Skip to content

৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শনিবার | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিচ্ছেদের পরও সাবেকের অত্যাচার

বর্তমানে একধরনের অস্থিরতা মানুষকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে। আগের দিনে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও একটি পরিবার নিয়ে মানুষ সুখে জীবন পরিচালনা করতে পারলেও এখন বিষয়গুলো জটিল। খেয়ে-পরে বাঁচা যেমন কঠিন, তেমনই পরিবারের মধ্যে শান্তি-সুখের সম্পর্কও শিথিল হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত চোখে পড়ছে বিভৎস ঘটনা। দাম্পত্য সম্পর্কের ইতি যেমন ঘটছে, তেমনই বাড়ছে নানামাত্রিক জটিলতাও। বিচ্ছেদকে কেন্দ্র করে নারীদের জীবনে জটিলতা বাড়ছে। এক্ষেত্রে জটিলতা বৃদ্ধিতে প্রাক্তন প্রেমিক বা স্বামী কেউই বাদ পড়ে না। কিন্তু বিচ্ছেদের পরও কেন সাবেকের অত্যাচার-নিপীড়নের মুখে পড়তে হচ্ছে নারীকে?

সমাজে দাম্পত্য সম্পর্ক গড়ে ওঠার দুটি বিশেষ প্রথা বা রীতি লক্ষণীয়। প্রথমত, সামাজিক-পারিবারিকভাবে প্রস্তাবের বিয়ে; দ্বিতীয়ত, প্রেম থেকে পরিণয়। কিন্তু এই দুই ক্ষেত্রেই নানারকম আলাপ-আলোচনা, দেখাদেখি, অনুষ্ঠান বিভিন্ন সামাজিক রীতিনীতি মেনে দাম্পত্য সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অনেক ক্ষেত্রে শুধু পরিবারের পছন্দ অনুযায়ী নারী বা পুরুষ এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে বিয়েতে মত দেন। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে পাত্র-পাত্রীর ইচ্ছেকে গুরুত্ব দিয়ে তাদের জীবনযাপনকে সহজ করে তোলে। তবে বাংলাদেশে বর্তমানে এই দুই রীতিনীতি বিশেষভাবেই প্রচলিত। কিন্তু সমস্যা বাধে যখন দাম্পত্য জীবনে গিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মতের মিল হচ্ছে না বা বিভিন্ন রকম জটিলতাকে কেন্দ্র করে সম্পর্কের ছেদ ঘটছে।

মানুষের মত-পথ ভিন্ন হওয়ায়, সমস্যা হওয়াও অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। তবে, যখন বিচ্ছেদ কার্যকর হয়ে যাচ্ছে তখন দেখা যায় নানারকম জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রাক্তন প্রেমিক বা প্রাক্তন স্বামীর কাছ থেকে নারীরা হুমকি-ধামকি, ব্লাকমেইলিংয়ের শিকার হচ্ছেন। বিচ্ছেদ ঘটা খুব একটা ইতিবাচকভাবে আমাদের সমাজ আজও গ্রহণ করতে পারেনি। নারী-পুরুষ উভয়ই যদি সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে না পারে। তবে, একছাদের নিচে থেকে শুধু সমাজের লোক দেখানোটাই হয়। ভালোমতো বেঁচে থাকা হয় না।

তাই সাবেকের অত্যাচারের সম্মুখীন হলে নারীদের আইনের আশ্রয় নেওয়া জরুরি। সাইবার অপরাধ-সমস্যার সম্মুখীন হলে নারীকে আইনের সহোযোগিতা নিতে হবে।

কিন্তু এসব সমস্যা সমাধান খুঁজতে নারী-পুরুষ যখন বিচ্ছেদের পথে হাঁটছেন, সেটাকে কেন্দ্র করে একশ্রেণির পুরুষ নারীকে নানাভাবে উত্যক্ত করে তুলছে। ফলে নারীরা মানসিকভাবে চাপের মুখে পড়ছেন। সেক্ষেত্রে পরিবারেরও সাপোর্ট বরং নিপীড়িত-নির্যাতিত নারীর বিপক্ষেই থাকে।

সন্তানের মঙ্গল কামনায় যে বাবা-মায়ের একমাত্র ধর্ম, তারাও সামাজিক সম্মানের দায় দিয়ে নারীকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। আর পুরুষ হিসেবে সমাজের বাহবা কুড়িয়ে অপরাধীই দিনশেষে জয়ের হাসি হাসে। প্রেম ভেঙে গেলে যেমন নারীর ব্যক্তিগত ছবি বা তথ্য শেয়ারের হুমকি দিয়ে পুনরায় সম্পর্ক স্থাপনের হুমকি দেওয়া হয়, তেমনি সাবেক স্বামীর পক্ষ থেকেও এই ধরনের সমস্যার সৃষ্টি আজকাল অহরহ ঘটছে। যেন নারীর জীবনযাত্রা আরও জটিল হয়ে উঠেছে। নারীরা মানসিকভাবে টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছেন। তবে নারীদের সচেতন হওয়া জরুরি। যেন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়িয়ে চলা যায়।

সমস্যা থাকলে সমাধানও আছে। সেই সমাধান অনেক সময় মনে হতে পারে সামাজিক কিছু সমস্যার সৃষ্টি করবে কিন্তু ব্যক্তি যখন নিরুপায়, তখন সমাধানের পথে তাকে হাঁটতেই হবে। তাই সাবেকের অত্যাচারের সম্মুখীন হলে নারীদের আইনের আশ্রয় নেওয়া জরুরি। সাইবার অপরাধ-সমস্যার সম্মুখীন হলে নারীকে আইনের সহোযোগিতা নিতে হবে। একইসঙ্গে পরিবার থেকেও ভুক্তভোগী নারীকে সর্বোচ্চ সমর্থন দিতে হবে। নতুবা জীবন হুমকিতে পড়তে পারে।

অনন্যা/এসএএস

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ