রাত জাগলে হতে পারে যেসব ক্ষতি
আগেকার দিনে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না, টেলিভিশন, ল্যাপটপ, মোবাইলফোন, ইন্টারনেট নামক জিনিসের কোনো অস্তিত্ব ছিল না। মানুষ তখন দিনের আলো নিভে যাওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ঘুমের প্রস্তুতি নিতো। আবার পরদিন সকালে মোরগ ডাকার আগেই তাদের ঘুম ভাঙতো। আজকাল অবশ্য মানুষ মোরগ ডাকার কিছুক্ষণ আগেই ঘুমোতে যায়। রাত জেগে চলে প্রয়োজনীয়, অপ্রয়োজনীয় নানা কাজ। কিন্তু এই রাত জাগার ফলে কি মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে তা অনেকেরই অজানা:
১. আয়ু কমে যাওয়া:
রাত জাগা যখন অভ্যাসে পরিণত হয় তখন চেষ্টা করেও তাড়াতাড়ি চোখে ঘুম আনা সম্ভব নয়। কিন্তু সকাল সকাল কাজের উদ্দেশ্যে ছুটতে তো হবেই। এতে দেখা যায় পর্যাপ্ত ঘুম আর হচ্ছে না। আর এর ফলেই কমতে পারে আয়ু। প্রায় দশ হাজার ব্রিটিশ ছাত্রের ওপর করা এক গবেষণায় দেখা গেছে যারা ৫ ঘণ্টা বা তার কম সময় ঘুমায়, তাদের হঠাৎ করে মৃত্যু হওয়ার আশঙ্কা সাধারণ মানুষদের তুলনায় কয়েক গুণ বেড়ে যায়।
২.ওজন বাড়ে:
অনেকেই নিয়মিত জিমে যান, শরীরচর্চা করেন, লোভনীয় খাবারের থেকে নিজেকে দূরে রাখেন তবুও ওজন যেন কোনোভাবেই কমতে চায় না বরং দিনের পর দিন বাড়তেই থাকে। আপনি হয়তো বা ভাবছেন এমনটা কেন হচ্ছে। কারণ হতে পারে আপনার রাত জাগা। ঘুম যত কম হবে ক্ষুধা তত বৃদ্ধি পাবে আর তার সঙ্গে ওজনও।
৩. ত্বকের সৌন্দর্য হ্রাস পায়:
ত্বকের সৌন্দর্য বজায় রাখার জন্য ঘুম অত্যন্ত উপকারী। দিনের পর দিন ঠিক মতো ঘুম না হলে কর্টিজল নামক স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যেতে শুরু করে এবং কোলাজেনের মাত্রা কমতে শুরু করার কারণে সৌন্দর্যও হ্রাস পায়। টানা কয়েকদিন ঘুম কম কিংবা অনিয়মিত ঘুম হলে ত্বকের লাবণ্য চলে যায়, চোখের নিচের ত্বক কালো হয়ে যায়।
৪. মানসিক অশান্তির সৃষ্টি হয়:
মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্যও ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুমের সমস্যার কারণে মস্তিষ্কের অন্দরে ফিল গুড হরমোনের ক্ষরণ কমে যেতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ডিপ্রেশন ও অ্যাংজাইটির মতো সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
৫.রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়:
ঘুমের সঙ্গে শরীরের সুস্থতার একটি বড় যোগসূত্র রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত রাত জাগেন তাদের হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, শারীরিক স্থূলতা এমনকি স্ট্রোকের আশঙ্কা বেশি থাকে। এছাড়া, নানান ধরনের ছোট-বড় রোগের প্রকোপ দেখা দিতে পারে রাত জাগার ফলে। কারণ রাত জাগলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে।
অনন্যা/ জেএজে