গল্পটি কবি আপুর
ছোট বেলায় যিনি ছিলেন চঞ্চল প্রকৃতির, বিভিন্ন খেলাধুলা আর গাছে উঠতেই ব্যস্ত থাকা মানুষ, তিনি পরবর্তী সময়ে উদ্যোক্তা হয়ে উঠবেন, তা ভাবেননি কখনো। শারমিন আলম ওরপে কবি আপুর ইচ্ছে ছিল লেখাপড়া করে চাকরি করার। কিন্তু হয়ে ওঠেন উদ্যোক্তা। এই মানুষটি নিজ স্বপ্নকে ছুঁতে তৈরি করেছেন স্বপ্নছোঁয়া।
তার উদ্যোগের শুরুটা হয় হাতের কাজের থ্রি-পিস, বোরখা, বিছানার চাদর এসব দিয়ে। এর পাশাপাশিই তিনি নতুন একটি উদ্যোগ শুরু করেছিলেন তিনি।
লেখালেখি করতে শারমিন আলম বরাবরই পছন্দ করেন। নিজের কথাগুলোকে নিজের মতো করে লিখতে তার ভালো লাগে। তার এই ভালো লাগা থেকেই তিনি নতুন কিছু করার চেষ্টা করেছেন। নিজের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে কিছু করার তাগিদ থেকেই তিনি নিজের লেখা দিয়ে শো-পিজ তৈরি করার উদ্যোগ শুরু করেছিলেন।
শারমিনের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্পটা শুরু হয় ২০১৯ সাল থেকে। উদ্যোগের শুরুটা হয় অফলাইনেই, কিন্তু করোনাকালীনে উই-য়ের সঙ্গে যুক্ত হন শারমিন। তিনি তার বান্ধবীর থেকে উই সম্পর্কে জানেন। এরপরই তার মনে কৌতূহল তৈরি হয় উই আসলে কী? আর এই কৌতূহল থেকেই যুক্ত হন উইয়ের সঙ্গে। যুক্ত হওয়ার পরে সবার নিজের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে নতুন কিছু করার চেষ্টা করেন। তার থ্রি-পিস মনিপুরী শাড়ির ব্যবসার পাশাপাশি নতুন কী করা যায়, সেটা চিন্তা করে নিজের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে নিজের লেখাটাকেই ফোকাস করেছিলেন।
উইতে সবার কাছে পরিচিত কবি আপু বা লেখিকা আপু শারমিন আলম। তাই নিজের লেখা দিয়ে তৈরি করা শো-পিজের জন্য প্রশংসিত হয়েছেন সবার কাছে। শুধু প্রশংসা নয় নিজ পণ্যের জন্য পরিচিতও হয়েছেন সবার কাছে।
শারমিনের লেখার প্রশংসা থেকেই তার এই উদ্যোগ। আর এই উদ্যোগের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিলেন উই পরিবারের সবাই। উইয়ে করা তার পোস্ট গুলো সবার জন্য অনুপ্রাণিত, সবাই অনেক কিছু জানতে পারে এবং মনকে ছুঁয়ে যায় এই ধরনের কথা থেকেই তিনি এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
শারমিনের মানসিক সহযোগিতা বা মনোবলের জায়গাটার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, তার পারিবারিক সহযোগিতা ছিল না। তার স্বামী একজন প্রবাসী। আর প্রবাসী স্বামীর সংসার বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়েই কাটে সবসময় কোনো না কোনো সমস্যা থেকেই যায়। পারিবারিক সমস্যা, শ্বশুরবাড়ি, সমাজ সবকিছু মিলিয়েই ছিল নানা প্রতিবন্ধকতা। তাই ব্যবসা শুরু করার সময় কাউকে না জানিয়েই শুরু করা হয়। কাউকে জানালে সেটা হয়তো সবাই ভালোভাবে নেবে না তাই নিজের তাগিদে সন্তানের শিক্ষকের কাছে ঋণ নিয়ে ঋণের টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করে। এরইসঙ্গে শুরু হয় তার উদ্যোগযাত্রার।
পরবর্তী সময়ে বছর পরিবারের সবাই বুঝতে পারেন শারমিন যা করছেন, ভালো করছেন। তখন তারা আর কিছু বলতেন না।
নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদ থেকেই ব্যবসা শুরু করেন শারমিন। উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করার বিষয়ে নতুনদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ঝোঁকের বসে হোক বা নিজের প্রয়োজনে হোক, উদ্যোক্তা হওয়ার পর প্রত্যেকের উচিত নিজের মেধা খাটিয়ে কিছু করা। নিজের লক্ষ্য স্থির করা এবং নিজের আত্মবিশ্বাস ধরে রাখা।
অনন্যা/এসএএস