Skip to content

৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কেমন হবে ভ্যাকসিন পরবর্তী যুগ

বর্তমানে বিশ্ব জুড়ে চলছে করোনা মহামারীর প্রকোপ। পুরো পৃথিবীই পার করছে একটি কঠিন সময়। এই কঠিন সময়ের যেন কোন অন্ত নেই। ইতোমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে ১,২৪০,৪২৩ জন মানুষ মারা গেছেন। এই সংখ্যাটি দিন দিন বেড়েই চলছে। 

সম্প্রতি কিছু প্রতিষ্ঠান করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কারের সুখবর শোনাচ্ছে। করোনার ভ্যাকসিন তৈরির জন্য বিশ্বের সব সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানী রাত-দিন এক করে কাজ করেছেন। পৃথিবীর বড় বড় ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ভ্যাকসিন আবিষ্কারের চেষ্টা করছে। জার্মান প্রতিষ্ঠান বায়োএনটেক ও মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠান ফাইজারের যৌথ উদ্যোগে তৈরি করোনা ভাইরাসের টিকা তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে ৯০ শতাংশ কার্যকারিতা দেখিয়েছে৷  বায়োএনটেক ও ফাইজারের টিকা ছাড়াও অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রোজেনেকার দুই ধরনের টিকা ও মডার্নার টিকা নিয়েও আশার কথা শোনা যাচ্ছে। ইতিহাসের সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যেই আবিষ্কৃত হচ্ছে করোনার ভ্যাকসিন। ইতোমধ্যে কিছু দেশে এসব ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমোদন দেয়া হয়ে গেছে। আশা করা যাচ্ছে শীঘ্রই ভ্যাকসিন পৃথিবীকে করোনামুক্ত করতে সক্ষম হবে।
 

করোনার ভ্যাকসিন চারটি ধাপে দেয়া হবে দেশের মানুষের মাঝে। এদেশে প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হয় ৮ মার্চ। এরপর থেকে বাড়তে থাকে রোগীর সংখ্যার সাথে মৃত্যুর সংখ্যাও। এরপর বছরের আগস্ট সেপ্টেম্বরে এসে তা কিছুটা কমে যায়। কিন্তু নভেম্বর থেকে দেশে আবার বাড়তে থাকে করোনা রোগীর সংখ্যা। বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যু সংখ্যা ৭,৩৫৯ জন। পুরো পৃথিবীই করোনা সংক্রমণ সামাল দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এদিকে দেশের স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি বা তার আগেই ভ্যাকসিন বিতরণের আশ্বাস দিয়েছেন। সরকার এদিকে বিশেষ নজর দিচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে ২০২১ সালের মাঝামাঝিতে সবার ভ্যাকসিন দেয়া সম্ভব হবে।
 

সবার ভ্যাকসিন নিশ্চিত হয়ে আসলে আবার সব কিছু আগের মতো খুলে দেয়া হবে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে। মানুষ নির্ভীক হয়ে চলাফেরা করতে পারবে। অনুষ্ঠান, গণ-জমায়েতে অংশগ্রহণ করতে পারবে। করোনা প্রাদুর্ভাবের জন্য ২০২০ এর দুই ঈদ, পূজা ও অন্যান্য অনুষ্ঠান সীমিত আকারে অনেকটা অনাড়ম্বর-ভাবেই উদযাপন করা হয়েছে। ভ্যাকসিন পরবর্তী যুগে সকল অনুষ্ঠান সামগ্রিকভাবে স্বাচ্ছন্দ্যে উদযাপন করা যাবে। করোনার জন্য যে সব কিছু থেমে আছে তা আবার চালু হয়ে যাবে। কিন্তু করোনা দেশ থেকে করোনা দূর হয়ে গেলেও অনেক কিছুই আগের মতো স্বাভাবিক থাকবেনা। অনেক কিছুরই পরিবর্তন দেখা যাবে। ভ্যাকসিন পরবর্তী যুগের মানুষেরা রোগ সংক্রমণ বিষয়ে অনেক সচেতন হয়ে উঠবে বলে আশা করা যায়। 

করোনা মহামারীর কারণে সমগ্র বিশ্বের অর্থনীতি এখন সংকটে। ভ্যাকসিন পরবর্তী সময়ে প্রায় সব দেশই হয়তো অর্থনৈতিক মন্দার সম্মুখীন হবে। লকডাউনের সব বন্ধ থাকায় সময় অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। অনেক কোম্পানি ইতোমধ্যে ব্যাংক কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হয়েছে। ভবিষ্যতে এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। এছাড়াও করোনার কারণে অনেকেরই আয় কমে গিয়েছে। অনেকের আয় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে তাদের অর্থ ও পুঁজি সংকট দেখা দিবে। বিশ্ব অর্থনীতিতেও করোনার প্রভাব থাকবে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেও করোনার প্রভাব থাকবে অদূর ভবিষ্যৎ পর্যন্ত।

যেকোনো সংকটময় অবস্থাই হোক সাহসের সাথে সেই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। করোনার কারণে আমরা সবাই একটি সংকটময় সময় পার করছি। এরপর সবার ভ্যাকসিন নিশ্চিত হলে এই সংকটময় অবস্থার নিরসন ঘটবে। আশা করি সেই সময়টি শীঘ্রই আসুক আমাদের মাঝে।

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ