গায়ের রঙ নাকি যোগ্যতা, নারীর পরিচয় কোনটি?
নারী হয়ে জন্ম নেয়া মানেই হাজারটা প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়া। তার গায়ের রঙ কেমন, চুল কতটা বড়, উচ্চতাই বা কতটুকু, এমন তথাকথিত বহু প্রশ্নের ভীড়ে হারিয়ে যায় তার যোগ্যতা৷ সাধারণ পরিবারের একটি মেয়েকেও যেমন শুনতে হয় এসব কথা ঠিক তেমনি শুনতে হয় পর্দার ওপারে ঝলমলে জগতে আমাদের জনপ্রিয় তারকাদেরও। কথা বলছি ওপার বাংলার জনপ্রিয় টেলিভিশন অভিনেত্রী শ্রুতি দাসের।
পশ্চিমবঙ্গের ধারাবাহিক জগতের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ শ্রুতি দাস। ওপার বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ত্রিনয়নীতে নাম চরিত্রে অভিনয় করে প্রচুর জনপ্রিয়তা লাভ করেন। বর্তমানে স্টার জলসায় দেশের মাটি ধারাবাহিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। তার দুর্দান্ত অভিনয়, বাচনভঙ্গি যেভাবে শুরু থেকেই মুগ্ধ করেছে দর্শকদের ঠিক তেমনি শুরু থেকেই বর্ণবৈষম্যের শিকার হতে হয়েছে তাকে। তার গায়ের রঙের জন্য বারংবার কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছে তাকে।
অভিনয় জগতে আসার পর তার গায়ের রঙের জন্য বহুবারই তাকে শুনতে হয়েছে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য। সেসব মন্তব্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলেছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়৷ শ্রুতির ভক্তরা বরাবরই পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছেন তার সাথে। সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন শ্রুতি দাস। এ খবরের জের ধরেই আবারও কটাক্ষের শিকার হন তিনি।
কিছুদিন আগেই তার ভক্তদের উদ্দেশ্যে তার সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে তিনি জানান তিনি করোনা আক্রান্ত। এরপর সেখানে বহু মানুষ তার জন্য শুভেচ্ছা বার্তা পাঠান এবং দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। কিন্তু বাধ সাধেন বর্ণবাদে বিশ্বাসী একদল নিচু মানসিকতার মানুষ। বিভিন্ন জায়গায় তাকে নিয়ে কটাক্ষ করা শুরু করলেন অনেকে। যেখানে দেখা যায়, একজন মন্তব্য করেছেন, " বাঁচা গেলো! এই মুখটা আর দেখতে হবেনা।" কেউ আবার লিখেছেন "না খেয়ে মর!"
তবে শ্রুতির হয়ে এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তার অভিনয় জগতের বন্ধু অন্বেষা হাজরা এবং মানসী সিং। একজনের কমেন্টে অন্বেষা লিখেছেন, " আপনার সন্তান, আপনার মা, বাবা বা কাছের কারো এ রোগ হলে আপনার কেমন লাগতো?" অন্যদিকে মানসী সিং লিখেন, " আমি গর্বিত ওকে নিয়ে, ও নিজের যোগ্যতায় পরিচিত হবে গায়ের রঙে নয়।"
উল্লেখ্য ত্রিনয়নী ধারাবাহিকের মধ্য দিয়েই অভিনয় জগতে পা রাখেন তিনি। খুব কম সময়েই প্রথম ধারাবাহিকের মাধ্যমেই ব্যাপক সফলতা লাভ করেন। নিজের যোগত্যায় হয়ে ওঠেন বেশ জনপ্রিয়। প্রথম কাজ শেষ হতে না হতেই সুযোগ পেয়ে যান একাধিক কাজ করার। কিন্তু নিজের যোগ্যতায় এতদূর পৌঁছোনোর পরও আজও তাকে কথা শুনতে হয় গায়ের রঙের জন্য। আর ঠিক এমন সময়ই প্রশ্ন জাগে, 'নারীর পরিচয় কোনটি? গায়ের রঙ নাকি যোগ্যতা?"