অটোক্যানিবালিজম: নিজেকে খেতে চাওয়ার রোগ!

দাঁত দিয়ে নখ কাটা অনেকেরই অভ্যাস। কেউ অল্প স্বল্প কেউবা আবার অনেক ভয়ংকর৷ নিজেকে থামাতে চাইলেও সম্ভব হয়ে ওঠেনা৷ নিজের অজান্তেই শুরু হয়ে যায় দাঁত দিয়ে নখ কাটা। বেশিরভাগই আবার তাদের এই কর্মে আনন্দও পান বটে। কিন্তু কেন মানুষের মস্তিষ্কের এই অদ্ভুত খামখেয়ালিপনা? কখনো ভেবে দেখেছেন?
এর কারণ 'অটোক্যানিবালিজম'। অটোক্যানিবালিজম শব্দ বেশিরভাগ মানুষেরই অপরিচিত, আবার বেশ কঠিনও বটে। তাই কোথাও শব্দটি দেখলে স্কিপ করে যেতেও দ্বিধা বোধ করবোনা। শব্দটির মানে বুঝলে আবার ঘটবে ঠিক উল্টো, মানুষ এ সম্পর্কে জানতে চাইবে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে। তবে চলুন জানা যাক৷
অটোক্যানিবালিজম, যা স্ব-নরমাংসবাদ বা অটোসারোফ্যাজি নামেও পরিচিত। এ শব্দগুলোও নেহাত কম কঠিন নয়। চলুন সহজ ভাবে বলা যাক। অটোক্যানিবালিজম হচ্ছে একধরনের রোগের নাম। যেই রোগের লক্ষণ হচ্ছে , মানুষের নিজের শরীরের অংশ নিজে খেতে চাওয়া। এটি একটি মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাধি যা মূলত নিজেকে খেতে বাধ্য করার দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।
অটোক্যানিবালিজমের সবচেয়ে গুরুতর রূপ হ'ল দেহের পুরো অঙ্গ খেয়ে নেয়া। যাক, সেই ভয়ংকর দিকে আমরা আপাতত না যাই। কারণ বিশ্বে এইধরনের রোগরী সংখ্যা একদমই বিরল, নেই বললেই চলে। অটোক্যানিবালিজম অনুশীলনকারী বেশিরভাগ লোকেরা চরম আত্ম-নরমাংসে জড়িত না হলেও সাধারণত স্ক্যাবস, নখ, ত্বক, চুল ইত্যাদি খেয়ে থাকেন। আর সবথেকে প্রাথমিক ধাপ হল দাঁত দিয়ে নখ কাটা।
যদি সঠিক সময় চিকিৎসা না করা হয় তবে অটোক্যানিবালিজম দাগ, সংক্রমণ এবং কিছু ক্ষেত্রে মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে যা মৃত্যুর কারণ হতে পারে। এবার চলুন জানা যাক মারাত্মক এ রোগের ঠিক কি কি কারণে ঘটে থাকে তার মধ্যে প্রধান কিছু কারণ।
জেনেটিক্সঃ গবেষণায় জানা যায় পরিবারের সদস্যের এ রোগ থাকলে এ রোগের ঝুঁকি অনেকাংশে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
বয়সঃ কিছু ব্যতিক্রম ব্যতীত অটোক্যানিবালিজম এর লক্ষ্মণগুলো সাধারণত শৈশবে বেশি দেখা যায়।
আবেগঃ বিভিন্ন আবেগকে এর অন্তর্নিহিত ট্রিগার বলে মনে করা হয়। একটি ছোট্ট গবেষণায়, গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন যে একঘেয়েমি, হতাশা এবং অধৈর্য এ রোগের সাথে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জড়িত।
মানসিক অসুখঃ কেউ মানসিক অসুস্থতায় ভুগলে তার এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা অনেকাংশে বেড়ে যায়।
প্রাথমিক দিকে তেমন আশংকার সম্ভাবনা না থাকলেও৷ ধীরে ধীরে এ রোগই পরিণত হতে পারে মারাত্মক এক রোগে। এমনকি কিছু কিছু লক্ষণ ঠেলে দিতে পারে মৃত্যুর দিকেও। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি এ বিষয়ে আমাদের জ্ঞান খুবই সীমিত। তাই এখন থেকেই দরকার নিজে সচেতন হওয়া ও সকলের সচেতনতা বৃদ্ধি করা।