Skip to content

৮ই মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বুধবার | ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অপূর্ণ

অনেক দিন ঢাকার বাইরে থাকাতে সবার সাথে যোগাযোগ রাখা সম্ভব হয়নি মিতার। তবুও শেষ বয়সে সেই সুযোগ হাতছাড়া করলো না। অবশেষে ছেলেদের অজুহাতে আবার ঢাকার বাসিন্দা হয়েই গেলো। তৌকির নিজের ব্যবসা চারদিকে ছড়িয়ে রেখে এতোকাল পরে একটি স্থানে থিতু হয়েছে মিতার ইচ্ছাতেই। জীবনের এই বাঁকে আরো একটু বিলাসী সময় কাটুক। বিলাসী বলতে সম্পর্কের বিলাসিতা যা এতোদিন কর্মব্যস্ততার জন্য হয়ে ওঠেনি। দিনে দিনে খোঁজখবর বাড়লো বন্ধু বান্ধবদের। এইতো সেদিন মিতার কলেজের বান্ধবী সোমার ছেলের বিয়েতে গিয়েছিল। সেখানেই দেখা হয়ে গেলো বহু আগের এক পরিচিত মুখ।

 

সোমাই পরিচয় করিয়ে দিল মিতাকে- এই যে দোলা আমার বিয়াইন। আর ও হচ্ছে মিতা আমার ভার্সিটি ফ্রেন্ড। ওকে দেখে মিতা একেবারে আঁতকে ওঠে। মিতা বলে- আমি কি আপনাকে চিনি? দোলা যদিও প্রথমটায় একটু ইতস্তত বোধ করে আমতা আমতা করে। দৃষ্টিশক্তি আরো প্রখর করার চেষ্টায় সময় নেয়। ইতি মধ্যে মিতা আবার বলে – না না ভাই বিব্রত হবেন না আমারই ভুল। আরো একজনের সাথে আপনাকে মিলিয়ে ফেলেছিলাম। সরি।দোলা সজল লাজুক নয়নে বলে- না না মিতাআপু আপনার ভুল হয়নি। সেই ছেলেবেলার স্মৃতি চাইলেও কি ভুলা যায়। পাথরে খোদাই হয়েই থেকে ঘোষে মেজে মুছে ফেলা যায় না। মিতা আর দোলা দুজনেই আবেগ আপ্লুত হয়ে ওঠে জড়িয়ে ধরে বহুক্ষণ দুজন দুজনকে। হৃদয় হৃদয়ের ছোঁয়ায় অনেক কথা আত্মস্থ করে নেয়। ভাষা কখনো কখনো নীরব শ্রোতা হয়ে রয়। দুজনে দুজনকে প্রতিশ্রুতিতে আশ্বস্ত করে অচিরেই আবার দেখা হবে কথা হবে। স্মৃতিরা দুরন্ত ঝোড়ো হাওয়ায় শ্রাবণ এনে দেবে। হারিয়ে যাওয়া কথা শুকনো বাসিফুলের মালা যদিও সুবাসিত গোলাপ হবেনা। তবু সেই শিউলি বকুল ঝরা অলিগলির পথটি রাজপথ হবার গল্প মিলেমিশে একাকার হবে। চোখের জল চোখেই সংবরণ করে হাসি মুখে সব আয়োজন সমাপন হলো।

 

বাসায় ফিরে মিতা আর স্থির থাকতে পারছে না। হারিয়ে যাওয়া দিলগুলোতে ফিরে যায়। তৌকিরও বাসায় নেই ট্যুরে গেছে। ছেলেমেয়েরা বাসাতেই। ওরা ওর বাবার স্বভাব পেয়েছে কোথাও মানে কোনো বিয়ে বা অন্য কোন অনুষ্ঠানে যেতে বললে বেঁকে বসবে। বলবে – তোমার বন্ধু তুমি যাও আমারা বোর হবো ওখানে পরিচিত কাউকেই পাবো না। মিতা জোড় করে না কোনো ব্যাপারে সবারই ব্যক্তি স্বাধীনতা আছে। সবার ইচ্ছা মতামতের দাম দেয় মিতা। ওরা যে একেবারে ঘরকুনো তাও তো নয়। নিজেদের বন্ধু বান্ধবের সাথে আড্ডা হৈচৈ সবই চলে। ওদের বাবা তৌকির সেই আগের তৌকির নেই। বিয়ের পরে একেবারে বদলে গেছে। মিতাকে নিয়ে যখন তখন কোথায়ও বেড়ানো বা যাওয়া হয়ে ওঠে না। মিতা ব্যস্ত থাকে সময় দেয় ছেলে মেয়ে দুটোকে। তৌকির সময় দেয় তার ব্যবসায়িক কাজে। সেলফ মেইড মানুষ তাকে কেউ হাত বাড়িয়ে টেনে তোলেনি। নিজের শ্রম অধ্যবসায় নিষ্ঠা তাকে পথ মসৃণ করে দিতে সাহায্য করেছে। এ যাবত যতটুকু তার অর্জন সবটুকুই নিজের কঠর শ্রম – ঘামে। দু:খ করে না মিতা জীবনে যাকে চেয়েছে তাকে পেয়েছে। ভালোবাসায় পরিপূর্ণ সংসার। মাঝে মধ্যে তৌকির ওদের নিয়ে বিদেশ ভ্রমণ করিয়ে নিয়ে আসে কিন্তু দেশে ওদের সাথে যাওয়া হয়ে ওঠে না। নিজের কাজে প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকতে হয়। 

 

তৌকিরকে না পেয়ে নিজের মধ্যে নিজেই আজ বিচরণ করে চলেছে মিতা সেই ছোটবেলার স্কুল জীবনের কথা দোলাকে চেনে সেই থেকে। চামিলিবাগ আর শান্তিনগরে ওদের দুজনের বাড়ি ছিল। দোলা অবশ্য এক ক্লাসের জুনিয়ার ছিল মিতার। তবুও ওদের বন্ধুত্ব ছিল গভীর। ওরা তখন নাইন টেনে পড়ে যখন একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। বন্ধুত্ব এতোটা গভীর হবার পেছনে কারণ ছিল দুজনই তৌকির আর মানিক দুই বন্ধুর প্রেমিক। ওরা দুজন নয়াপল্টলের বাসিন্দা ইউনিভার্সিটিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র। কৈশোর প্রেম ওদের মোহিত করে রেখেছিল। সেই শান্তিনগর নয়াপল্টনের মাঝে অলিগলির পথ ওটাই ছিল প্রেমের অভয়ারণ্য। ঐ পথে হেঁটে হেঁটে পথ চলা দুই যুগল প্রেমিক। কত কথা হাওয়ায় উড়িয়ে দেয়া লাজুক দৃষ্টিতে লুকোচুরি খেলা। কিছু কথা জমা করে খাতার পাতায় লেখা তাই হাতে হাতে দেয়া নেয়া। পায়রার পায়ে চিঠি অথবা মেঘের খামে চিঠি মেঘদূত ভালোবাসায় আত্মস্থ হওয়া। জীবনটা ছিল অখণ্ড ভালোবাসায় পূর্ণ এক রাজ্য। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ বদলে দেয় চিরাচরিত নিয়মের ধারাবাহিক জীবনের গল্প। নিজেদের অস্তিত্ব যখন হুমকিতে তখন রুখে দাঁড়াতে হয়েছে দেশের আপামর জনগণকে। সেই একাত্তরের বীভৎস রাতের কথা ভুলবার নয়। পাক হানাদারবাহিনী পৈশাচিক ভাবে সেই রাতে আক্রমণ চালায় বাংলার নিরীহ মানুষের ওপরে। নির্বাচনে জয়ী হয়েও বাঙ্গালী রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার উচ্চ আসনটি থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্রে পাকবাহিনীর এই নারকীয়তা। এক ইতিহাস নয় মাসের যুদ্ধ। জন্ম নতুন দেশ আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ। তৌকির ,মানিক ওদের সাথে আরো অনেক ঢাকার ছেলেরা সেই মার্চে শেষ এপ্রিল থেকে শহর ছাড়ছে। ঢাকা ছাড়বার আগে এক পলকের একটু দেখা হয়েছিল।

 

প্রথম ওরা ঢাকা ছেড়ে জিঞ্জিরা বুড়িগঙ্গার ঐ পাড়ে চলে যায়। ওখানে যখন অ্যাটাক হলো তারপর আস্তে আস্তে সংগঠিত হয়ে গ্রাম গঞ্জ পেরিয়ে পৌঁছেছে পশ্চিম দিনাজপুর। সেখান থেকে যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য সদলবলে ট্রেনিং নেয় মেলাঘর ক্যাম্পে । ট্রেনিং শেষে ঢাকার যত একশনে ওরা ক্র্যাকপ্লাটুন হিসেবে কাজ করেছে। গেরিলা যোদ্ধা হিসেবে যুদ্ধ করেছে।

 

তৌকির আর মানিকের বন্ধু পরিচিত জনের কাছ থেকেই জেনেছে মুক্তিযোদ্ধাদের, কথা মিতা আর দোলা। ভয়ে ভয়ে দিন যায়। নেই লেখা পড়ার পাঠ ঘরে বসে কেবল ভয়েজ অফ আমেরিকা, বিবিসি,আর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের খবর গান এম আর মুকুলের চরমপত্র শোনা। আশায় দিনগোনা কবে হবে সেই সকাল লাল সবুজের পতাকা হাতে সোনার ছেলেরা আসবে বলবে জয় বাংলা বাংলার জয়।

 

 

মাঝে একবার অবশ্য দেখা হয়েছে তৌকিরের সাথে মিতার। মনে আছে মিতার অক্টোবর মাসে শবেবরাতের রাত শেষে সকাল। একতলা বাড়ির ছাদে পায়চারি করছিল মিতা। মনের রাজ্যে জুড়ে কেবল ছেয়ে থাকা একটি মুখ সে তো তৌকির। ভাবছিল অলৌকিক ভাবেই যদি দেখা হয়ে যায় তার সাথে। বড় রাস্তার পাশে বড় একটি আমগাছ তার পাসে একটি মুদিদোকান। হায় আল্লাহ! কিভাবে ওর কল্পনা বাস্তবতা পেলো ভেবে পায় না। মনে মনে এই বলে আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া করে সারাটা রাত নামাজ দোয়া দরুদ পড়ার কারণে এই ফল পেয়েছে। ওর মনের ইচ্ছাপূরণ হয়েছে। তৌকির এদিকেই এ বাড়ি এই বাড়ির ছাদ চোখের ইশারায় তন্ন তন্ন করে খুঁজে চলেছে মিতাকে। যুগটা তো ছিল সনাতনী মোবাইল তো স্বপ্নেও ছিল না। মিতা দৌড়ে নেমে আসে রাস্তায় তৌকিরের কাছে। দেখা হলো কথা হলো জেনে নিলো মানিক ভাই ভালো আছে। তার সঙ্গী সাথীর কথাও জেনে নিলো। ভীষণ তাড়াহুড়ায় ছিল যে রিক্সাটায় সে এসেছি সেই রিক্সার সিটের নিচে কিছু আর্মস আছে। ধরা পড়লে আর রক্ষা নেই। এরই মাঝে আবার ফিরে গেছে মেলাঘর ক্যাম্পে।

 

দেখা হয়নি আরো বহুদিন। কথা হয় দোলার সাথে কত জল্পনা কল্পনা বাস্তবতার মুখরিত হবে কবে। স্বপ্ন বুননে পারদর্শী মিতা দোলারা আর ওদের মত আরো হাজার লক্ষ নারীর স্বপ্ন ভূলুণ্ঠিত হয়ে চলেছে। নানান খবরে আতংকিত দিবানিশি। রাত যেন মূর্তিমান দানব। বাড়ির পাশের সেই বড় রাস্তায় ট্যাঙ্ক এ বিকট বীভৎস শব্দ, অস্ত্র আর সৈন্যবাহী লরি, মেশিনগান মর্টারের গোলাবারুদ আগুন বারুদের গন্ধে চারিদিক কি এক দানবীয় সময়। শান্তিনগর পুলিশ-লাইনের অবস্থান তার পাশেই মিতাদের বাড়ি। এমনই এক ক্রান্তিকাল পার করেছে ওরা। সেই রাতে যদিও কোথায়ও কেউ পরিত্রাণ পেয়েছিল কি না ওদের জানা নেই। কেবল জেনেছে ক্ষুধার্ত বাঘের হাত থেকে বেঁচে আসার দুঃসহ এক কাহিনী। আতংকের এই ট্রমা মিতাকে বহুদিন তাড়া করে ফিরেছে। এই বুঝি এলো আবার সেই হায়নার দল। নিদ্রাহীন কত রজনী নীরবে কান্নার জলে বয়ে গেছে কে হিসেব রেখেছে তার!

 

যুদ্ধ চলছে পুরোদমে। এরই মাঝে কত যে দুঃসংবাদ ঘাড়ে করে বাতাস বয়ে আনে। নভেম্বরের মাঝামাঝি এক সকাল গত সন্ধ্যারাতের দুঃসংবাদ দিয়ে যায়। স্বপ্নগুলো আরশি হয়ে চুরচুর মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। সাভারের কাছে ঢাকা – আরিচা সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ভায়াডুবি ব্রিজ ছিল পাক সেনাদের আশ্রয়স্থল। ভায়াডুবি ব্রিজ উড়িয়ে দিতে পারলে পাক সেনাদের চলাচল বিঘ্নিত হবে। সে কারণেই মানিকের গেরিলা দলটি নিয়ে অপারেশনে নামে। সেই রাতেই পাক হানাদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধে অনেকে গুলিবিদ্ধ হয় মানিকের বুকে গুলি লাগে। সেখানেই গুরুতর আহত হয়ে শহীদ হয়।

 

বাতাসের আগে খবরটি জানাজানি হয়ে যায় স্বজনের ঘরে ঘরে। কান্নার রোল সংক্রমিত হয়ে দোলাকে স্থির থাকতে দেয় না। কি করবে কি করা উচিত পাগল প্রায় দোলা কখনো কখনো অচেতনে কাটায়। সান্ত্বনা দেবার ভাষা ভুলে বোবা পাথর যেন মিতাও। এই ভয় কি ওর ছিল না। কখন কোন সংবাদের সন্মুখীন হতে হয়।

 

কি সময় কেটেছে ওদের। দেশ স্বাধীন করে ফিরেছে ঘরের ছেলে। কোনো কোনো ঘর কোনো মায়ের কোল খালি হয়ে গেছে। অনেক হারিয়ে পেয়েছি যে রত্মভাণ্ডার মা মাটি এই দেশ। পেয়েছি লাল সবুজের পতাকা। আমাদের অহংকার।

 

অনেক দিন তৌকির মানিকের বাড়ি যায় নি। সেই ছোটবেলার বন্ধু আত্মার আত্মীয় মানিক নেই। বাবা মায়ের একমাত্র পুত্রসন্তান। তৌকির আর মানিক ছিল ছায়া সঙ্গী। হরিহর আত্মা তৌকিরকে ছাড়া মানিকে কল্পনা করা যায় না ,মানিকে ছাড়া তৌকিরের কল্পনা করা যায় না। মানিকের বাবা মা বোনদের কাছ থেকে পালিয়ে বেড়িয়েছে নিজেকে অপরাধী মনে হয়েছে। কিভাবে সে তার বন্ধুকে হাতছাড়া করলো নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রয়ে যায়। মানিকের প্রেমিক দোলার সাথেও হয়নি যোগাযোগ। তাদের দিকে তাকালেই ওর মন ভেঙ্গে গুড়িয়ে যায় নিজেকে স্থির রাখতে পারে না। দূরে দূরে এতো কাল অচেতন মনে স্থায়ী ভাবেই তাদের বসবাস। দুদিন পরে তৌকির ফিরেছে ট্যুর থেকে মিতার মন আনচান কখন তৌকিরকে বলবে দোলার কথা কখন ওর সংসারে মিতা – তৌকির অতিথি হয়ে যাবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হয়ে গেলো ঐ বাড়িতে ঘুরে আসার আয়োজন। তৌকির এক্সাইটেড মিতারও শান্তি  নেই যতক্ষণ না দোলার বাড়ি পৌঁছাচ্ছে। মিতা আঁচলে বেঁধে নিলো যত কুঁড়িয়ে পাওয়া স্মৃতির ফুল তৌকির মনের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে রাখলো গলিপথের অবুঝ প্রেমের শিশির ভেজা ফুল তোলা রুমাল। যা দিয়েছিল যুদ্ধে যাবার বেলায় মানিকের হাতে দোলা।

 

দুচোখ জুড়িয়ে আজ ওরা দেখছে ওর বন্ধু মানিকের প্রেমিক দোলাকে। আহা এমন তো ভুল পথের পথিক হবার কথা ছিল না। তবু সময় গড়িয়ে নিয়ে যায় অমানিশাকাল ঘুরে ঘুরে পূর্ণিমা তো আসবেই। দোলার আন্তরিকতায় আপ্লুত ওরা। অনেকক্ষণ কথা হয়। কথার ছলে কথাগুলো পিচ্ছিল অলিগলির পথটুকু মাড়িয়ে আসে। চোখ ঝাপসা হয়ে আসে কখনো আঁচল কখনো রুমেলের আশ্রয় খোঁজে অবাধ্য জল।

 

মিতার কাছ ঘেঁষেই একটু আবদার করে দোলা বলে – মিতা আপু, তৌকির ভাইকে একটু ছুঁয়ে দেখি। মিতা কি বলবে ভেবে না পেয়ে অতি উৎসাহিত হয়ে দাঁড়িয়ে পরে বলে – এসো তোমার বড় ভাই তাকে ছুঁতে তোমার বাঁধা কোথায়? তৌকিরও অন্যমনস্ক হয়ে চলে যায় মানিকের কাছে দুচোখে জলে ভরে যায়। কতক্ষণ দোলা তৌকিরের হাত ধরে দাঁড়িয়ে থাকে মাথা নিচু করে স্মৃতির পথে হেঁটে আসে আর বলে- তৌকির ভাই তোমার গায়ে মানিকের শরীরের গন্ধ লেগে আছে। সেই ছোটবেলা থেকেই তোমাদের একসাথে পথ চলা। তোমার মাঝে আমার মানিক বেঁচে আছে।

 

তৌকির ছোট বোনের মত দোলাকে ভালোবাসে। স্মৃতির পাতায় ঝাপসা বর্ণ অপূর্ণতার অশ্রু ঝরায়।

 

দোলাকে কাছে টেনে মাথায় হাত বিলিয়ে দেয়। মিতা জড়িয়ে ধরে আদর করে দেয়।বড় নির্মম এই আর্তনাদ বুকের পাঁজরে কেবল জমা রাখে হাহাকার। কতটা কষ্টের বোঝা বয়ে কূলহীন জীবন নদীর পথ পার হতে হয়। সারা জীবন যে পাশে ছিল সেও জানবে না কোনো দিন কতটা আঘাতে ভালোবাসা হয়েছিল বহু খণ্ডিত।

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ