Skip to content

৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শনিবার | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারী দোকানিদের বাজার !

বাজারের নাম 'বউবাজার'। যেখানকার বেশির ভাগ দোকানিই নারী। বেশির ভাগ নারী দোকানি থাকার কারণেই এই বাজারের নাম হয়েছে 'বউবাজার'।  পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার দুর্গম চরমোন্তাজ ইউনিয়নের বুড়াগৌরাঙ্গ নদের বাঁকে বসেছে এই ‘বউবাজার’।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, প্রায় ২৫ বছর আগে হুসোন বেগম নামের এক নারী বুড়াগৌরাঙ্গ নদের তীরের বেড়িবাঁধের ওপর একটি চায়ের দোকান দিয়ে বসে। পরে একে একে নারীদের সেই দোকানের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এক পর্যায় ঐ স্থানটির নাম ‘বউবাজার’ নামেই পরিচিতি পায়।

'বউবাজার' এর নারী দোকানিদের প্রত্যেকের জীবনেই রয়েছে কোনো না কোনো সংগ্রামের গল্প। প্রত্যেকেই কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন পেটের টানে। তারা সকালেই বুড়াগৌরাঙ্গ নদের পাশে বসবাস করার কারণে কারো স্বামী, কারো ছেলে, কারো বাবা নদী বা সাগরের জেলে। অর্থাৎ সংসারের উপার্জনক্ষম মানুষ মৎস পেশার ওপর নির্ভরশীল। 

বলা হয়ে থাকে একসময় মাছ পেলে ঐ জেলে পরিবারগুলোর সংসারে রান্নাবান্না চলতো, আর না পেলে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটত। তাই  পুরুষের পাশাপাশি সংসারের হাল ধরতে  অবশেষে গৃহিণীরা দোকান দিয়ে বসেছেন। শুরুতে অনেকটা  হাসিঠাট্টার পাত্রই ছিলো তারা। কিন্তু  তবুও থেমে যায়নি এসব নারীরা। এগিয়েছে জোর উদ্যোমে। 

'বউবাজারে' বেড়িবাঁধের দুই সারিতে হরেক রকম পণ্যের অর্ধশত দোকান। নিত্যপ্রয়োজনীয় সবই পাওয়া যায় দোকানগুলোতে। প্রায় সব দোকানেই নারী বিক্রেতা। তবে ক্রেতা নারী-পুরুষ সবাই। প্রতিনিয়ত লড়াই করে এগিয়ে  চলছে এসব নারী দোকানিরা। 

 

এদের মধ্যে একজন নারী দোকানি  বকুলী (৪৫)। তিনি বলেন 'স্বামী নদীতে মাছ ধরে। আমিও আগে মাছ ধরতাম। কিন্তু এখন মাছ ধরে সংসার চলে না। এ জন্য দোকান দিছি। নদীতে মাছ না পাওয়া গেলেও আমাগো পেটে দুইটা ভাত জোটে।’ 

 

এদের প্রসঙ্গে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বে) তাসলিমা আক্তার বলেন, ‘চরাঞ্চলের নারীরা এখন আর পিছিয়ে নেই। তারাও পারে সংসারের রোজগারের সদস্য হতে। চরমোন্তাজের বউবাজারের গল্প শুনে আমার কাছে এমনটাই মনে হয়েছে। সংগ্রামী এই নারীদের জন্য আমাদের সেবার দরজা খোলা।’

 

এরই মধ্যে জানা যায় নতুন সমস্যার কথা। বেড়িবাঁধের ওপর গড়ে ওঠা বাজারটি বুড়াগৌরঙ্গ নদের ভাঙনের মধ্যে পড়েছে। তাই এখন ব্যবসায়ীদের দাবি, বউবাজার রক্ষায় প্রশাসন প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করুক।

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ