় যে তার কারণে অনেক সময় ওজন বেড়ে যায়। 

 

স্বাভাবিকভাবে আপনার মনে প্রশ্ন আসতেই পারে, 'কেন?' তাহলে বলবো, একটু ভাবুন তো গতকাল রাতে আপনার হাতে ছিল একগাদা কাজ। না ঘুমিয়ে কাজ শেষ করার উদ্দেশ্যে আপনি নিজেকে চাঙ্গা করার জন্য খেয়ে নিলেন এক কাপ কফি বা চা। রাত জেগে থাকায় ক্ষুধাও বাড়ছিলো খুব। হাতের কাছে থাকা যেকোন খাবারই খেয়ে নিলেন আপনি। অথবা অর্ডার করে ফাস্টফুড, জাঙ্কফুডও নিয়ে আসছেন। 

 

বিভিন্ন স্টাডি থেকে জানা গেছে, নিয়মিত কম ঘুম হলে হাই ক্যালোরি খাবারের প্রতি আকর্ষণ বাড়ে। ফলে বাড়ে ওজন। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এর মূলে রয়েছে ব্রেনের কিছু কারসাজি। যত কম ঘুম হবে, আপনি তত ভুল সিদ্ধান্ত নিবেন।  

 

স্বাভাবিক অবস্থায় হয়তো একটা মিষ্টিতেই সামলে নিতে পারেন,  কিন্তু ঘুমের অভাব হলে তা  প্রায়শই সম্ভব হয় না। আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন-এ প্রকাশিত এক প্রবন্ধে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ঘুম কম হলে গভীর রাতে টুকটাক খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। সে খাবারও আবার সচরাচর কার্বোহাইড্রেটে ভরপুর থাকে।

 

ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর বিজ্ঞানীরা গবেষেনা করে  দেখেছেন যে, যারা দৈনিক ৮ ঘণ্টা ভাল ভাবে ঘুমায়, তাদের তুলনায় যারা কম ঘুমায়, তাঁদের খাবারে চর্বির পরিমাণ থাকে প্রায় দ্বিগুণ।

 

অন্যদিকে কম ঘুমোলে খিদের হরমোন ঘ্রেলিনের পরিমাণ বাড়ে। খিদে বেড়ে যায়। আবার কম ঘুমের ফলে শারীরিক–মানসিক চাপ বাড়লে ক্ষরিত হয় স্ট্রেস হরমোন কর্টিজোল। তখন ক্যালোরি খরচ কমে যায়। যা ওজন বাড়ার আরো একটি প্রধান কারণ। শিকাগোর বিজ্ঞানীদের মতে  মাত্র ৪ দিন কম ঘুমোলেই ইনসুলিনের কার্যকারিতা প্রায় ৩০ শতাংশ কমে যায়। ফলে ডায়াবিটিস ও মেদবাহুল্যের আশঙ্কা বাড়ে। 

 

তারমানে আবার এটা ভাববেন না যে, যত বেশি ঘুমবেন তত ওজন কমবে। আবার এমনিই যাদের ঘুম কম, তাদের কম ঘুমের কারণে ওজন বাড়ে না। কিন্তু ঘুমোতে চেয়েও যদি না পারেন  অর্থাৎ নিয়মিত আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে ,  তবে তার ফলেই দেখা দিতে পারে সমস্যা। 

তাই এখনি সময়, ঘুমের সঙ্গে আর কোনও সমঝোতা নয়। আর হ্যাঁ, ভালো ঘুমের জন্য মাথায় রাখতে পারেন কিছু টিপস  – 

 

১. বিছানায় যাওয়ার  কিছুক্ষন আগে থেকেই আপনার প্রিয় মোবাইল ফোনটি দূরে সরিয়ে রাখুন।  

 

২. ঘুমোনোর সময় শুধু ঘুমের দিকেই মনোযোগ দিন।  অন্যসব দুশ্চিন্তা তখন একটু দূরে রাখাই ভালো। 

 

৩. ঘুমোতে যাওয়ার সময় ও ঘুম থেকে ওঠার  সময় আগে থেকে নির্দিষ্ট করে রাখতে পারেন।  

 

৪. ঘুমোতে যাওয়ার দেড়–দু'ঘণ্টা আগে হালকা খাবার খাওয়া উচিত । বেশি খেলে ঘুমের সমস্যা হতে পারে। 

 

৫. অন্ধকারে ঘুমের হরমোন মেলাটোনিন ক্ষরিত হয়। কাজেই আলো নিভিয়ে দিলে ঘুম ভালো হবে।

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ