শিশুর মনস্তাত্ত্বিক বিকাশের পথে বাঁধা হতে পারে পরিবারও
একটি শিশুর ভবিষ্যৎ অবস্থান পরিবারের শিক্ষার উপর অনেক অংশে নির্ভর করে। শুধুমাত্র অর্থ, বেশ ভূষা কখনোই শিশুর উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে না। বাবা মায়ের আদর আহ্লাদ এবং তাদের দেখানো স্বপ্নের পথ ও অনুপ্রেরণা পারে একটি শিশুকে সমাজের আদর্শ ব্যক্তিত্ব হিসেবে গড়ে তুলতে।
অনেকের ধারণা কেবল দামি দামি খেলনা,পোশাক,বাড়ি, গাড়ি শিশুর উচ্চ মানসিকতা তৈরিতে প্রয়োজনীয়। অথচ তার সামনে যখন সামাজিক অবস্থান রক্ষার্থে যোগ্যতার অভাব থাকা সত্ত্বেও অর্থের বিনিময় ঘটিয়ে কোন নামকরা প্রতিষ্ঠান এ ভর্তি করা হচ্ছে তখন তার মনে হচ্ছে এটা বৈধ। অর্থাৎ মনস্তাত্ত্বিক বিকাশে পরিবার থেকেই পাচ্ছে নেতিবাচক শিক্ষা। আবার অনেকে বাবা মায়ের থেকে তিন বেলা শুনতে থাকে তোকে দিয়ে কিছু হবেনা। অনেক ভাবেই পরিবার থেকে অবহেলার স্বীকার হতে পারে। কখনো ভাইবোন এর মধ্য বাবা মায়ের আদর কোন একদিকে গেলে অপরদিকে মানসিক চাপ পড়ে। আবার কখনো অবজ্ঞাসূচক বাক্য বলে আঘাত করলে শিশুর উপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
শুধুমাত্র পরিবার পারে তার সন্তানকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে। পরিবার পারে পারিপার্শ্বিক পরিবেশে খাপ খাইয়ে ইতিবাচক বিষয় ধারণ করিয়ে নেতিবাচক দিক সম্পর্কে শিশুকে শিক্ষা দিয়ে দূরে রাখতে। পরিবারের প্রতিটি সন্তানকে সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। হোক বড় সন্তান অথবা ছোট সন্তান আবার হোক ছেলে অথবা মেয়ে। পারিবারিক অবস্থান সকলের এক রাখতে হবে এবং সর্বদা ভালো কাজে অনুপ্রেরণা দিতে হবে, মানসিক শক্তি দিতে হবে৷ উন্নত মানসিকতা তৈরি তে পরিবারের সকল সদস্যদের সচেতন থাকতে হবে। ঘরের টুকটাক কাজে ছেলে এবং মেয়ের মধ্য ভেদাভেদ তৈরি করা যাবেনা। বাবা মায়ের সৎ পথে করা উপার্জন এবং তার পিছনের পরিশ্রম শিশুদেরকে জানাতে হবে এবং উপলব্ধি করাতে হবে এবং এর মহৎ দিক সম্পর্কে অবশ্যই তাদের বোঝাতে হবে।
মেকি সাঁজ থেকে দূরে রেখে সত্যিকার অর্থে সত্য প্রকাশের আনন্দ কতখানি তা সম্পর্কে অবগত করতে হবে। দেশের প্রতি যাতে শ্রদ্ধা ভালোবাসা বাড়ে তাই দেশের ভালো বিষয়গুলো তাদের সামনে তুলে ধরতে হবে। জানাতে হবে দেশপ্রেমের গুরুত্ব,পড়াতে হবে স্বাধীনতার গল্প। ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষার মধ্য দিয়ে শিশুর মানবিক মূল্যবোধ তৈরি করতে হবে।
সামাজিক পরিবেশ অনুসরণ করতে গিয়ে পাশ্চাত্যের ফ্যাশনকে আধুনিক মনে করে শিশুর মধ্য নৈতিক শিক্ষার অভাব তৈরি করা যাবেনা। এতে করে ভবিষ্যতে এই শিশুর মানবিক জ্ঞান শক্তি লোপ পাবে যাতে করে দেশ সহ গোটা পরিবারের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। উপরিউক্ত বিষয়গুলোর প্রতি আমাদের একটু সচেতনতা পারবে প্রতিটি শিশুর জীবনে ইতিবাচক অধ্যায় শুরু করতে।