Skip to content

২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | মঙ্গলবার | ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মস্তিষ্কের যত কর্মকাণ্ড

মানুষের মস্তিষ্ক এখনো বিজ্ঞানীদের কাছে রহস্যময়৷ তবে সেখানকার জটিল কর্মকাণ্ডের অংশবিশেষ ইতোমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে গেছে৷ তাদের মধ্যে কথোপকথনের সময় গ্লিয়াল কোষ তাদের পুষ্টি এবং তরল সরবরাহ করে৷

কিন্তু তখনও কেউ ভাবতে পারে না যে সেই বিশ্রামের সময় আসলে ক্ষণস্থায়ী হতে চলেছে৷ মস্তিষ্কের গভীরে থ্যালামাস ইন্দ্রিয়ের বেশিরভাগ অনুভূতির রিলে স্টেশন হিসেবে কাজ করে৷ মস্তিষ্কের বাকি অংশ যাতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মনোযোগ দিতে পারে, তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বহীন তথ্যগুলি পেছনে ঠেলে দেওয়া হয়৷

কিন্তু আচমকা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে৷ সংবেদনশীল অ্যামিগডালা এমন এক ছবি আবিষ্কার করেছে, যা অপ্রিয় আবেগ ও স্মৃতি জাগিয়ে তুলছে৷ আসলে একটি মাকড়সা দেখে মস্তিষ্কের মালিক উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন৷

নিরাপত্তার খাতিরে হাইপোথ্যালামাস শরীরকে পালানোর জন্য প্রস্তুত করে তুলছে৷ পিটুইটারি গ্রন্থির মাধ্যমে রক্তপ্রবাহে মেসেঞ্জার পদার্থ পাম্প করে সে এই কাজ করছে৷

একই ভাবে সেই নতুন ঘটনার খবর গোটা ভবনের কমপ্লেক্সে ছড়িয়ে পড়ছে৷ বিভিন্ন বিভাগ সেই তথ্যের ভিত্তিতে কাজ শুরু করে দিচ্ছে৷ চাক্ষুষ তথ্যগুলি আরো ভালো করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং বিপদের মোকাবিলা করার সব সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে৷ মোটর কর্টেক্সে পালানোর পরিকল্পনার কাজ চলছে৷ ব্রোকা এবং ওয়ার্নিক এলাকার মতো ভাষা বিশেষজ্ঞরা মাকড়সার সেই প্রজাতির নাম কী, তা মনে করার চেষ্টা করছে৷ বাকি অংশগুলি পরিস্থিতি ভালো করে বোঝার চেষ্টা করছে৷ আশেপাশের মানুষের প্রতিক্রিয়া কী – সেই তথ্যও জনা গুরুত্বপূর্ণ৷

কোম্পানির পরিচালকমণ্ডলী সম্ভবত প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্সে বিরাজ করে৷ কে যে সেখানে আসলে সিদ্ধান্ত নেয়, তা বলা কঠিন৷ অন্য অনেক ক্ষেত্রের মতো এই পরিস্থিতিতেও মস্তিষ্কের অনেক এরিয়া সেই প্রক্রিয়া অংশ নেয় এবং টিম হিসেবেই ভালো সিদ্ধান্ত নেয়৷

এক সেকেন্ডেরও কম সময়ে সিদ্ধান্ত প্রস্তুত হয়ে যায়৷ মোটর কর্টেক্স সঞ্চালন স্থির করে দেয় এবং সেই সংকেত শরীরে চলে যায়৷ সবচেয়ে পুরানো বিভাগ হিসেবে ব্রেনস্টেম মেরুদন্ডের মাধ্যমে সেই সংকেত পাঠায়৷ ফুসফুস একবার গভীর শ্বাস নেওয়ার নির্দেশ পায়৷ তারপর সেরিবেলামকে কাজে নামতে হয়৷ সেখানে জটিল সঞ্চালনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এবং সুনির্দিষ্ট আন্দোলনগুলির মধ্যে সমন্বয় করা হয়৷

সব বিষয় বিবেচনা করে মস্তিষ্কের নির্দেশ অনুযায়ী শরীর চিমটের মতো করে আঙুল দিয়ে মাকড়সার পা ধরে বাগানে ফেলে দিলো৷ এ যাত্রায় বিপদ কাটানো গেছে৷ কিন্তু পরের নাটকও ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে৷ এভাবে মস্তিষ্কে কাজের ব্যস্ততা সারাদিন ধরে চলতেই থাকে৷

আরো অনেক প্রক্রিয়া শুধু অনুমান করা যায়৷ কারণ মস্তিষ্ক নামের কোম্পানি বেশি গোপন কথা ফাঁস করে না৷

অনন্যা/এআই

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ