Skip to content

১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শুক্রবার | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গৃহকোণ জুড়ে বইয়ের ছোঁয়া

প্রতিটি মানুষের গৃহই তার অভ্যন্তরীণ রুচির পরিচয় দিয়ে থাকে। গৃহকোণ নতুন করে সুন্দরভাবে নতুন রূপে নতুন আঙ্গিকে সাজাতে চাই সবাই। গৃহকে যেন আকর্ষণীয় দেখা যায় প্রত্যেকেই সেভাবেই তার গৃহ কে সাজিয়ে তুলতে চায়। তবে ঘরের এক একটা মানুষের রুচি একেকরকম। সবার রুচির কথা চিন্তা করে গৃহ সাজানো একটু কঠিন। তবে কিছু বিষয় থাকে যেটি সবাই পছন্দ করে। এছাড়াও বিশেষ কিছু অনুষঙ্গ দিয়ে ঘর সাজালে ঘর আকর্ষণীয় করে তোলা যায়। প্রয়োজনীয় জিনিস গুছিয়ে রাখা যায়। প্রত্যেকের রুচিরও প্রাধান্য দেওয়া যায়। তাই গৃহ সাজানোর একটি অনুষঙ্গ হিসেবে বই অন্যতম। প্রতিটি ঘরে নির্দিষ্ট স্থানে যদি কিছু বই রাখা যায় তবে মন্দ হয় না।

বইকে এমন স্থানে রাখা উচিত যার চোখে পড়ে এবং যখন বইটি চোখে পড়বে তখন একবার হলেও মন চাইবে একটু স্পর্শ করে বইয়ের দুই একটা পাতা উল্টে কিছু লাইন পড়ি। বইকে কখনো কোন কেবিনেট কিংবা ড্রয়ারের রেখে দেওয়া উচিত না। এতে করে দিনের পর দিন মাসের পর মাস বই শুধু পড়ে থাকবে সেগুলো খুব কমই পড়া হবে।

এছাড়াও ঘরে যখন নতুন অতিথি বেড়াতে আসবে তারা যখন দেখবে প্রতিটি ঘরেই কোন না কোন জায়গায় বই রাখা আছে তারাও তাদের সময় কাটানোর জন্য সেই বইগুলো উল্টেপাল্টে দেখবে। অবসরে প্রিয় মানুষকে কিছুক্ষণ বই পড়ে শোনানো যায়। এতে করে একই সঙ্গে দুজন মানুষের ভালো কিছু সময় কাটে।

অল্প হোক বা বেশি পছন্দ অনুযায়ী ঘরের বিভিন্ন জায়গায় সুন্দর করে বইকে গুছিয়ে সাজিয়ে রাখুন। তাই বই সাজিয়ে রাখার যায় কিভাবে বলা যাক:


বসার ঘরে
কোনো ব্যক্তির বাড়িতে ঢোকার পথেই সেই বাড়ির সৌন্দর্যের আঁচ পাওয়া যায়। তার বসার ঘরই তার মূল সৌন্দর্য। একজন ব্যক্তির রুচিশীল মানসিকতার পরিচয় দেয় তার বসার ঘর। পরিবার থেকে শুরু করে অতিথি সকলের সাথে সবচেয়ে বেশি সময় কাটানোর জায়গা বসার ঘর। বসার ঘরে একটি বই কর্নার রাখতে পারেন। অবশ্যই একটু ছোটো ধাঁচের বুক সেলফ রাখুন। সেখানে একই ধরণের বই না রেখে নানান ধরণের বই রাখুন। সোফার পাশের টেবিলে একটি ঝুড়ির মধ্যে কিছু বই রাখতে পারেন।

রিডিং রুম
যদিও বর্তমান সময়ে সব বাড়িঘরে খুব ছোট ছোট। সেখানে আলাদা করে একটি রিডিং রুম থাকা আকস্মিক ব্যাপার। তবে যদি থেকেই যায় তাহলে তো মন্দ হয় না সেই রিডিং রুমকে একটা বইয়ের ক্যাফে তৈরি করে নেওয়া যাবে নিজের গৃহের মধ্যেই। যেখানে সেখানে হয়তোবা দুই এক পাতা বই পড়া হলেও রিডিং রুমে বসে পুরো বইমুখর পরিবেশে বই পড়ার যে আমেজটা তার অনুভূতিতে অতুলনীয়। একটা রিডিং রুম জুড়ে চারিদিকে শুধু বই আর বই কোথাও বা উপন্যাস, ছোট গল্প, বড় গল্প, কবিতা, কমিক ও থ্রিলার নানান ধরনের মধ্যে যেন এক টুকরো লাইব্রেরী। রিডিং রুমে একটি দেয়াল জুড়ে কাঠের বড় লম্বা ধাঁচের বুক সেলফ রাখুন এবং সেখানে সারি সারি বই সিরিয়াল অনুযায়ী গুছিয়ে রাখুন অবশ্যই একটি টেবিল ও চেয়ার রাখুন। যেখানে বসে আপনি বই পড়তে পারবেন একটি ল্যাম্প, মোমবাতি সাইডে বা যে কোন একটি কর্নারে রাখুন। কিছু কাঁচা ফুলও রাখতে পারেন চাইলে।


শোবার ঘরে বই
রাত হলে যেন চোখের ঘুম কোথায় যেন পালিয়ে যায়। তারপর ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাটতে থাকে হাতের অস্ত্র মোবাইল ফোন। কখনো কি শোবার সময় দুই এক পৃষ্ঠা বই পড়ে দেখেছি কেউ ঠান্ডা মাথায়! যদি রাতে ঘুমানোর আগে কিছু সময় বই পড়া যায় ঘুমটাও বেশ ভালো হয়। তাই অবশ্যই শোবার ঘরে কিছু বই রাখার ব্যবস্থা করা যায়। বেড সাইড টেবিলের পাশে একটি ঝুড়িতে কিছু বই রাখতে পারেন। অথবা সবার ঘরে একটি ছোট বুক সেলফ রেখে দিতে পারেন। যাতে হাতের কাছেই বইগুলো থাকে।
বুক শেলফের ধরণ-ধারণ
শোবার ঘর, হলরুম, বসার ঘর বা অফিস কক্ষ বা লাইব্রেরিতে ব্যবহারের জন্য নানা ধরনের বুক শেলফ রয়েছে। যেমন ফ্রি-স্ট্যান্ডিং, ক্ল্যাসিক, ভাসমান, স্টাডি টেবিল বা ওয়ার্কস্টেশনসহ বুক শেলফ, রুম ডিভাইডার ও মাই বুক শেলফ। এছাড়া নিজস্ব প্রয়োজন চাহিদা এবং ঘরের জায়গা অনুযায়ী মন মত করে ডিজাইন দিয়ে বুক সেলফ বানিয়ে নিতে পারেন। তবে যেমনি হোক না কেন সেই বুক সেলফে পুরোটায় যাতে থাকে আধুনিকতা পাশাপাশি আভিজাত্য।
বইয়ের যত্ন
বই পড়ে শুধু রেখে দিলে হবে না বা শুধুই মাসের পর মাস বুক সেলফে সাজিয়ে রাখতে হবে না। বইয়েরও রয়েছে যত্ন। মাঝে মধ্যে বইগুলো একটু রোদে দিন। পোকামাকড় থাকে এমন স্থানে বই রাখা থেকে বিরত থাকুন। এছাড়াও বই যেখানে রাখবেন সেখানে কালোজিরা ও ন্যাপথালিন ছড়িয়ে রাখুন।

দেবিকা দে

Debika Dey Srishty Junior Sub-Editor, Fortnightly Anannya

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ