উচ্চশিক্ষায় ফিলিস্তিনি নারী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি: প্রাসঙ্গিক কিছু কথা
উচ্চশিক্ষা নারীদের জন্য স্বপ্নই বটে! পৃথিবীর সবজায়গাই নারীর জন্য নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। তবে এই প্রতিবন্ধকতাকে সহজেই রুখতে পারবে নারীরা। কারণ উচ্চশিক্ষাকে সহজ করতে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) বিশেষ উদ্যোগ দিয়েছে। এই সংগঠন নারীদের উচ্চশিক্ষাকে সহজ করতে বৃত্তি দেবে। তাদের উদ্যোগ নারীদের জন্য সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করবে নিঃসন্দেহে। নারীরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ফলে দেশ জাতির উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর মারফত জানা যায়,দেশ এবং বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে আসা শিক্ষার্থীদের বুকে স্বপ্ন বুননে নিবিড়ভাবে দায়িত্ব পালন করছে আইইউবিএটি। পেশাদারী স্নাতক তৈরির লক্ষ্যে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক এম আলিমউল্যা মিয়ান ১৯৯১ সালে দেশের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আইইউবিএটি প্রতিষ্ঠা করেন।
দেশ-বিদেশে উচ্চশিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়া আইইউবিএটির অন্যতম লক্ষ্য। গত তিন দশক ধরে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানে সফলতা এবং দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে আইইউবিএটির স্নাতকরা। এই সুনামের জন্যই ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান তাঁর দেশের নারী শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষায় অবদান রাখতে আইইউবিএটির নীতিনির্ধারকদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ করেন।
গত শনিবার আইইউবিএটির উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুর রব ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিনা নার্গিসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান। এ সময় তিনি ফিলিস্তিনের নারী শিক্ষার্থীদের আইইউবিএটিতে ভর্তি করানোর বিষয়ে আলোচনা করেন। এর পাশাপাশি আইইউবিএটি এবং ফিলিস্তিনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে গবেষণা, শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্যের আদান-প্রদানের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিনা নার্গিস বলেন, ‘উচ্চ শিক্ষায় নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই আইইউবিএটি বিশেষ বৃত্তি দিয়ে এসেছে। এবার ফিলিস্তিনের ৫০ জন নারী শিক্ষার্থী বৃত্তিসহ উচ্চ শিক্ষা নিতে পারবেন। যা সারা বিশ্বে উচ্চ শিক্ষায় বিরল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’
সেলিনা নার্গিস আরও বলেন, ‘জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত অধ্যাপক এম আলিমউল্যা মিয়ান শিক্ষাদানে নিজেকে নিবেদিত রেখেছিলেন। জন্ম থেকে যে পারিবারিক আদর্শে তিনি বড় হয়েছেন, তা তিনি ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে। অর্থের অভাবে দেশের কোনো মেধাবী মানুষ যেন উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয় সেই উদ্যোগে কাজ করে গেছেন জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত। এই ঐতিহ্য ধরে রেখে এগিয়ে যাচ্ছে আইইউবিএটি।’
আইইউবিএটির উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুর রব বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। সময়োপযোগী, মানসম্মত ও ক্যারিয়ার গঠনে ভূমিকা রাখে, শিক্ষার্থীদের এমন শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চাই। আছে মিয়ান রিসার্চ ইনস্টিটিউট, যা বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা ও প্রকাশনার জন্য শিক্ষক ও গবেষকদের গবেষণা মঞ্জুরি দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা কৃষি, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি, ব্যবসায় প্রশাসন, পরিবেশ, জলবায়ু, টেকসই উন্নয়ন, শিক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।’ আইইউবিএটিতে উপস্থিত হয়ে সার্বিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করার জন্য তিনি ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদানকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আইইউবিএটির প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. মনিরুল ইসলাম, কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহ মিয়াসহ প্রমুখ।
আইইউবিএটির এই উদ্যোগ সত্যি প্রশংসনীয়। নারীদের উচ্চশিক্ষার প্রতি আকর্ষণ বাড়াতেও এই উদ্যোগ কার্যকরী হবে। শুধু তাই নয় বেশিরভাগ নারী শিক্ষার্থীরা মেধাবী হলেও সমাজে তাদের একটা প্রতিবন্ধকতা থাকে আর পরিবারও এ নিয়ে দিধান্বিত থাকে। ফলে দ্বিধাকে সহজেই ভেঙে ফেলতে পারে এ ধরনের বৃত্তি। যা নারী শিক্ষার্থীদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ। তারা বাধার দেওয়াল টপকে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন সহজেই। আইইউবিএটির এই উদ্যোগ বিশ্ব দরবারে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করবে। তাদের এই প্রশংসনীয় উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। এভাবেই নারী শক্তিকে জাগরিত করতে এগিয়ে আসুক সমাজের কর্তাশ্রেণী।