বছরজুড়ে আলোচিত যত রেস্তোরাঁ
ঢাকা কিংবা ঢাকার আশেপাশে বসবাস করা ব্যক্তিদের কাছে হঠাৎ করে ঘুরাঘুরি করার জায়গা খুবই কম। তাদের কাছে ঘুরাঘুরি করা কিংবা সময় কাটানোর জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় যে জায়গাটি তা হলো ঢাকার বিভিন্ন রেস্তোরাঁ। তবে যেখানে আপনি সময় কাটাবেন সে জায়গাটা যদি সুন্দর গোছালো আকর্ষণীয় না হয় তাহলে সে অবসরের সুন্দর সময়টা প্রিয়জনের সাথে ততটা সুন্দর হয়ে উঠবে না। বর্তমান সময়ে ঢাকার আনাচে-কানাচে অলিতে গুলিতে অনেক রেস্তোরাঁ হয়েছে। তবে এই বছর নজর কেড়েছে যে তিন রেস্তোরাঁ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য- হেবাং, হাওয়া, বাবুমশাই হ্যারিটেজ।
হেবাং
হেবাং যেন ঢাকার বুকে এক টুকরো পাহাড়। পাহাড়ের অনুভব পেতে চাইলে ঘুরে আসুন হেবাং। হেবাং শব্দের অর্থ ভাপে রান্না করা। পাহাড়িরা মূলত বেশীরভাগ রান্নাই ভাবে করে থাকে। পাহাড়ি বিভিন্ন খাবারের স্বাদ নিয়ে তৈরি করা হয়েছে ঢাকার মোহাম্মদপুরে হেবাং রেস্তোরাঁটি। হঠাৎ করে পাহাড়ি খাবার খেতে মন চাইলে কিংবা ঢাকায় যে আদিবাসী বা পাহাড়ি মানুষরা জীবনে তাগিদে ঢাকায় বসবাস করেন তাদের জন্য হেবাং একটা আশীর্বাদস্বরূপ। রেস্তোরাঁটি সম্পূর্ণ তৈরি হয়েছে বাঁশ , খড় এবং পাহাড়ি ধরনে তৈরি। ঢাকার ইট পাথরের যান্ত্রিক শহর থেকে একটু শান্তিতে যদি সুন্দর একটি পরিবেশের সাথে এবং পাহাড়ি খাবারের সাথে সময় কাটাতে চান তাহলে চলে যান হেবাং। খাবারের নামগুলো যেন ভিন্ন ধরনের তুলসী মালা চালের ভাত, বাম্বো চিকেন, হেবাং শুটকি, কাকড়া ভুনা প্রভৃতি। খাবারের নাম যেমন ভিন্ন ধরনের স্বাদও ভিন্ন ধরনের। হেবাং রেস্তোরাঁটি চার বোন মিলে পরিচালনা করছে।
ঢাকার ফার্মগেটে জাবা নামে তাদের আরো একটি রেস্তোরাঁ রয়েছে। সেখানে গারোদের জনপ্রিয় বিভিন্ন খাবার পাওয়া যায়। জাবা শব্দের অর্থ হচ্ছে সবজি। সেখানে পাহাড়ি সবজির নানান ধরনের খাবারের আইটেম পাওয়া যায়।
হাওয়া
একটু রাজকীয়, একটু ভিন্টেজ আবার সবুজে ঘেরা চারিদিক আবার ইনানী বিচের মত নৌকা, সাদা পাথরের মত ছোট্ট একটি জায়গা নানান নকশার মিশেলে এক বিশাল জায়গা নিয়ে ঢাকার মিরপুরে ১২ তলা ভবনের ছাদে তৈরি হয়েছে এক অভিনব রেস্তোরাঁ। আরাম করে মনের শান্তি নিয়ে প্রিয় মানুষের সাথে অনেকক্ষণ সময় কাটানোর জন্য একটি উপযুক্ত জায়গা হাওয়া রেস্তোরাঁ। হাওয়ার রেস্তোরার খাবারের কথায় যদি আসা যায় তাদের খাবারের স্বাদ খুবই সুস্বাদু। তাদের জনপ্রিয় এবং ভিন্নধর্মী খাবারের মধ্যে নানান ধরনের কাবাব এছাড়াও ইন্ডিয়ান বিরিয়ানি, পিজ্জা, পাস্তা নানান ধরনের খাবার রয়েছে। এছাড়াও তাদের ডেজার্ট আইটেম খুবই সুস্বাদু এবং তাদের বিশেষ ফ্রুট কাস্টার্ড ডেজার্টটি খুবই জনপ্রিয়। এই যান্ত্রিক শহরে প্রকৃতির নির্ধারণ হাওয়া উপভোগ করতে ‘হাওয়া ‘ রেস্তোরাঁটি অন্যতম।
বাবুমশাই হ্যারিটেজ
সম্পূর্ণ রেস্তোরাঁটি দেখলে মনে হবে শহরের বুকে এক টুকরো কলকাতা। দেয়ালে দেয়ালে কবিতার ও গানের মেলা রয়ে গেছে। দেশের ঐতিহ্যবাহী যানবাহন রিক্সা রয়েছে। সম্পূর্ণ রেস্তোরাঁটি দেশীয় আসবাবপত্র দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। বেতের চেয়ার, বেতের টেবিল, নানান ধরনের পুরনো দিনের বই, বেতের আয়না, টেলিফোন প্রভৃতি দিয়ে সাজানো রেস্তোরাঁটি। খাবার পরিবেশন করা হয় মাটির তৈজসপত্রে। ভোজন রসিকদের জন্য অন্যতম একটি সুন্দর জায়গা হতে পারে বাবুমশাই হ্যারিটেজ। সেখানকার খাবারের অভিনব আইটেম দেখে কোনভাবেই লোভ সংবরণ করা সম্ভব নয়।মধ্যাহ্ন ভোজে -গুপি বাঘা মহাভোজ (নানান ধরণের পদ), ডাব চিংড়ি, ইলিশ খিচুড়ি, বেগুন ভাজা চিকেন রোস্ট চাটনি পায়েস প্রভৃতি। যা দেখে শুধু খাদ্য রসিক নয়, খেতে চাইলে সবাই। বিকেল কিংবা সন্ধ্যায় সারাদিনের ব্যস্ততা ভুলে যাবেন এক নিমিষেই উষ্ণ মশলা চা আর মচমচে কাটলেটের সাথে। আরো রয়েছে আলুর দম ফুলকো লুচি ও চিকেন কষা ফুলকো লুচি। সুস্বাদু, সুঘ্রাণে রহস্যের চাদরে আয়েশ হোক আহারে বাবুমশাই হেরিটেজে!