Skip to content

৮ই মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বুধবার | ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কন্যাশিশুর আত্মবিশ্বাস বাড়াতে কিছু পদক্ষেপ

নারী পুরুষ এর বৈষম্যে শুরুটা হয় সেই জন্মলগ্ন থেকেই। সাধারণত ছেলেশিশুর জন্মের পর বাধ ভাঙা খুশির জোয়ার চলে আসে পরিবারে। কিন্তু কন্যা সন্তান জন্মের পর পরিবারের সদস্যদের মুখে দেখা যায় কালো মেঘের ঘনঘটা। আর এভাবেই প্রায় প্রতিপদে বৈষম্যের শিকার হয়ে দিনকে দিন কন্যাশিশুর আত্মবিশ্বাস তলানিতে গিয়ে পৌছায়। আমাদের সামাজিক চক্রটাই এমন যে তার জন্য কন্যাশিশুর সামাজিকীকরণে দরকার একটু বাড়তি যত্নের। তাই কন্যাশিশুর আত্মবিশ্বাস বাড়াতে ঘর থেকেই নিতে হবে কিছু পদক্ষেপ।

শুরুটা হোক ছোটবেলা থেকেই :

ছোটবেলা থেকেই দরকার এই বাড়তি যত্নের। আমাদের সমাজের একটি প্রচলিত ভুল ধারনা হচ্ছে ‘মেয়ে বড় হোক তারপর দেখা যাবে’। এমন ধারনা থেকে বাইরে আসতে হবে। এতে ধীরে ধীরে শিশু মানিয়ে নেয়া শিখবে এবং বড় হতে হতে যেকোনো অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে নিজেকে সামাল দেয়া শিখবে।

সরাসরি না বলবেন না :

স্বভাবতই শিশুদের মনে ঘুরপাক খায় অদ্ভুত অদ্ভুত চিন্তা ভাবনা। কিন্তু কখনোই তার ইচ্ছেকে ছোটো করে দেখবেন না। হোক সে যতই অদ্ভুত। সরাসরি না বলাতে শিশুর উপর মানসিক চাপ পরতে পারে। যার থেকে তার মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে প্রবল। তাই তার সমস্ত ইচ্ছেকে প্রাধান্য দেয়ার চেষ্টা করুন।

নেতিবাচক মন্তব্য থেকে দূরে রাখুন:

শিশুর সামনে তার শারীরিক গঠন বা তার কোনো কাজ নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করলে তা তার মানসিক বিকাশে বাঁধা সৃষ্টি করতে পারে। তাই তাদের সামনে এধরনের কোনো অযাচিত মন্তব্য করা যাবেনা। যেহেতু আমাদের সমাজে এধরণের মন্তব্যের প্রবণতা খুব বেশি দেখা যায়৷ তাই যারা এধরণের মন্তব্য করবে তাদের থেকে শিশুকে দূরে রাখুন এবং নিষেধ করুন এ ধরনের মন্তব্য করতে।

সমাজের প্রত্যাশার জালের বাইরে রাখুন:

আমাদের সমাজ আমাদের চারপাশে এক অদৃশ্য প্রত্যাশার জাল বিছিয়ে রেখেছে। যে জালে প্রতিনিয়ত জরিয়ে পরছে হাজারো মেয়ে। তাই কন্যাশিশুর আত্মবিশ্বাস বাড়াতে চাইলে শুরু থেকেই এ অদৃশ্য জালকে এড়িয়ে চলতে হবে। সমাজের এমন কোনো কিছুই তার মনোজগতে প্রবেশ করতে দেয়া যাবেনা।

মানসিক চাপ প্রয়োগ করা যাবেনা:

আমাদের সমাজে সবথেকে চলমান ট্রেন্ড হলো সন্তানদের নিয়ে প্রতিযোগিতা তৈরি করা। অনেক অভিভাবকই সুযোগ পেলে নিজের শিশুদের উৎসাহ দিতে থাকেন অন্যের সামনে কিছু করে দেখানোর। এতে অন্যের বাচ্চার থেকে তার সন্তানকে কয়েক-ধাপ এগিয়ে রাখবে বলে মনে করেন তারা। একজন গাইলো তো আরেকজনকে ভালো নেচে দেখাতে হবে। এতে শিশুর চেহারায় খুশি খুশি ভাব দেখা গেলেও তার আত্মবিশ্বাসে কিন্তু চিড় ধরবে। তাই শিশুকে এমন কোনো মানসিক চাপ প্রয়োগ করা যাবে না।

উন্মুক্ত থাক একগাদা অপশন :

শিশু আঁকতে পারছেনা তাও হাতে পেনসিল ধরিয়ে দিয়ে জোর করে আঁকতে বলা যাবে না। জোর করে মাইক হাতে দিয়ে গান করতেও বলা যাবেনা। তার সামনে রাখতে হবে অজস্র অপশন এবং পছন্দের দায়িত্ব দিতে হবে অবশ্যই শিশুকে।

তথাকথিত সমাজের ফাঁকফোকরে নিজের কন্যাসন্তানের আত্মবিশ্বাস হারিয়ে যেতে না দিয়ে খুব ছোটবেলায় এসব পদক্ষেপ নিয়ে তার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলুন। এতে করে তার আত্মবিশ্বাস যেমনি বাড়বে, সুনিশ্চিত হবে ভবিষ্যতে এগিয়ে চলা।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ