Skip to content

১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শুক্রবার | ২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বর্ষায় ঘরের যত্ন


আষাঢ় মাস শুরু হয়ে গিয়েছে। এর মানে বর্ষাকাল একদম চলে এসেছে। ষড়ঋতুর এই বাংলাদেশের বর্ষাকাল সৌন্দর্যের পাশাপাশি নিয়ে আসে বেশ কিছু হয় আমিও ঘরে বা বাইরে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় এই সময় তাই বর্ষাকালে অবশ্যই একটু বাড়তি কাজকর্মের প্রয়োজন পড়ে বিশেষ করে ঘরের আসবাবপত্র থেকে শুরু করে অন্যান্য যত কাজ রয়েছে সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে হয়।

এ সময়ে স্যাঁতসেঁতে আর গুমোট ভাব তৈরি হয় ঘরে। সঙ্গে সোঁদা গন্ধ ঘরের মধ্যে বাড়িয়ে দেয় বাড়তি ঝামেলা। তাই বর্ষা মৌসুম শুরু থেকেই ঘরের যত্ন না নিলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা যেতে পারে।
তাহলে বর্ষায় কি কি বাড়তি যত্নের প্রয়োজন আছে তা জেনে নিন

  • বর্ষার সময় স্বাভাবিকভাবেই পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়ে যায়। আর কাঠের আসবাবে পোকার আক্রমণ বেশি হয়। কাঠের আসবাবপত্রগুলো জানালার কাছ থেকে একটু দূরে রাখুন। বৃষ্টির পানি যেন না লাগে ঠিক ততটুকু দূরে রাখুন। আর কোনোভাবে পানি লেগে গেলে শুকনো কাপড় দিয়ে আসবাবগুলো মুছে ফেলুন। বর্ষায় অনেকের বাড়ির দেয়ালেই স্যাঁতসেঁতে কিংবা ফাঙ্গাস পড়ে এমন দেয়াল থেকে দূরত্ব বজায় রেখে আসবাব রাখুন। যদি দেয়াল ঘেঁষে রাখতেই হয় তা হলে আসবাবের পেছনে পলিথিন দিয়ে তারপর রাখুন।
  • গুমোট আবহাওয়ায় সব আর্দ্র হয়ে ওঠে, পানি জমে সেখানে জীবাণুর সংক্রমণ ঘটে। একমাত্র নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাই নানা সমস্যার সমাধান। গৃহের আশপাশের গাছ, টব, পুরনো ভাঙা জিনিসপত্র পানিমুক্ত রাখুন। বর্ষায় যেহেতু পোকা-মাকড়ের উপদ্রব বাড়ে, তাই আপনার বাড়ির চারপাশে কার্বলিক অ্যাসিড দিয়ে রাখুন।
    আর বর্ষাকালে যতটা সম্ভব বারান্দাটা পরিষ্কার করে রাখবেন এবং পানি যাতে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
  • বসে বাড়ির মেঝেগুলো অবশ্যই খুব বেশি পরিষ্কার রাখতে হবে প্রতিদিন স্যাভলন দিয়ে মেঝে মোছার ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ বর্ষায় জীবাণু তুলনামূলক বেশি ছড়ায়। এছাড়াও যেহেতু এই সময় পোকামাকড়ের উপর দোষী থাকে তাই যেকোনো ধরনের কীটনাশক অবশ্যই এমন সময় দিতে হবে যে সময় ঘরে কেউ থাকে না। রাতে ঘুমানোর আগে একটি আগরবাতি জ্বালিয়ে ঘুমাতে পারেন এতে করে ঘরের গুমোট গন্ধটা দূর হবে।
  • বর্ষায় এমনই পোকামাকড় বেড়ে যায় যে চাল, ডাল ও আটায় পোকার উপদ্রব দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে আনাজপাতির মধ্যে কয়েকটা শুকনা নিমপাতা রেখে দিলে পোকার উপদ্রব অনেকটা কম দেখা দিবে।
  • বর্ষার স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া পোশাকেও ফাঙ্গাস ফেলে। ভ্যাপসা গন্ধ হয়ে যায়। অনেকদিন আলমারিতে পড়ে থাকা পোশাক বের করেই পরে ফেলবেন না। খুব পরার আগে কিছুক্ষন নামিয়ে ন্যাপথলিন দিয়ে রাখুন। এতে ফাঙ্গাস চলে যায়, গন্ধটাও কাটে। আর আলমারিতে কাপড়ের ফাঁকে রাখুন কর্পুর। এতে আপনার কাপড় ঠিক থাকবে। বর্ষায় কাপড় ড্যাম হয়ে পচেও যেতে পারে। তাই সেগুলো বের করে মাঝেমধ্যে নামিয়ে খোলা জায়গায় বা বাতাসে রাখুন। বর্ষা গেলে যখন রোদ উঠবে পুনরায় কাপড় গুলো রোদে দিয়ে ভালো করে ভাজ করে তারপরে আলমারিতে তুলে রাখবেন।
  • বর্ষাকালে অতিরিক্ত জামা কাপড় ধোঁয়া থেকে বিরত থাকুন। এছাড়া খুব ঘন ঘন বিছানা চাদর এই সময় পরিবর্তন না করাই ভালো। আর জানালায় একটু পাতলা সিল্কের পর্দা ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।
  • এ সময় রান্নাঘরের দিকে বিশেষ নজর দিবেন। এখানে সবচেয়ে বেশি জীবাণু ছড়ানো সম্ভাবনা থাকে এবং পোকামাকড় বাসা বাঁধে সবচেয়ে বেশি রান্নাঘরেই হয়। তাই রান্না করার আগে এবং পরে ভালো করে রান্নাঘর পরিষ্কার করে নিন।

বর্ষা মানেই পোকামাকর, রোগ-বালাই স্যাঁতসেঁতে ভাব গুমোট গন্ধ নানান ধরনের সমস্যা দিয়ে জর্জরিত। তবে বর্ষা উপভোগ করার মতোই একটা ঋতু। তাই ভালো-মন্দ মিলিয়ে কিছু নিয়ম-কানুন মেনে এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন দেখতে মাথায় রেখে সম্পূর্ণ বর্ষা কাল সাবধানে যাতে কাটে এবং পরিবারের সবাই যাতে সুরক্ষিত থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ