ত্বকের সুরক্ষায় পনির!
অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাবার হলো পনির। পনিরে রয়েছে মানব শরীরের জন্য ভীষণ দরকারি উপাদান, যেমন: প্রোটিন, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, খনিজ উপাদান। কিন্তু খাদ্য হিসেবে ব্যবহার ছাড়াও পনিরের আরো গুণ রয়েছে। সৌন্দর্য চর্চার উপকরণ হিসেবে পনির খুবই কার্যকর। পনির খেলে ত্বকের জেল্লা বৃদ্ধি পায়, তারুণ্য বজায় থাকে।
সৌন্দর্য চর্চায় ক্রিম চিজের জুড়ি নেই। এটি হলো তরল পনির। এই ক্রিম চিজ কিনতে পাওয়া যায়, আবার খুব সহজে ঘরেও তৈরি করে নেওয়া যায়। যেহেতু সৌন্দর্য চর্চায় পনির সরাসরি ত্বকে ব্যবহার করা হয়, তাই ঘরে তৈরি পনিরই এ ক্ষেত্রে ভালো। ঘরে যে পনির তৈরি করা হয়, তা একটি ব্লেন্ডারে নিয়ে তাতে এক টেবিল চামচ পরিমাণ পনিরের পানি বা টক দই মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিলেই তৈরি হয়ে যায় তরল পনির বা ক্রিম চিজ।
পনিরের ক্লিনজিং মাস্ক
পনিরের মাস্ক মুখমণ্ডল পরিস্কার রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ঘরের বাইরে গেলে প্রতিদিনের ধুলোময়লা আমাদের ত্বকে জমে থাকে। নিয়মিত ভালোভাবে পরিষ্কার না করলে এসব ময়লা জমে ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই প্রয়োজন ত্বকের নিয়মিত পরিচর্যার। এক্ষেত্রে যব ও পনির দিয়ে তৈরি মাস্ক সাহায্য করতে পারে। এই মাস্ক মুখমণ্ডলে কিছুক্ষণ লাগিয়ে রাখলে মুখের ধুলাবালি মাস্কের সাথে উঠে আসে আর মুখমণ্ডল পরিষ্কার রাখে।
পদ্ধতি
এ মাস্ক তৈরি করার জন্য প্রথমে এক টেবিল চামচ পরিমাণ যব ও সঙ্গে দুই টেবিল চামচ পরিমাণ পনির নিতে হবে। এরপর এই দুই উপকরণকে খুব ভালো করে মেশাতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যে মিশ্রণটি যেন খুব ঘন বা খুব পাতলা না হয়। মিশ্রণ তৈরি হয়ে গেলে কাঁধে ও মুখে নিচে থেকে ওপরের দিকে ভালোভাবে লাগিয়ে নিতে হবে। পাঁচ থেকে সাত মিনিট রেখে দিলেই মিশ্রণটি শুকিয়ে যাবে। এরপর মুখে ও কাঁধে হালকা করে ঠাণ্ডা পানি ছিটিয়ে মাস্কটি ভালোভাবে ঘষে তুলে ফেলতে হবে। শেষে বেশ কিছুক্ষণ সময় নিয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে মুখ ও কাঁধ ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। এই মাস্কে থাকা যব ত্বকের গভীর থেকে ময়লা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং পনির একই সঙ্গে ত্বক পরিষ্কারক ও ত্বকের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করে। এর ফলে ত্বক হয়ে ওঠে ঝলমলে।
পনিরের রিফ্রেশিং মাস্ক
শুষ্ক ত্বকের জন্য পনির রিফ্রেশিং মাস্কের জুড়ি নেই। যাঁদের ত্বক শুষ্ক, এ মাস্ক তাঁদের ত্বকের জন্য ভালো। এই মাস্ক ত্বকের শুষ্কতা রোধ করে ত্বককে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত করে।
পদ্ধতি
দুই টেবিল চামচ পনিরের সঙ্গে একটি লেবুর রস বা একটি স্ট্রবেরির রস মিশিয়ে ভালোভাবে মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। এই মিশ্রণ হবে একটু ভারী। এটি কাঁধে ও মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে নেওয়ার পর ১০ মিনিট রেখে দিতে হবে। ১০ মিনিট পর মাস্ক শুকিয়ে এলে সতর্কতার সঙ্গে হাত দিয়ে মাস্কটি ত্বক থেকে তুলে ফেলতে হবে। এরপর গরম পানিতে ভিজিয়ে নেওয়া তোয়ালে দিয়ে মুখ ও কাঁধ মুছে নিতে হবে। এই মাস্ক ব্যবহারের ফলে শুষ্ক ত্বক হয়ে উঠবে প্রাণবন্ত।
পনিরের অ্যান্টি এজিং মাস্ক
পনির একটি প্রাকৃতিক বয়স রোধী উপাদান। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রেখে ত্বককে শুষ্ক ও রুক্ষ হওয়ার হাত থেকে বাঁচায়। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রেখে তারুণ্য বজায় রাখতে পনিরের মাস্ক তাই ভীষণ উপকারী।
দ্ধতি
খোসা ছাড়া অর্ধেক অ্যাভোকাডো, অর্ধেক পিচ ফল ও পনির একসঙ্গে ব্লেন্ডারে দিয়ে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। যতক্ষণ প্রতিটি উপাদান ভালোভাবে না মেশে, ততক্ষণ ব্লেন্ড করতে হবে। ভালোভাবে ব্লেন্ড হয়ে এলে এই মিশ্রণ মুখে, কাঁধে খুব ভালোভাবে লাগিয়ে নিতে হবে। যেহেতু এটি অ্যান্টি–এজিং মাস্ক, তাই মুখ ও কাঁধের সঙ্গে হাত ও পায়ের ত্বকেও মিশ্রণটি লাগানো যাবে। ত্বকে লাগানোর পাঁচ মিনিট পর মাস্কটি শুকিয়ে এলে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর যেকোনো একটি অয়েল ফ্রি ময়েশ্চারাইজার ত্বকে ব্যবহার করে নিলেই পড়বে না বয়সের ছাপ। বজায় থাকবে ত্বকের তারুণ্য।