খেলার মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দুই বোন!
পল্টন শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ জিমনেসিয়াম। খেলার ময়দানে তুমুল লড়াই চলছিল সোনাম সুলতানা ও নওরিন সুলতানার মধ্যে। সম্পর্কে তারা দুই বোন। কিন্তু এখানে পেশাদার খেলোয়াড়। তাই এখানে সব সম্পর্ক ঊর্ধ্বে রেখে লক্ষ্য একমাত্র জয়ের দিকে।
মুজিব বর্ষ বিজয় দিবস আমন্ত্রণমূলক টেবিল টেনিস টুর্নামেন্টে কাল মঙ্গলবার মেয়েদের দলগত ইভেন্টের ফাইনালে খেলেছে সোনামের ক্লাব আবাহনী ও নওরিনের ক্লাব বাংলাদেশ পুলিশ।
দলগত ইভেন্টের নিয়ম অনুসারে মেয়েদের এককের খেলায় সোনামের মুখোমুখি হয়েছিলেন তার নিজের ছোট বোন নওরিন। ম্যাচটিতে যদিও সোনামের কাছে হেরে গেছেন নওরিন, কিন্তু দলগত ইভেন্টে ৩-১ গেমে আবাহনীকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে নওরিনের দল পুলিশ।
তাদেরকে 'টেবিল টেনিস পরিবার' বলে আখ্যা দিলে ভুল হবে না । দুই বোন নিয়মিত খেলছেন। একসময় খেলতেন বড় ভাই সাজ্জাদ হোসেনও। যিনি গত বছর স্পেশাল অলিম্পিকসে সোনা জিতেছেন। কিডনি জটিলতায় ভুগে সাজ্জাদ মারা গেছেন গত বছর ২৫ ডিসেম্বর। সোনামের ছেলে আবু সুফিয়ান আন্তস্কুল টিটিতে চ্যাম্পিয়ন, স্বামী মোহাম্মদ আলী জাতীয় দলের কোচ।
২৪ বছরের ক্যারিয়ারে অনেক প্রতিপক্ষ সামলেছেন সোনাম। কিন্তু বোনের বিপক্ষে খেলতে গিয়ে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হয়েছে পাঁচবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন এই নারীর । বড় বোন সোনামের সঙ্গে নওরিনের বয়সের পার্থক্য প্রায় ১৪ বছর। নওরিন খুব ছোট থাকতে বিয়ে হয়ে যায় সোনামের। তাই, টেবিল টেনিসের হাতেখড়িটা নওরিন নিতে পারেনি অভিজ্ঞ বড় বোনের থেকে।
কিন্তু নড়াইলের মহিষখোলায় বাড়ির পাশের ক্লাবে নওরিনকে খেলা শেখাতেন চাচা ইসমাইল হোসেন। ২০১৪ সালে নওরিন জাতীয় জুনিয়রে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। খেলার সুবাদে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরি হয়েছে। নিয়মিত সেনাবাহিনীর কোচের কাছে অনুশীলন করে এবারের টুর্নামেন্টে খেলতে নেমেছেন নওরিন।
খেলার মাঠে লড়াকু প্রতিদ্বন্দ্বী। মাঠের বাইরে দুই বোনের সম্পর্ক বন্ধুর মতো। নিজের ক্যারিয়ারের অনেকটাই শেষের দিকে সোনাম।
এসএ গেমসে দুবার ব্রোঞ্জও জিতেছেন। এবার নিজের চেয়ে বেশি স্বপ্ন দেখেন ছোট বোনকে নিয়ে।