Skip to content

৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যেভাবে বুঝবেন আপনি স্মার্টফোনে আসক্ত

আপনি কি প্রায়ই স্মার্টফোনে থাকেন? আপনার কাছে কি বাস্তব জীবনের চেয়ে অনলাইন ব্যবহার বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে? তাহলে ধরে নিতে পারেন আপনি স্মার্টফোনে আসক্ত হয়ে পড়েছেন৷

অনেক মানুষ দিনে দুই থেকে চার ঘণ্টা পর্যন্ত স্মার্টফোনে থাকেন৷ এটি একধরনের বাধ্যতামূলক আচরণ হয়ে উঠেছে৷ একটু খবর দেখা, অনলাইনে কেনাকাটা করা বা বন্ধুদের ছবি ও ভিডিও দেখা- এমন বিভিন্ন কারণে আমরা কয়েক মিনিট পরপর ফোন দেখি৷ আমাদের অনেকেই ফোন ছাড়া কোথাও যাই না৷ সবসময় আমরা ফোনে বুঁদ থাকি৷

সমস্যা হলো: আমরা ঘুমিয়ে থাকলেও আমাদের ফোন নিয়মিত কাজ করে৷ সাইকোলজিস্ট দুনিয়া ফস বলেন, আমাদের মস্তিষ্ক পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায় না৷ ‘‘আমাদের মস্তিষ্কে এমন একটা সিস্টেম আছে যেটা, আমরা যখন ভালোকিছু করি সেই অনুযায়ী আমাদের পুরস্কার দেয়: যেমন মিষ্টি.. খাবার.. ভালো মুভি দেখা.. প্রেমে পড়া৷ আমরা ফোনে যে চ্যাট আর ছবি দেখি তারও একইরকম প্রভাব আছে৷ তবে সময়ের সাথে সেটা কমে যায়৷ আমাদের রিওয়ার্ড সিস্টেমের কার্যকারিতা ক্রমেই কমতে থাকে- যে কারণে আমাদের আরও বেশি প্রয়োজন হয়৷ তখন আমরা আসক্ত হয়ে পড়ি,” বলেন তিনি৷

এ কারণে আমাদের মধ্যে একাগ্র থাকার মানসিকতা কমে যাচ্ছে, ক্লান্তি ভর করছে৷ স্মার্টফোনে আসক্তি এমনকি বিষণ্নতার মতো মানসিক ব্যাধির দিকেও নিয়ে যেতে পারে৷ অ্যাপ ও পোর্টালের সংখ্যা বাড়তে থাকায় মিডিয়ার অতিরিক্ত ব্যবহার বিষয়টি এখন সাধারণ ঘটনা হয়ে উঠছে৷

পরামর্শক ইয়ুস্টুস ম্যোলেনব্যার্গ বলেন, ‘‘আমাদের প্রতিদিনকার জীবন সহজ করতে ফোন আর অ্যাপ ব্যবহার আরও সহজ করতে কাজ করছেন এই খাত সংশ্লিষ্ট মানুষেরা৷ ফোনে নতুন রেসিপি দেখা হোক কিংবা ওয়ার্কআউট৷ অনেক জরিপে দেখা গেছে, আমাদের স্মার্টফোন ব্যবহারের সময় দিন দিন বাড়ছে৷”

একজন জার্মান মাসে গড়ে ৪০ ঘণ্টা পর্যন্ত সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে থাকেন৷

স্মার্টফোনে আসক্তি বোঝার উপায়

অনেক মানুষ দিনে দুই থেকে চার ঘণ্টা পর্যন্ত স্মার্টফোনে থাকেন৷ এটি একধরনের বাধ্যতামূলক আচরণ হয়ে উঠেছে৷ কোনো বিষয় সম্পর্কে হালনাগাদ থাকতে না পারার ভয়টা অনেক বড়৷ ‘‘যেমন ইনস্টাগ্রাম রিলসের সেটিংসে গিয়ে আপনি ৫, ৬ বা ৮ ঘণ্টা বেঁধে দিতে পারেন৷ কিন্তু আমাকে সেটা দেখতে হবে৷ আরেকটা বিষয় হলো, মানুষ এখন দেখতে পারে যে, আমি বার্তাটি দেখেছি- যেমন হোয়াটসঅ্যাপে নীল টিক, এবং এটা ডিফল্ট সেটিং৷ সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দেওয়ার একটা সামাজিক চাপ থাকে, কারণ সম্পর্কটা যে গুরুত্বপূর্ণ, তা দেখানো প্রয়োজন,” বলেন ম্যোলেনব্যার্গ৷

মহামারির সময় স্মার্টফোনের ব্যবহার আরও বেড়েছে, কারণ লকডাউনের সময় সামাজিক যোগাযোগ সীমত ছিল৷

আপনার হাতে স্মার্টফোন না থাকলে কি সেটি সমস্যার মনে হয়? মানুষের সঙ্গে দেখা করার গুরুত্ব কি আপনার কাছে কমে যাচ্ছে? মিডিয়ার ব্যবহার যে আর আপনার জন্য স্বাস্থ্যকর অবস্থায় নেই, এগুলো তার লক্ষণ৷

অ্যাপ মুছে ফেলা, আর সপ্তাহান্তে স্মার্টফোন ব্যবহার না করার চেষ্টা করুন৷ আপনার ক্ষেত্রে কোনটা কাজ করে সেটি বের করা এবং প্রলোভন এড়াতে শেখা গুরুত্বপূর্ণ৷ ইয়ুস্টুস ম্যোলেনব্যার্গ বলেন, ‘‘নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, আপনি যে মিডিয়া ব্যবহার করছেন তাতে আনন্দ পাচ্ছেন কিনা৷ বিষয়টি আপনি নিজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, যেমন স্মার্টফোন ব্যবহারের সময় নির্দিষ্ট করে দিয়ে৷ সেই সময় শেষ হলে আপনার ফোনের রং ধূসর করে দিন, যেন অতটা বিভ্রান্তকর না থাকে৷ কিংবা নোটিফিকেশন মিউট করে দিন, যেন আপনার মনোযোগ নিয়মিত অন্যদিকে চলে না যায়৷”

তাহলে আপনার সুখি হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে৷ ভার্চুয়াল জগতের চেয়ে বাস্তব জগৎ অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর৷

অনন্যা/এআই

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ