Skip to content

২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | মঙ্গলবার | ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন

একবার মাঘ মাসে বেজায় শীত পড়েছে। দিনরাত কনকনে ঠান্ডা। এ রকম একদিন ছুটির পর বন্ধুদের নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন এক কিশোর বালক। দেখতে পেলেন রাস্তার ধারে বসে এক বৃদ্ধ ভিক্ষুক ঠকঠক করে কাঁপছে আর কাঁদছে। বালকটি নিজের চাদর খুলে বৃদ্ধের গায়ে জড়িয়ে দিলেন। তারপর এভাবেই বালকটি মানুষের প্রতি এমন ভালোবাসা নিয়েই বড় হয়ে উঠলেন। দায়িত্ব নিলেন অসহায় মানুষের,  পরাধীন দেশের।  হয়ে উঠলেন আমাদের নেতা, আমাদের জাতির পিতা। তিনি হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

 

আজ ১৭ ই মার্চ এই মহান ব্যক্তিত্বের ১০১ তম জন্মদিন। প্রতি বছর বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে উদযাপন করা হয়। এ উপলক্ষে আজ একদিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। 

 

১৯২০ সালের ১৭ ই মার্চ এই মহান ব্যক্তিত্বের মানুষটি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।  বাবা শেখ লুৎফর রহমান ও মা শেখ সায়েরা খাতুনের ঘরে চার মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে  প্রথম পুত্র সন্তান শেখ মুজিবুর রহমান। শেখ মুজিব জন্মানোর পর নানা শেখ আবদুল মজিদ আকিকার সময় তাঁর নাম রাখলেন শেখ মুজিবুর রহমান। মেয়েকে বললেন, ‘মা সায়েরা, তোর ছেলের এমন নাম রাখলাম যে নাম জগৎজোড়া খ্যাত হবে।’

 

যে নাম আসলেই খ্যাত হয়ে গেলেন ইতিহাসের পাতায়। বাংলাদেশের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর থেকে বড় নেতা আর নেই।  যাঁকে বলা হয় বাঙালীর স্বাধীনতার ত্রাতা। কিশোর বয়সেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।  এরপর এক এক করে স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। পূর্ব পাকিস্তানকে প্রতিষ্ঠা করেন স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে।

 

২০২০ সাল ছিল বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী। যাকে মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বছরব্যাপী জাতির জনকের জন্মশত বার্ষিকীর অনুষ্ঠান সরকারি এবং বেসরকারিভাবে উদযাপিত হয়ে আসছে। কিন্তু করোনার প্রকোপে অনেক কর্মসূচি স্থগিত করা হয়, যা এবার উদযাপিত হতে যাচ্ছে। সরকারের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী মুজিববর্ষকে  এ বছরের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে পালিত হতে যাচ্ছে টানা ১০ দিনের অনুষ্ঠান। যাতে বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য বিদেশি অতিথিরা অংশ নেবেন। ‘মুজিব চিরন্তন’ শিরোনামে এ ১০ দিনের অনুষ্ঠান চলবে।

 

আজ সকাল সাড়ে ৬ টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল সাড়ে ১১টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে রক্ষিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ। সকাল ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ হবে। যাতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া বিকাল সাড়ে তিনটায় জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে অনুষ্ঠিত হবে বিশেষ অনুষ্ঠান।

 

১৮ মার্চ আয়োজনের থিম ‘মহাকালের তর্জনী’। সে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন। ১৯ মার্চের অনুষ্ঠান ‘যতকাল রবে পদ্মা যমুনা’। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে উপস্থিত থাকবেন। ২০ মার্চ ‘তারুণ্যের আলোকশিখা’। এই অনুষ্ঠানে ওআইসি’র সেক্রেটারি জেনারেল ড. ইউসেফ আল ওথাইমিন শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন। ২১ মার্চের আয়োজন ‘ধ্বংসস্তূপে জীবনের গান’, এতে দেশীয় একাডেমিশিয়ানরা বক্তব্য দেবেন। ২২ মার্চের আয়োজন ‘বাংলার মাটি আমার মাটি’। এদিন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারী উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিদে সুগা শুভেচ্ছা বার্তা দেবেন। ২৩ মার্চ ‘নারীমুক্তি, সাম্য ও স্বাধীনতা’, এদিন ইউনেস্কোর ডিজি উপস্থিত থাকবেন। ২৪ মার্চ ‘শান্তি-মুক্তি ও মানবতার অগ্রদূত’, সেদিন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং উপস্থিত থাকবেন। পোপ ফ্রান্সিস শুভেচ্ছা বার্তা দেবেন। ২৫ মার্চ ‘গণহত্যার কালরাত্রি ও আলোকের অভিযাত্রা’। এদিন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী চুং স্যু-কুয়েন এবং তাকাশি হাওয়াকাওয়ার পুত্র ওসামু হাওয়াকাওয়া শুভেচ্ছাবার্তা দেবেন। ২৬ মার্চের আয়োজন ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর ও অগ্রগতির সুবর্ণরেখা’। এদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত থাকবেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন।

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ