নারীর অভিভাবক কেন পুরুষকেই হতে হবে
সময়ের পরিবর্তন ঘটেছে। মানুষ এখন আধুনিক তকমাধারী। জীবনযাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে কিছু কচি-নিয়ম-নীতির পরিবর্তনও ঘটেছে।
কিন্তু সব হাপিয়ে নারী কেন নিজেই নিজের অভিভাবক হতে পারছেন না? নারীকে কখনো বাবা, কখনো ভাই, কখনো স্বামী; আবার কখনো বা ছেলের ওপর নির্ভরশীল হয়েই জীবন পার করতে হচ্ছে। নারী কি তবে নিজের ভার নিজে গ্রহণের ক্ষমতা আজও অর্জন করতে সক্ষমতা অর্জন করেনি? না কি নারীর জীবন আজও পুরুষতন্ত্রের বেড়াজালেই বন্দি?
বেশিরভাগ পরিবার শৈশব থেকেই কন্যাশিশুকে বিভিন্নভাবে নির্ভরশীল হয়ে থাকার পথ দেখিয়ে দেয়। জীবনের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাই আর হয়ে ওঠে না। নিজের বোধের বিস্তৃতি তাই ঘটেও না। টিউশন থেকে শুরু করে কোন ড্রেস পরবে, কোন খাবারটা খেলে ভালো হবে, কতটা মিশুকে হওয়া যাবে, কতটা নয়, জোরে কথা বলা যাবে না, হাসা যাবে না প্রভৃতি।
কিছু ইতিবাচক শাসন পরিবারগুলোর অবশ্যই রাখা জরুরি কিন্তু সেই শাসনের ফলে সন্তানের কতটা উপকার হচ্ছে সেটাও লক্ষ করার বিষয়। প্রবাদ আছে, কাঁচায় না নোয়ালে বাঁশ পাকলে করে ঠাস ঠাসা’ কথাটি সর্বক্ষেত্রে যেমন প্রযোজ্য, তেমনই নারীর জীবনযাপন, বেড়ে ওঠার
ওপরও সমান প্রযোজ্য। একজন মানুষ শিশুকাল থেকে যেই শিক্ষাটা পেয়ে বড় হয় সেটাই তার মস্তিষ্কে অনেকটা অ্যাপস ডাউনলোডের মতো ডাউনলোডেড হয়ে যায়। আর এর বাইরে নারী কিছুই ভাবতে পারেন না। সবকিছুর সঙ্গে অর্থনৈতিক কারণ তো অবশ্যই জড়িত। কিন্তু ছেলে শিশুও তো পরিবারেই বেড়ে ওঠে।
পরিবারগুলো এখনো বিশেষ করে মায়ের কাছ থেকে কন্যাশিশু এখনো শুধু মেনে নেওয়া মানিয়ে নেওয়ার শিক্ষাটাই বেশি পায়। অন্যায় হলে যে মুখ বুজে সহ্য করতে নেই সেই কথা কয়জন মা তার সন্তানকে শিক্ষা দেনা আবার এটাও বেশিরভাগ মা শিক্ষা দেন না যে নারীর নিজস্ব সত্তা আছে। নারী লিঙ্গভেদ বাদ দিয়ে সে প্রথমে একজন মানুষ। আর একজন মানুষ হয়ে আরেকজন মানুষের ওপর কেনোইবা এত বেশি নির্ভরশীল হয়ে উঠবে?
মানুষ সামাজিক জীব। সংঘবদ্ধভাবে থাকতে ভালোবাসে এবং থাকেও। কিন্তু স্বেচ্ছাচারিতা যেমন স্বাধীনতা হতে পারে না, তেমনি নির্ভরশীলতার মাত্রা অন্য দিকে মোড় নিলে তাও নির্ভরশীলতারই মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। বরং তা বাক্তির জন্য পঙ্গুত্ব, অসহায়হীন করে তোলে। নারীকে নিজের ওপর রেশ টানতে হবে। নিরর্ভশীল হয়ে যেন নিজের বিপদ নিজে থেকে না আসে, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। পরিবার থেকেই আত্মনির্ভরশীল হওয়ার তাগিদ দিতে হবে।
বাবার বাড়ি যেমন নারীদের পিতা-ভাইয়ের ওপর নির্ভরশীলতা গড়ে ওঠে পরিবারিকভাবে এবং নারীকে নির্ভরশীল করে তোলা হয়, তেমনি পরিবারের গতির বাইরে বেরিয়ে তাকে নিজের কাজগুলো নিজেকে করতে দেওয়া হয় না। সবকিছুর সঙ্গে অর্থনৈতিক কারণ তো অবশ্যই জড়িত। কিন্তু ছেলে শিশুও তো পরিবারেই বেড়ে ওঠে। তার ক্ষেত্রেও তো একই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। কিন্তু সেখানে তো কখনো নির্ভরশীলতার বিষয় আসে না। তাহলে কী শুধু অর্থনৈতিক কারণে নারীরা নির্ভরশীল হচ্ছে?
নারী নিজেই নিজের অভিভাবক যেমন আগেও ছিল না। ঠিক, তেমনই পরেও একই ছাঁচে জীবন অতিবাহিত করে। পোশাক থেকে শুরু করে নারীর যাবতীয় বিষয় স্বামীর অনুমতি ছাড়া নারীর করার ক্ষমতাই থাকে না।
বিষয়টা যতটা অর্থনৈতিক তার থেকে হাজার গুণ বেশি মানসিক। খেয়াল করলে আমরা আসেপাশেই এর নানারকম দৃশ্য দেখতে পাই। একজন নারী বাড়ির বাইরে গেলে বিশেষত যদি পুরুষ গার্জিয়ান কাউকে না পায়, তবে বয়সে ছোট হলেও ছোট ভাইটিকে সঙ্গে পাঠায়। সেক্ষেত্রে মায়ের বিশ্বাস একজন গার্জিয়ান সঙ্গে গেছে।এক্ষেত্রে স্পষ্ট বোঝা যায় আমাদের মানসিক পরিস্থিতি কোন স্তরে। নারী পুরুষকে যেভাবে ধীরে ধীরে নিজের অভিভাবকের জায়গা ছেড়ে দেয়, সেভাবে নারীরা নিজের অভিভাবক নিজে হয়ে ওঠে না।
বাবার বাড়ির শাসন-আদর-আবদার ছেড়ে যখন নারী স্বামীর ঘরে যাচ্ছে, সেখানেও নারীকে সর্বদাই পুরুষের আধিপতা মেনে জীবন পরিচালনা করতে হচ্ছে। নারী নিজেই নিজের অভিভাবক যেমন আগেও ছিল না ঠিক, তেমনই পরেও একই ছাঁচে জীবন অতিবাহিত করে। পোশাক থেকে শুরু করে নারীর যাবতীয় বিষয় স্বামীর অনুমতি ছাড়া নারীর করার ক্ষমতাই থাকে না। হঠাৎ করে মন খারাপের জের ধরে যদি নারীকে বাবার বাড়িতেও যেতে হয় সেখানেও হাজারটা পারমিশান এবং গ্রান্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক সমাজ শৃঙ্খলার নামে কি নারী শেকল পরিয়ে রাখছে ন্যা? নিজের কাজ নিজের করার মধ্যে দিয়ে নারীর জীবন সহজ হবে।
কাক্ষিত-অনাকাক্ষিত যাই ঘটুক না কেন নারী সামাল দেওয়ার ক্ষমতা রাখবেন। কিন্তু পরিবার-পরিজন, সমাজ, রাষ্ট্র সবাই নারীর অভিভাবক হিসেবে একজন পুরুষের অস্তিত্বে বিশ্বাসী। স্বাবলম্বী নারীরাও কি এর বাইরে বের হতে পেরেছেন। সমাজব্যবস্থার পরিবর্তন হোক। নারী নিজে একজন পরিপূর্ণ মানুষ নারীদের মনে-প্রাণে বিশ্বাস করতে হবে। তবে পুরুষতন্ত্রের বজ্রাপা নিয়ম নীতির উর্ধ্বে উঠে একটা শোষণহীন সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। বাবা-ভাই-স্বামী ছেলে যদি কেউ পাশে না থাকে তবু নারী তার নির্দিষ্ট গন্তব্যে ঠিক পৌঁছে যাবে। এজন্য প্রধান ভূমিকা রাখতে হবে পরিবারগুলোকে। কন্যাশিশুকে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে বাস্তবজ্ঞানের মুখোমুখি করে তুলতে হবে। আত্মবিশ্বাসের জন্ম দিতে হবে। নিজের কাজ নিজে এবং হাতে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। ফলে নারী- পুরুষকে অভিভাবক হিসেবে নয় বরং সহযাত্রী হিসেবে জীবনকে সুন্দর করে তুলতে সক্ষম হবে।
কেন পুরুষকেই হতে হবে
সময়ের পরিবর্তন ঘটেছে। মানুষ এখন আধুনিক তকমাধারী। জীবনযাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে কিছু কচি-নিয়ম-নীতির পরিবর্তনও ঘটেছে।
কিন্তু সব হাপিয়ে নারী কেন নিজেই নিজের অভিভাবক হতে পারছেন না? নারীকে কখনো বাবা, কখনো ভাই, কখনো স্বামী; আবার কখনো বা ছেলের ওপর নির্ভরশীল হয়েই জীবন পার করতে হচ্ছে। নারী কি তবে নিজের ভার নিজে গ্রহণের ক্ষমতা আজও অর্জন করতে সক্ষমতা অর্জন করেনি? না কি নারীর জীবন আজও পুরুষতন্ত্রের বেড়াজালেই বন্দি?
বেশিরভাগ পরিবার শৈশব থেকেই কন্যাশিশুকে বিভিন্নভাবে নির্ভরশীল হয়ে থাকার পথ দেখিয়ে দেয়। জীবনের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাই আর হয়ে ওঠে না। নিজের বোধের বিস্তৃতি তাই ঘটেও না। টিউশন থেকে শুরু করে কোন ড্রেস পরবে, কোন খাবারটা খেলে ভালো হবে, কতটা মিশুকে হওয়া যাবে, কতটা নয়, জোরে কথা বলা যাবে না, হাসা যাবে না প্রভৃতি।
কিছু ইতিবাচক শাসন পরিবারগুলোর অবশ্যই রাখা জরুরি কিন্তু সেই শাসনের ফলে সন্তানের কতটা উপকার হচ্ছে সেটাও লক্ষ করার বিষয়। প্রবাদ আছে, কাঁচায় না নোয়ালে বাঁশ পাকলে করে ঠাস ঠাসা’ কথাটি সর্বক্ষেত্রে যেমন প্রযোজ্য, তেমনই নারীর জীবনযাপন, বেড়ে ওঠার
ওপরও সমান প্রযোজ্য। একজন মানুষ শিশুকাল থেকে যেই শিক্ষাটা পেয়ে বড় হয় সেটাই তার মস্তিষ্কে অনেকটা অ্যাপস ডাউনলোডের মতো ডাউনলোডেড হয়ে যায়। আর এর বাইরে নারী কিছুই ভাবতে পারেন না। সবকিছুর সঙ্গে অর্থনৈতিক কারণ তো অবশ্যই জড়িত। কিন্তু ছেলে শিশুও তো পরিবারেই বেড়ে ওঠে।
পরিবারগুলো এখনো বিশেষ করে মায়ের কাছ থেকে কন্যাশিশু এখনো শুধু মেনে নেওয়া মানিয়ে নেওয়ার শিক্ষাটাই বেশি পায়। অন্যায় হলে যে মুখ বুজে সহ্য করতে নেই সেই কথা কয়জন মা তার সন্তানকে শিক্ষা দেনা আবার এটাও বেশিরভাগ মা শিক্ষা দেন না যে নারীর নিজস্ব সত্তা আছে। নারী লিঙ্গভেদ বাদ দিয়ে সে প্রথমে একজন মানুষ। আর একজন মানুষ হয়ে আরেকজন মানুষের ওপর কেনোইবা এত বেশি নির্ভরশীল হয়ে উঠবে?
মানুষ সামাজিক জীব। সংঘবদ্ধভাবে থাকতে ভালোবাসে এবং থাকেও। কিন্তু স্বেচ্ছাচারিতা যেমন স্বাধীনতা হতে পারে না, তেমনি নির্ভরশীলতার মাত্রা অন্য দিকে মোড় নিলে তাও নির্ভরশীলতারই মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। বরং তা বাক্তির জন্য পঙ্গুত্ব, অসহায়হীন করে তোলে। নারীকে নিজের ওপর রেশ টানতে হবে। নিরর্ভশীল হয়ে যেন নিজের বিপদ নিজে থেকে না আসে, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। পরিবার থেকেই আত্মনির্ভরশীল হওয়ার তাগিদ দিতে হবে।
বাবার বাড়ি যেমন নারীদের পিতা-ভাইয়ের ওপর নির্ভরশীলতা গড়ে ওঠে পরিবারিকভাবে এবং নারীকে নির্ভরশীল করে তোলা হয়, তেমনি পরিবারের গতির বাইরে বেরিয়ে তাকে নিজের কাজগুলো নিজেকে করতে দেওয়া হয় না। সবকিছুর সঙ্গে অর্থনৈতিক কারণ তো অবশ্যই জড়িত। কিন্তু ছেলে শিশুও তো পরিবারেই বেড়ে ওঠে। তার ক্ষেত্রেও তো একই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। কিন্তু সেখানে তো কখনো নির্ভরশীলতার বিষয় আসে না। তাহলে কী শুধু অর্থনৈতিক কারণে নারীরা নির্ভরশীল হচ্ছে?
নারী নিজেই নিজের অভিভাবক যেমন আগেও ছিল না। ঠিক, তেমনই পরেও একই ছাঁচে জীবন অতিবাহিত করে। পোশাক থেকে শুরু করে নারীর যাবতীয় বিষয় স্বামীর অনুমতি ছাড়া নারীর করার ক্ষমতাই থাকে না।
বিষয়টা যতটা অর্থনৈতিক তার থেকে হাজার গুণ বেশি মানসিক। খেয়াল করলে আমরা আসেপাশেই এর নানারকম দৃশ্য দেখতে পাই। একজন নারী বাড়ির বাইরে গেলে বিশেষত যদি পুরুষ গার্জিয়ান কাউকে না পায়, তবে বয়সে ছোট হলেও ছোট ভাইটিকে সঙ্গে পাঠায়। সেক্ষেত্রে মায়ের বিশ্বাস একজন গার্জিয়ান সঙ্গে গেছে।এক্ষেত্রে স্পষ্ট বোঝা যায় আমাদের মানসিক পরিস্থিতি কোন স্তরে। নারী পুরুষকে যেভাবে ধীরে ধীরে নিজের অভিভাবকের জায়গা ছেড়ে দেয়, সেভাবে নারীরা নিজের অভিভাবক নিজে হয়ে ওঠে না।
বাবার বাড়ির শাসন-আদর-আবদার ছেড়ে যখন নারী স্বামীর ঘরে যাচ্ছে, সেখানেও নারীকে সর্বদাই পুরুষের আধিপতা মেনে জীবন পরিচালনা করতে হচ্ছে। নারী নিজেই নিজের অভিভাবক যেমন আগেও ছিল না ঠিক, তেমনই পরেও একই ছাঁচে জীবন অতিবাহিত করে। পোশাক থেকে শুরু করে নারীর যাবতীয় বিষয় স্বামীর অনুমতি ছাড়া নারীর করার ক্ষমতাই থাকে না। হঠাৎ করে মন খারাপের জের ধরে যদি নারীকে বাবার বাড়িতেও যেতে হয় সেখানেও হাজারটা পারমিশান এবং গ্রান্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক সমাজ শৃঙ্খলার নামে কি নারী শেকল পরিয়ে রাখছে ন্যা? নিজের কাজ নিজের করার মধ্যে দিয়ে নারীর জীবন সহজ হবে।
কাক্ষিত-অনাকাক্ষিত যাই ঘটুক না কেন নারী সামাল দেওয়ার ক্ষমতা রাখবেন। কিন্তু পরিবার-পরিজন, সমাজ, রাষ্ট্র সবাই নারীর অভিভাবক হিসেবে একজন পুরুষের অস্তিত্বে বিশ্বাসী। স্বাবলম্বী নারীরাও কি এর বাইরে বের হতে পেরেছেন। সমাজব্যবস্থার পরিবর্তন হোক। নারী নিজে একজন পরিপূর্ণ মানুষ নারীদের মনে-প্রাণে বিশ্বাস করতে হবে। তবে পুরুষতন্ত্রের বজ্রাপা নিয়ম নীতির উর্ধ্বে উঠে একটা শোষণহীন সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। বাবা-ভাই-স্বামী ছেলে যদি কেউ পাশে না থাকে তবু নারী তার নির্দিষ্ট গন্তব্যে ঠিক পৌঁছে যাবে। এজন্য প্রধান ভূমিকা রাখতে হবে পরিবারগুলোকে। কন্যাশিশুকে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে বাস্তবজ্ঞানের মুখোমুখি করে তুলতে হবে। আত্মবিশ্বাসের জন্ম দিতে হবে। নিজের কাজ নিজে এবং হাতে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। ফলে নারী- পুরুষকে অভিভাবক হিসেবে নয় বরং সহযাত্রী হিসেবে জীবনকে সুন্দর করে তুলতে সক্ষম হবে।