Skip to content

১৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | মঙ্গলবার | ৪ঠা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটা কাপড়ের ঐতিহ্যবাহী নতুন ধারা

এক সময় কোটা কাপড় বলতে শুধু শাড়িকেই বোঝাতো। এখন গজ কাপড় হিসেবেও পাওয়া যাচ্ছে এই কাপড়, তৈরি হচ্ছে কুর্তা, কামিজ এবং পাঞ্জাবি। গরমের সময়ে উৎসবের পোশাকে কোটা কাপড় ব্যবহার করলে আনতে পারে ঐতিহ্য ও আরামের মিশেল।

চীনে তৈরি খাঁটি সিল্কের শিফন বা মসলিনের মতোই স্বচ্ছ কাপড়ের চাহিদা যুগ যুগ ধরে রয়েছে। স্বচ্ছ কাপড়ের স্তরে আলোর ছোঁয়া তৈরি করে এক বিশেষ মায়া। কোটা এই ধরনের কাপড়ের ধারাতেই পড়ে, তবে এর চৌকো প্যাটার্নের বুননই একে আলাদা করেছে। সিল্ক, সুতি বা তসর, নানা উপাদানে তৈরি হয় এই হালকা কাপড়। 

কোটা কাপড়ের ইতিহাস শুরু হয়েছিল ভারতের রাজস্থান রাজ্যের কোটা অঞ্চলে। বলা হয়, কোটা অঞ্চলের রাজা রাও কিশোর সিংহ মহীশুর থেকে দক্ষ বয়নশিল্পীদের এনে কোটা কাপড়ের সূচনা করেছিলেন। প্রথম দিকে এটি পাগড়ি হিসেবে ব্যবহৃত হলেও পরে শাড়ি ও অন্যান্য পোশাকে ছড়িয়ে পড়ে। ঐতিহ্যগতভাবে কোটা কাপড় গর্ত তাঁতে বা পিটলুমে বোনা হয় এবং দুই বাংলাতেই এই কাপড়ের জনপ্রিয়তা ছিল অবিস্মরণীয়। শাড়ি, কুর্তা বা পাঞ্জাবি, যেকোনো উৎসবের সাজে কোটা কাপড় আনে আভিজাত্যপূর্ণ ঔজ্জ্বল্য।

বিভিন্ন ধরনের প্রিন্ট, ব্লক, এমব্রয়ডারি বা হ্যান্ডপেইন্টের কাজের জন্যও কোটা কাপড় বহু বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কোটা কাপড়ের স্বচ্ছ এবং মোলায়েম বৈশিষ্ট্যের জন্য এটিতে স্বাভাবিকভাবেই উজ্জ্বলতা থাকে। এছাড়াও এটি বিভিন্ন শৈলীর ভাঁজ বা কাটে সহজেই আকর্ষণীয় রূপ দেয়। জরি দিয়ে বোনা কোটা শাড়ি, বর্ডার বা জমিনের জড়ির কাজ কোটা কাপড়কে করে তোলে আরও আকর্ষণীয়।

কোটা শাড়ির জমিনে ফুল বা প্রকৃতির নকশা যেমন চমৎকারভাবে ফুটে ওঠে, হাতের কাজের সূক্ষ্মতা তেমনি দৃষ্টিনন্দন। বিভিন্ন ব্র্যান্ড, যেমন ‘ন হন্যতে’, তাদের শারদীয় সংগ্রহে এমব্রয়ডারি করা কোটা শাড়ি নিয়ে এসেছে যা একইসঙ্গে আভিজাত্য এবং উৎসবধর্মী।

কোটা শাড়ি হালকা মনে হলেও এটি বেশ টেকসই। সাধারণত সুতি ও সিল্কের মিশ্রণ থাকায় টেকসই এবং মোলায়েম অনুভূতি দেয়। এ কারণেই আমাদের দেশে সুতি কোটা বেশি জনপ্রিয়। শুধু শাড়ি নয়, বিভিন্ন ফ্যাশন ব্র্যান্ড, যেমন ‘যাত্রা’, ‘গো-দেশি’, ‘ক্লাবহাউস’ কোটা কাপড় দিয়ে কুর্তা, টপ, পাঞ্জাবি ইত্যাদি তৈরি করছে। একসঙ্গে আরাম ও স্টাইলের জন্য ডিজাইনাররা এই কাপড়কে আরো বেশি করে ব্যবহার করছেন।

দেশীয় ফ্যাশনকে বিশ্বের সামনে উপস্থাপনে ঐতিহ্যবাহী কোটা কাপড় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তরুণ ডিজাইনার ও মডেলরা বিভিন্ন ফ্যাশন উইকে দেশের ঐতিহ্য তুলে ধরছেন, আর কোটা কাপড় হয়ে উঠেছে উৎসব ও হাই ফ্যাশনের অনন্য এক অংশ।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ