Skip to content

২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শনিবার | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে গ্রহে কাচের বৃষ্টি হয়

সৌরজগতের বাইরের অনেক তথ্য আমাদের অজানা কল্পনা করুন, এমন একটি গ্রহ যেখানে আকাশ থেকে ঝরে পড়ে কাচের বৃষ্টি। মহাবিশ্বে এমনই একটি বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত রয়েছে, যা আমাদের পরিচিত পৃথিবীর চেয়েও সম্পূর্ণ ভিন্ন এক জগতের ইঙ্গিত দেয়। কাচের বৃষ্টি শুধুমাত্র বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীতে নয়, বাস্তবেও এক বিশেষ গ্রহে ঘটে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন। এটি এক অসাধারণ মহাজাগতিক ঘটনা, যেখানে অত্যন্ত তীব্র তাপ ও বাতাসের গতির কারণে গ্যাসীয় কাচের ফোঁটা ঝরে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণাপ্রতিষ্ঠান নাসার গবেষকেরা জানিয়েছেন, তাঁরা প্রথমবারের মত কোনো ভিনগ্রহের সত্যিকারের রং জানতে পেরেছেন।

গবেষকেরা জানিয়েছেন, হাবল টেলিস্কোপ ব্যবহার করে তাঁরা পৃথিবীর মতো গাঢ় নীল বর্ণের এ গ্রহটির সন্ধান পেয়েছেন। গবেষকেরা বলছেন, যে গ্রহে কাচের বৃষ্টি হয়, সেটি হল এইচডি ১৮৯৭৩৩বি। এই গ্রহটি আমাদের থেকে প্রায় ৬৪ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত এবং এটি একটি “হট জুপিটার” হিসেবে পরিচিত। এইচডি ১৮৯৭৩৩বি-র দিনকালীন তাপমাত্রা প্রায় ৯৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১৭০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট) পৌঁছে যায় এবং সেখানে হাওয়ার গতিবেগ প্রায় ১১,০০০ কিমি/ঘন্টা (৫,০০০ মাইল/ঘন্টা) পর্যন্ত হতে পারে। এই অস্বাভাবিক আবহাওয়ার কারণে, গ্রহটি থেকে কাচের বৃষ্টি হয়, যা পাশের দিকে পড়ে কারণ বাতাসের শক্তিশালী গতি তা সৃষ্ট করে।

এছাড়া, এই গ্রহের বায়ুমণ্ডলে হাইড্রোজেন সালফাইডের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে, যা পচা ডিমের গন্ধের জন্য দায়ী। এটি একটি নতুন আবিষ্কার, যা আমাদের গ্রহের গঠন এবং রসায়ন সম্পর্কে আরও বেশি তথ্য দেয়।

এইচডি ১৮৯৭৩৩বি-র গতিবিধি খুবই দ্রুত, এটি তার নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করতে মাত্র দুই পৃথিবী দিন নেয়, এবং এটি নক্ষত্রের প্রতি ১৩ গুণ কাছাকাছি অবস্থিত, যা মের্কারি থেকে আমাদের সূর্যের দূরত্বের চেয়েও কম।

এর আগে গবেষকেরা জানিয়েছিলেন, আমরা যাকে শুকতারা বলে জাকি সেই শুক্রগ্রহে থেমে থেমে ধাতব বৃষ্টি বা বাতব তুষারপাত হয়। সেখানে তুষারের মতো ঝরতে থাকে সিসা ও বিসমাথ।’ গবেষকেরা ধারণা করেন, শুক্রগ্রহের এ তুষার তৈরি হয়েছে লেড সালফাইড ও বিসমাথ সালফাইড থেকে। যুক্তরাষ্ট্রেরর মহাকাশ গবেষণাপ্রতিষ্ঠান নাসার ১৯৮৯ সালে শুক্রগ্রহের ম্যাগেলান মিশনের তথ্য ব্যবহার করে গবেষকেরা শুক্রগ্রহের ধাতব তুষার থাকার বিষয়টি ধারণা করছেন। ধাতব তুষারপাত বা কাচ-বৃষ্টি কি সম্ভব? যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ব্রুস ফেগলি হাফিংটন পোস্টকে এ বিষয়ে জানিয়েছেন, পৃথিবীর তুলনায় অন্যান্য গ্রহপৃষ্ঠ ও বায়ুমণ্ডল অত্যন্ত উত্তপ্ত থাকে। সেখানকার আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত ধাতব যৌগ বায়ুমণ্ডলের শীতল অঞ্চলে ঘনীভূত হয় এবং ভুপৃষ্ঠের ওপর তুষারের মতো পড়তে থাকে।

সৌরজগতের বাইরের অনেক তথ্যই এখনো আমাদের অজানা। তবে গবেষকেরা বলছেন, আমাদের সৌরজগতের মধ্যে পৃথিবীর নিকটতম মঙ্গলেও এ আজব-প্রক্রিয়া চলে ভবে, মঙ্গলে কাচ কা ধাতব বৃষ্টির বদলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের তুষারপাত ঘটে।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ