Skip to content

৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শনিবার | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বলিউডের এক সাহসী অভিনেত্রী জিনাত আমান!

বলিউড অভিনেত্রী জিনাত আমান। যাকে বলা হয় বলিউডের ফ্যাশন আইকন। বলিউডে তার হাত ধরে এসেছে অনেক পরিবর্তন। যখন ধরাবাঁধা নিয়মে চলতে হতো বলিউড অভিনেত্রীদের তখন বাধা ভেঙে স্বেচ্ছায় সাহসী পদক্ষেপ নিতেন তিনি। ১৯৭০-এ পা রেখেছিলেন বিনোদন জগতে। তবে বলিউড ফ্যাশনের আইকন এই নারীর ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ভিন্ন এক জগতে। সাংবাদিক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন এই অভিনেত্রী।

সাংবাদিক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করলেও হঠাৎই ঘুরে যায় মোড়। ১৯৭০ সালে হন মিস এশিয়া প্যাসিফিক। এরপরই নাম লেখান বিনোদন জগতে। জীবনের চলার পথের মোড় ঘুরিয়ে নিলেও খুব সহজে আসেনি সফলতা৷ ক্যারিয়ারের শুরুতেই ভর করেছিল ব্যর্থতা। বলিউড যাত্রার শুরুতেই হোঁচট খেয়েছিলেন তিনি। গোড়ার দিকের দুটি ছবিই ব্যর্থ। সাড়া পায়নি বক্স অফিসে। এরপর একটা সময় ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়ে নিজেকে থামিয়েও দিতে চেয়েছিলেন এই অভিনেত্রী।

কিন্তু এরপর আসে একটা ফোন কল। যাতে বদলে গিয়েছিল তার জীবন। জিনাত হাজির হলেন ‘হরে কৃষ্ণ হরে রাম’ সিনেমাতে। সহ-শিল্পী তখনকার সুদর্শন নায়ক দেব আনন্দ। এই ছবির মাধ্যমেই দেখেছিলেন সফলতার প্রথম সূর্য। পেয়েছিলেন ‘তারকা’ হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ। আর ডি বর্মণের সুরে ‘দম মারো দম’ গানে নেচে হইচই ফেলে দেন জিনাত আমান। ওই সময়ের সে গান বর্তমান প্রজন্মের কাছে আজও যেন সমান জনপ্রিয়। ওই সময়ের সাহসী চরিত্রগুলোতে অভিনয় করতেও তিনি পিছ-পা হননি।

এরপর শুরু হয় বলিউডে সফলতার গল্প লেখা। শুধু দুর্দান্ত অভিনয়ই নয় তিনি বলিউডে এনেছিলেন পশ্চিমা ফ্যাশনের ছোঁয়া। তখনকার দিনের বলিউড নায়িকাদের টিপিক্যাল পোশাক ঝেড়ে ফেলেছিলেন। তার হাত ধরেই বলিউডে যোগ হয়েছিল ফ্যাশনের নতুন মাত্রা। বলিউড নায়িকাদের একঘেয়েমি ইমেজ ঝেড়ে ফেলে নতুন ফ্যাশন স্টেটমেন্ট রচনা করেছিলেন জিনাত। তিনি দেখিয়েছিলেন পশ্চিমা পোশাকেও অভিনেত্রী হওয়া যায়। ওই সময়ে তিনি যতটা খোলামেলা পোশাকে সাহসী অভিনয়ের স্বাক্ষর রাখেন, তা রীতিমতো চর্চার বিষয় ছিল।

৫০ বছরের ক্যারিয়ারে তার ঝুলিতে রয়েছে ৮০ টিরও বেশি ছবি। জিনাত আমান অভিনীত ছবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হিট ছবি হলো, আজনবি, চোরি মেরা কাম দোস্তানা, তকদির, দিল তো দিওয়ানা হ্যায় ইত্যাদি।

মুম্বাইয়ের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন জিনাত আমান। তারপর লস অ্যাঞ্জেলসের সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানে পড়াশোনা শেষ করে ভারতে এসে সাংবাদিকতায় যোগ দেন। সাংবাদিকতা করার সময়েই মডেলিং দুনিয়ায় পা রাখেন তিনি।

নিজের ব্যক্তিগত জীবনে খুব একটা সুখী ছিলেন না এই অভিনেত্রী। বিয়ে করেছিলেন সঞ্জয় খানকে। কিন্তু মাত্র ১ বছরের মাথায় ভেঙে যায় সংসার। এরপর ভুগতেও হয়েছিল তাকে। মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন তিনি। এমনকি শোনা যায়, বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর হোটেলে ডেকে শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছিলেন সঞ্জয়।

কিন্তু ব্যক্তিগত, পেশাগত জীবনে বহু যুদ্ধ লড়ে দিন শেষে সফলতা নামের সোনার হরিণটির দেখা পেয়েছেন তিনিই৷ বরাবরই তথাকথিত নিয়ম ভেঙে এগিয়েছেন সাবলীলভাবে। ওই সময়ে বিনোদন জগতে আশা মাত্রই স্টাইল আর ফ্যাশনের নতুন সংজ্ঞা দিয়েছিলেন তিনি।

অনন্যা/জেএজে

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ