Skip to content

১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শুক্রবার | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যত্নে বাঁচে সম্পর্ক

মানুষ তো সঙ্গীপ্রিয়। একা থাকা মানুষের স্বভাবজাত নয়। জীবনে চলতে চলতে কখন যে একজন মানুষ আরেকজনের বিশেষ বন্ধু কিংবা প্রিয় মানুষ হয়ে ওঠেন তা হয়তো টেরই পাওয়া যায় না। সাধারনত দুজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক কোন লাভ-ক্ষতির হিসেবে চলেনা। কোনও ধরনের শর্ত ছাড়াই একে-অপরের সম্পর্ক টিকে থাকে আমৃত্যু।

প্রতিটি মানুষ তার ব্যক্তিগত জীবনে কিছু সম্পর্কে বাধা থাকে যে সম্পর্কগুলোকে লালন করা, যত্ন করা একান্ত জরুরী। যেমন সন্তানের সাথে পিতা-মাতার, স্বামীর সাথে স্ত্রী’র, ভাই-বোনের সম্পর্ক ইত্যাদি। এই সম্পর্কগুলোকে যদি যথাযথ সম্মান করা হয় তাহলে তাও সেই অমোঘ শর্ত পূরণ করে প্রকৃত সম্পর্কে রুপ নেয়।

যাকে আমরা বলি সুস্থ সুন্দর সম্পর্ক। আর সম্পর্কের এই সুস্থ থাকার উপরে যেমন ব্যক্তি জীবনের সুস্থতা নির্ভর করে ঠিক তেমনি সামাজিক জীবনেও এর প্রভাব অনেক বেশি। কাজেই এই সম্পর্কগুলোর প্রতি যত্নবান হওয়া ভীষণ জরুরী। তবে বর্তমানে দেখা যাচ্ছে মানুষ খুব বেশি একমুখি হয়ে পরছে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত স্বার্থপরতাকেই দায়ী করা যায়।
একটু খেয়াল করলেই দেখা যায়, মানুষ কেবল নিজেকে নিয়ে ভাবতে গিয়ে সমাজ ও এমনকী পরিবার থেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে । ব্যাক্তিগত স্বার্থে আঘাত লাগার ভয়ে মা-বাবা, ভাই-বোনের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করছে।

যার ফলে একটা সময় খুব বেশি একাকী হয়ে পড়ছেন। যৌথ পরিবার গুলো ভেঙে এখন একক পরিবার তৈরি হচ্ছে। এতে একে-অপরের প্রতি যত্নের মনোযোগেও ঘাটতি পড়ছে। যার ফলে দুজনের সম্পর্কেও তৈরি হচ্ছে দুরত্ব। একটা সময় দুজনের মাঝে স্থান করে নেয় অদৃশ্য দেয়াল। এর একটি বড় প্রভাব সংসার ভাঙনের কারন হয়ে দাঁড়ায়।

পারস্পরিক সম্পর্ককে প্রতিদিন নতুনের মতো যত্ন নিতে পারলে কখনোই সম্পর্কে দূরত্বের সৃষ্টি হয়না। মনে রাখতে হবে শরীরের যেমন যত্ন নিতে হয় ঠিক তেমনি সম্পর্কের যত্ন নিতে হয়। প্রতিদিন আমরা শরীরকে ঝকঝকে রাখি অথচ সম্পর্ক অবহেলায় পরে থাকে তাতে সময়ের ধুলো জমে। সম্পর্কের ধার নষ্ট হয়ে যায়, তাতে মরিচা পরে।

সত্যি বলতে সম্পর্কে থাকে অনেক চাপা অভিমান। আর এই অভিমান, অভিযোগ থেকেই জন্ম হয় অনেক ভুল-বোঝাবুঝির। সামান্য মতের অমিলও যেন খুব বড় হয়ে না দাঁড়ায় দুজনের মাঝে। নানা রকম অনুভূতি নিয়েই তো সম্পর্ক মজবুত থাকে। আর সম্পর্ককে মজবুত রাখার মন্ত্রই হচ্ছে যত্ন নেয়া।

কেউ যদি মনে করেন আছিই তো একসঙ্গে, আর কিসের অভাব। চলছেই তো এক নিয়মে। জীবনের ব্যাস্ততায় এবং অমনোযোগী হয়ে সম্পর্ককে ফেলে রেখেছেন অযত্নে তাহলে দুটি মানুষের যতই ভালো থাকুক না কেন তবুও তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হতে থাকবে। মনে রাখবেন সম্পর্ক ফেলে রাখলে গতিও হারিয়ে ফেলে। তার যত্ন নিতে হয়।
অর্থাৎ সম্পর্কের বাঁধন দৃঢ় করতে প্রিয়জনকে নিজের অনুভূতির কথা জানান। কোনও বিষয়ে নিজের অনুভূতিগুলো লুকিয়ে না রেখে সরাসরি উভয়ের সঙ্গে ভাগ করে নেয়াটা জরুরী।
এছাড়া সম্পর্ক ভাল রাখতে সম্পর্ককে যত্নের সঙ্গে সম্পর্কের প্রতিটি পর্বকে উদযাপন করা প্রয়োজন। আর তাতে একটি সুস্থ পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

দেবিকা দে

Debika Dey Srishty Junior Sub-Editor, Fortnightly Anannya

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ