রোগ প্রতিরোধে মধুর ভূমিকা
প্রাচীনকাল থেকে মধু একটি পুষ্টিকর ও সুস্থ শরীরের জন্য অন্যতম উপাদান হিসেবে পরিচিতি পেয়ে আসছে। আয়ুর্বেদ এবং ইউনানি চিকিৎসা শাস্ত্রেও মধুকে বলা হয় মহৌষধ। এটা যেমন বলকারক, সুস্বাদু ও উত্তম উপাদেয় খাদ্য নির্যাস, তেমনি নিরাময়ের ব্যবস্থাপত্রও। আর তাই তো খাদ্য ও ওষুধ এ উভয়বিধ পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ নির্যাসকে প্রাচীনকাল থেকেই পারিবারিক ভাবে ‘পুষ্টিকর ও শক্তিবর্ধক’ পানীয় হিসেবে সব দেশের সব পর্যায়ের মানুষ অত্যন্ত আগ্রহ সহকারে ব্যবহার করে আসছে। আধুনিক বিজ্ঞান মধুকে সর্ব রোগের ঔষধ হিসাবে গ্রহণ করেছে।
প্রাচীনকাল থেকে মধু একটি পুষ্টিকর ও সুস্থ শরীরের জন্য অন্যতম উপাদান হিসেবে পরিচিতি পেয়ে আসছে। স্বাস্থ্য গবেষকরা বলেছেন, মধু খাবার অভ্যাসের জন্য জিবে তৃপ্তি জোগানো ছাড়াও মধুর আরও অনেক ভূমিকা আছে। মধু সেবনের ফলে আদিম মানুষের রোগবালাইয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা ছিল বেশি। এ ছাড়া এতে আছে ফেনোলিক্স নামের উপাদান যা অন্যতম শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্টের গুণসম্পন্ন। যখন আমাদের শরীরের অভ্যন্তরে বিপাক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় তখন কিছু কণা নিঃসরণ ঘটে যাদের চিকিৎসাবিদরা সাধারণত ফ্রি রেডিক্যাল বলে অভিহিত করেন। এ ফ্রি রেডিক্যালগুলো নিঃসরণের হার একেকজনের শরীরে একেক রকম। এগুলো শরীরের জন্য ক্ষতিকর। আমাদের ধমনির স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা দেওয়া ছাড়া এরা অনেক সময় ডিএনএর ক্ষতিসাধন করতে পারে যা ক্যান্সারসহ অন্যান্য মারাত্মক রোগের জন্ম দিতে পারে। এসব ফ্রি রেডিক্যাল নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ার ক্ষমতা মধুর আছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে অধিকাংশ মানুষকেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর দিকে বাড়তি মনোযোগ দিতে হবে। অসংখ্য অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের উৎস হিসেবে অধিকাংশ মানুষের প্রথম পছন্দ হল মধু। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ মধু লিকুইড গোল্ড হিসেবেও পরিচিত।
খাঁটি মধুর উপকারিতা প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান বলেন, পুষ্টি উপাদানে ভরপুর মধু। একজন পুষ্টিবিদ হিসেবে আমি মধুকে ওষুধ হিসেবে বিবেচনা করি। পুষ্টিগুণের পাশাপাশি এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কথা বলা যায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের যখন তখন মধু খাওয়া নিষেধ। মাঝেমধ্যে ১ অথবা ২ চামচ খেলে ক্ষতি হবে না। তবে বেশি খাওয়া যাবেনা।