Skip to content

২রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বৃহস্পতিবার | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কবিতা

তোমার চিন্তার নদী
– আবুল কাসেম

বেগম রোকেয়া তোমার চিন্তার নদী
আরও বেগবান হয়ে কেমন জোয়ারে জোয়ারে
নারীর হৃদয়কূল ভরিয়ে দিচ্ছে
তোমার ‘সুলতানার স্বপ্ন’রা
কেমন পাখা মেলে আকাশে উড়ছে আজ।
তোমার ‘অবরোধবাসিনী’রা
বন্দিদশায় পড়ে নেই আর
তারা মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে,
কী জয়োল্লাস তাদের!

তুমি স্বর্গধামে বসে দেখছো নিশ্চয়ই
তুমিও হৃদয়োল্লাসে বেশ আনন্দ করছো
তুমি ছিলে নারীমুক্তির বহ্নিশিখা
ধর্মান্ধ আর কাঠমোল্লাদের উলুখড় চিন্তার জঞ্জাল 
তুমি পুড়িয়ে দিয়েছ 
মনের খুশিতে তুমি জ¦ালিয়ে দিয়েছ
বেগম রোকেয়া
তোমাকে অজ শ্রদ্ধাঞ্জলি আমার।

কত দূর হাঁটলে পরে
– কাজী সুফিয়া আখ্তার   

বলতে পারো, কত দূর হাঁটলে পরে
পৃথিবীটা অন্যরকম হবে?
ঝর্ণাধারার মত নারী ছুটে বেড়াবে
পাহাড় হতে সমতলে নির্ভয়ে
কুয়াশার চাদর মুড়ে শুয়ে থাকবে
কলই শাকের ক্ষেতে কিংবা রমনা পার্কে
ফুলের স্পর্শে কলকল করে হেসে উঠবে
নক্ষত্রের মত দিবে সে জ্যোতি
সম্মান কুড়াবে অঞ্জলি ভরে ।
বরণীয় নারী বরণীয় স্বদেশ
সকলের শান্তিতে ছড়ায় আবেশ
বিশ্ব চরাচর জুড়ে
কল্পস্বপ্ন বাস্তব হয়ে ঘুরবে কবে?

 

হাত পা ও চোখ
– হাসানআল আব্দুল্লাহ

হাত থাকে না হাতে।
কি আর ক্ষতি তাতে!
হাতের কাজে বরাত এলে
উঠতে পারি জাতে।
হাত থাকে না হাতে।
পা-ও থাকে না পায়ে
উলটে পড়ে কাতর আমি
চৈতী ঢেলার ঘায়ে।
পা’কে এখন শক্ত রাখা
ভীষণ রকম দায়-এ।
পা-ও থাকে না পায়ে।
চোখ কি আছে চোখে?
অনেক কথা এই বিষয়ে
বলছে নানান লোকে।
কার বা এমন সময় আছে
ওদের ভাষা রোখে।
চোখ থাকে না চোখে।

 

আমি তিনবেলা বৃষ্টিতে ভিজি
-রঞ্জনা বিশ্বাস

আমি তিনবেলা বৃষ্টিতে ভিজি যেভাবে জ্যোৎস্নার
কামার্ত চুম্বন গায়ে মেখে শ্রাবণের ঘাসগুলো ঘুমায় এবং
যেভাবে এক বিন্দু জলের জন্য তৃষ্ণার্ত চাতক
অগ্রাহ্য করে ডানার ক্লান্তি,
ঠিক সেইভাবে আমার স্বপ্নগুলো, আমার ইচ্ছেগুলো
মেদহীন মেঘের কাছে গচ্ছিত রেখে বৃষ্টি চেয়েছিলাম।
তাই এখন আমার চুলে বৃষ্টি,
শরীরে বৃষ্টি
মনে এবং স্মৃতিতে বৃষ্টি
আমার গল্পে এবং কবিতায বৃষ্টি
ঈর্ষায়, ঘৃণায় এবং প্রেমে বৃষ্টি।
আমি তিনবেলা বৃষ্টিতে ভিজি।
অথচ তুমি ভীষণভাবে তুমিহীন এক মানুষ,
যখন তখন বেখাপ্পা নীরবতায় মুখ ফিরিয়ে নাও,
আর আমাকে ভেজাও একরোখা বিবর্ণ বৃষ্টির জলে।

 

সিংহ, হরিণী ও আমি
– দ্বীপ সরকার

শাদা ও সোনালী পা’ড়ের হরিণী-  আমাকে দেখে দৌড়ে পালালো
আবার আসে, আবার পালায়

অথচ
সিংহ আমাকে চিনেছে ভালো, সাইডে ঝোলা ব্যাগ দেখে;
সিংহ কবিতা শুনতে চাইলে আমি শুনিয়ে দিলাম প্রেমের কবিতা
‘হিংস্রতা নয়, প্রেমিক হওয়া ভালো
মুখস্থ করো দিনভর আলো’

এমন কথোপকথন দেখে হরিণী সমুখে এসে মাথা নুয়ে বসে পড়ল
ঝোলা থেকে তাকেও একটা কবিতার বই উপহার দিলাম

আমি মানুষ এবং প্রাণী
হরিণী মানুষ নয় এবং প্রাণী
কবিদের কথা পশুরাও বোঝে, শোনে
কবিদের কথা কেবল মানুষ বোঝে না, মানুষ বোঝে না।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ