Skip to content

২রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বৃহস্পতিবার | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সৌন্দর্য আমার রূপে নয়, কর্মে

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায় প্রায় দেখি একজনকে গ্লোরিফাই করতে আরেকজনের বডি শেইমিং করে অনেকে। বডি শেইমিংয়ের পাশাপাশি চুল ছোট থাকায় আমায় যেতে হয়েছে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে। ব্যক্তিস্বাধীনতা বলে যে একটা শব্দ আছে, এই শব্দের অর্থ আজো বোঝেনা এই তথাকথিত সুশীল সমাজের অনেকে। 'তুমি চুল ছোট রাখো কেন?', 'চুল বড় করবে কবে', 'চুল বড় করো', 'ছোটচুলে বিশ্রী লাগে দেখতে'- এমন অজস্র বাণী শুনে শুনে আমার জীবন অতিবাহিত হচ্ছে। 

 

সোশ্যাল মিডিয়ায় হ্যাশট্যাগ দিয়ে ব্লাক লাইফ ম্যাটার্স লিখে পোস্ট দেয়া মানুষজনও বাস্তবজীবনে কালারিজম করতে পিছপা হননা। একটা ফেইক লিবারেল ইমেজ তৈরি করে কি লাভ সোশ্যাল মিডিয়ায়? এই সমাজ একটা বিউটি স্ট্যান্ড করে দিয়েছে যেখানে অবশ্যই তোমাকে ফর্সা হতে হবে, চুল বড় থাকতে হবে – তবেই তুমি তাদের চোখে 'সুন্দর'।

কিন্তু আমার কাছে সুন্দরের সংজ্ঞা অন্যরকম, যিনি সুন্দর ভাবে ভাবতে পারেন, যিনি মানুষের জন্য কাজ করেন, অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননা;তিনি-ই আমার কাছে প্রকৃত 'সুন্দর'। 'তোমাকে ফর্সা হতে হবে', 'তোমার চুল গুলো বড় করতে হবে', 'তোমাকে সুন্দরী হতে হবে ' না বলে তো 'তোমাকে অনেক ভালো কাজ করতে হবে ', 'তোমাকে অনেক বড় হতে হবে ' ও বলতে পারতেন সবাই। 

 

আমি সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য কাজ করি, প্রায় একহাজার শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে পড়াশোনা শেখানোর পাশাপাশি কো কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটস নিয়েও শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত। কিন্তু এ উদ্যোগের জন্য সাধুবাদ পাবার থেকে 'তুমি এতো মোটা কেন' শুনেছি বেশি। আমার পরিচয় কি তবে আমার রূপে? সমাজের তথাকথিত বিউটি স্ট্যান্ড ভাঙ্গবে কবে? পরিবারের কাছ থেকেও শেইমড কিংবা কালারিজমের শিকার হয়ে কিঞ্চিৎ মন খারাপ হওয়া অস্বাভাবিক কিছুই না। আমারও হয়েছে। জন্মদাতা – জন্মদাত্রীর কাছেও এসব শুনে বারংবার মনে হয়েছে 'মোটা কিংবা কালো হয়েছি বলে কি আমি ব্যর্থ'। তবে আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি আমার পরিচয় আমার কর্মে – আমার রূপে না। 

 

সমাজের ভ্রান্ত নিয়মের তালা ভেঙে দেয়ার চাবি আমরা। কালারিজম কিংবা বডি শেইমিং এর যে অসুস্থ চর্চা চলছে, তা বন্ধ করতে হবে। আমার সৌন্দর্য আমার কর্মে, সুন্দর কাজের মাধ্যমে-ই আমি একজন সুন্দর মানুষ।

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ