Skip to content

২১শে মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | মঙ্গলবার | ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অন্দরে নববর্ষের ছোঁয়া

পয়লা বৈশাখের ছোঁয়া কেবল মানুষের সাজ-পোশাকে নয়, থাকতে হবে বাড়ির অন্দরেও। তবেই তো উৎসব রূপ নেবে আনন্দে।

বাংলা নববর্ষ, বছরের প্রথম দিন। এই দিনটিকে ঘিরে বাঙালিদের মনে থাকে উৎসবের দোলা। যেহেতু এই দিনটিতে বাড়িতে থাকে অতিথিদের আনাগোনা, তাই বসার ঘর ও খাবার টেবিলে এই দিনটিতে থাকা চাই বিশেষ সাজ। বৈশাখি সাজের আয়োজনে রইল ঘরের সাজ।

ঘর ছোট হোক বা বড়, সাজে থাকা চাই রুচি এবং আভিজাত্যের প্রকাশ। অতিথি আতড়া আর আপ্যায়নের প্রথমেই নজরে আসে। বসার ঘরটি। এই ঘরটিতে বাঙালি ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির ছোঁয়া দিতে নানা লোকজ শিল্পের শো- পিসে সাজাতে পারেন। এক্ষেত্রে মাটির তৈরি শো-পিস, প্রদীপ, নকশিকাঁথা, হাতপাখা ইত্যাদি বেছে নিতে পারেন। মেঝেতে শীতল পাটি বিছিয়ে দিতে পারেন। একটু আভিজাত্য প্রকাশে শতরজি বা নকশিকাঁথা বেস্ট অপশন। যেহেতু গরম, হালকা রঙিন পর্দাই এ সময়ের আদর্শ। ঘরের কোণ সবুজ গাছ আর মাটির কলস দিয়ে সাজাতে পারেন। ঘর, বারান্দা, সিঁড়ি এবং অন্দরের প্রবেশমুখে সাজাতে পারেন আলপনায়।

অন্দরের ছোটখাটো পরিবর্তন আনতে খাবার ঘরটির দিকে নজর দিতে পারেন। ডাইনিং টেবিলটিকে সাজিয়ে তুলুন লোকজ সাংস্কৃতিক উপাদানে। টেবিলে রেক্সিনের ম্যাটের পরিবর্তে বাঁশ-বেতের ট্রে ব্যবহার করতে পারেন। ওপরে মাটির মোমদানি, বাঁশের গ্লাস স্ট্যান্ড ও মাটির ফুলদানিতে তাজা ফুল দিয়ে সাজালে পুরো ঘরের চেহারাই বদলে যাবে। শৌখিন ও রুচিশীল দেখাতে ঘরের দেয়ালে টেরাকোটা ঝুলিয়ে দিতে পারেন। বাঙালিয়ানা আর গ্রাম্য আবহ পেতে মেঝেতে খাবারের আয়োজনে শীতল পাটি হতে পারে সর্বোত্তম পন্থা।

শোবার ঘরটি আরাম আর আয়েশের ঘর। বৈশাখের আবহ পুরো ঘারে ছড়িয়ে দিতে চাইলে এই ঘরটিকে তো বাদ দিলে চলবে না। আপনার সাধের বিছানায় উজ্জ্বল রঙের পাতলা চাদর এবং বালিশের কভার ব্যবহার করতে পারেন। এই ঘরের পর্দার রংও মিলিয়ে নিতে পারেন চাদরের সঙ্গে। চাদর বা বালিসের কভারের ক্ষেত্রে আন্দি, খাদি, সুতি, ভয়েল কাপড় বেছে নিতে পারেন। থাকতে পারে বাঙালি ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, লোকশিল্পের নানা মোটিফের ছোঁয়া।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কিটেকচার ডিসিপ্লিন বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হাসান ভূঁইয়া বলেন, ‘বৈশাখে অন্দরে বাঙালিয়ানার ছোঁয়া দিতে ঘরের কোণে এবং শো-পিস হিসেবে মাটির তৈরি তৈজসপত্র বেছে নিতে পারেন। রান্নাঘরে পাটের দড়ি দিয়ে মাটির হাঁড়ি ঝোলানোর ব্যবস্থা করলে একেবারে মন্দ হবে না। ছোট-বড় পটারি দিয়ে সাজাতে পারেন সিঁড়িঘর। দরজা বা দেয়ানে টাঙিয়ে দিতে পারেন মাটি, বেতের বা কাঠের কারুকার্য করা আয়না।’ পরিশেষে, বৈশাখ বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতি। তাই অন্দরের সাজে থাকতে হবে দেশি সব উপদানের ব্যবহার। ঘরের পর্দা, বিছানার চাদর, কুশন কভার, সবকিছুতে থাকতে হবে রঙের ছোঁয়া। মাটির পটারি, আয়না, কলমদানি, ফুলদানি, ল্যাম্পশেড, ছবির ফ্রেম, ছোট পিঁড়িতে হ্যান্ড পেইন্টিং, মাটির পুতুল, গ্রামীণ হুঁকো, মুখোশ, ওয়াল ম্যাট ইত্যাদিতে থাকতে হবে গ্রামীণ লোকজ আবহ। ঘরের সাজে নিজস্বতা থাকতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আসাদ গেটের আশপাশের দোকান এবং দোয়েল চত্বরের পাশের ফুটপাথেও রয়েছে বিভিন্ন রকম মাটির জিনিসের পসরা। হাজারীবাগ ও শংকর বাসস্ট্যান্ডের ভিতরের দিকেও কয়েকটি মাটির তৈরি জিনিসের দোকান পাবেন। এ ছাড়া আড়ং, রা বাংলাদেশসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে মাটির তৈরি শো-পিস, ফুলদানি, ল্যাম্পশেড থেকে শুরু করে ঘর সাজানোর তৈজসপত্র মিলবে।

দেবিকা দে

Debika Dey Srishty Junior Sub-Editor, Fortnightly Anannya

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ