নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে অপপ্রচার বন্ধ হোক
সম্প্রতি নতুন শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে রীতিমতো বহু জলঘোলা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে একের পর এক উসকানিমূলক ভিডিও। যার পরিপ্রেক্ষিতে অধিকাংশই না বুঝে নেতিবাচক মন্তব্য করছেন। সবারই একই দাবি নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল করে পূর্বের কারিকুলাম জারি রাখা। এ নিয়ে ইতিমধ্যে প্রেসক্লাবের সামনে অভিভাবকমণ্ডলী ও শিক্ষার্থীরা একাধিকবার মানববন্ধন করেছেন এবং করে যাচ্ছেন। তাদের দাবি এই শিক্ষাক্রম চালু রাখলে তাদের কোমলমতি সন্তানেরা অদূর ভবিষ্যতে জীবনের লড়াইয়ে পিছিয়ে যাবে। এমন অসংখ্য অভিযোগ-অনুযোগে বারংবার তারা প্রধানমন্ত্রীর নজর কাড়ার চেষ্টা করছেন। এমনকি এই শিক্ষাক্রম নিয়ে অধিকাংশের মধ্যেই একধরনের তীব্র সমালোচনা-উত্তেজনা-উসকানি ও উদ্বেগ পরিলক্ষিত হচ্ছে! যা সুশীল সমাজকে রীতিমতো যথেষ্ট ভাবিয়ে তুলেছে।
এ নিয়ে বর্তমানে দুটি দলের আনাগোনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। একদল এই কারিকুলামকে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার যথেষ্ট উপাদান দেখছেন আরেকদলের মন্তব্য তারা কোনভাবেই এই শিক্ষাক্রম চান না। ডিম ভাজি, আলু ভর্তা, হাঁসের প্যাক প্যাক প্রভৃতি তারা শিক্ষাক্রমে চান না। তারা তাদের সন্তানদের আলু ভর্তা, ডিম ভাজি শেখাতে স্কুল পাঠান না। এমনকি তারা জীবন ও জীবিকা বইয়ের বয়ঃসন্ধি, মাসিক প্রভৃতি বিষয়েও শিক্ষা চান না। তাদের অধিকাংশের মতে এগুলো খুবই গর্হিত কাজ। নগণ্য ও তুচ্ছ কাজ। বাড়িতে থেকেই বা পরিবারেই তারা এসব শিক্ষা গ্রহণ করেন। তাই তারা অবিলম্বে এই কারিকুলাম পরিহার করে শিক্ষার্থীদের আগের মতো শিক্ষা প্রদানের কথা বলছেন।
অভিভাবকদের অভিযোগ তাদের সন্তানদের যেসব হোমওয়ার্ক দেওয়া হচ্ছে সেগুলোর অধিকাংশ তারা ইউটিউব ও গুগলের সাহায্যে সমাধান করছেন। ফলে তারা আরও ফোনের ওপর আসক্ত হয়ে পড়ছে! এই কারিকুলামের আগেও যখন করোনা মহামারী চলছিল তখন শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনা চালিয়েছে জুম, গুগল মিটের মতো অনলাইন প্লাটফর্মে। ফলে তাদের একটা অভ্যেস থেকেই গেছে।
যুগ পাল্টেছে। সময়ও খুব দ্রুত হাত বদল হচ্ছে। শুধু বাঙালির মানসিকতা যে বন্ধ দুয়ারে আটকা পড়ে ছিল সেখানেই রয়ে গেছে! আজ বহির্বিশ্বের দিকে তাকালে দেখা মেলে তাদের সন্তানরাও ঠিক এমনভাবেই শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা উভয়ই প্রদান করছেন। যাতে তারা স্বয়ংসম্পূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। জাপানের মতো উন্নত বিশ্ব তারাও তাদের সন্তানদের স্কুল ঘর পরিষ্কার, ওয়াশরুম পরিষ্কার, মাঠে কাজ করা প্রভৃতি নানাবিধ কাজের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা দেন। আর কেবা না জানেন আজ বিশ্বে জাপানের স্থান কেমন! শুধু জাপান নয় ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশ তাদের সন্তানদের হাতে-কলমে কাজ শেখাচ্ছেন। কম্পিউটার প্রশিক্ষণ থেকে মাঠের কাজ, ঘর ঝাড়ু সবই। কিন্তু আমাদের দেশে তা প্রশ্নবাণে জর্জরিত!
উন্নত বিশ্বের সঙ্গে যখন বাংলাদেশের শিক্ষাক্রমের তুলনা করা হচ্ছে তখন অনেকেই হামলে পড়ছেন বাংলাদেশ মোটেই উন্নত দেশ নয়। কথাটার সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। কিন্তু কথা হলো জাপান, জার্মান, লণ্ডন, থাইল্যান্ড, সুইজারল্যান্ডের মতো দেশগুলো রাতারাতি সভ্য ও উন্নত দেশ বনে যায়নি। তারজন্য তাদের দীর্ঘ দিনের পথচলা বিদ্যমান। পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো সভ্যতা বিদ্যমান রোমে। সেখানেও প্রচলিত রয়েছে, Rome wasn’t built in a day অর্থাৎ রোম একদিনে সৃষ্টি হয়নি। আজ থেকে ৫০ বা ১০০ বছর পরও যদি বাংলাদেশের অবস্থা ও অবস্থান দুটোই জরাজীর্ণ হয় তবে সে দায় তো জাতির ওপরই শুধু বর্তাবে না বরং দেশ যে বা যারা শাসন করছেন তারাও কাঠগড়ায় দাঁড়াবে! ফলে পরিবর্তন সবসময়ই কষ্টের হলেও তা মেনে নিয়ে সামনের দিকে এগুনো বাঞ্ছনীয়।
ডিম ভাজি, আলুভর্তা শেখার জন্য স্কুলে যেতে হয় না এটা অমূলক কথা। পৃথিবীতে শেখার আছে সবই। নতুবা লাখ লাখ টাকা খরচ করে কেউ বাইরের দেশে কুকিং শিখতো না বা হোটেল মেনেজমেন্ট পড়তে যেতেন না। বাড়ি সুন্দর করে গুছানোর মধ্যে দিয়েই তা সম্ভব হতো!
বয়ঃসন্ধি ও মাসিক নিয়েও বর্তমান শিক্ষাক্রমের দিকে আঙুল তোলা হচ্ছে। একজন ভদ্রমহিলার বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তিনি কোনভাবেই চান না তার সন্তান এগুলো সম্পর্কে জানুক বা শিখুক। তার মতে এগুলো বাড়িতেই শেখানো হয় বা পরিবারে থাকতে থাকতে শিখে যায়। এখন প্রশ্ন হলো কতজন বাবা-মা সন্তানকে এগুলো সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জানাতে পারেন? বাংলাদেশের গড়ে প্রায় ৮০% অভিভাবক এ বিষয়ে সন্তানের সঙ্গে কথা বলেন না। তাদের মনে হয় এগুলো প্রকৃতিগতভাবেই শিক্ষণীয়। খুবই হাস্যকর এবং বাজে যুক্তি। যার দরুণ প্রতিবছর অসংখ্য নারী জরায়ু ক্যান্সার, মূত্রনালিতে ইনফেকশন, ঋতুচক্রের নানবিধ জটিলতা, বয়ঃসন্ধিকালের স্বপ্নদোষ, এ্যালার্জি, চর্ম ও যৌন নানাবিধ সংকটে পড়েন। ভোগেনও। কিন্তু তবু তারা শিক্ষাক্রমে এগুলো পড়াতে নারাজ। সেজন্য জোরগলায় কারিকুলামকে বাতিলের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন। পরক্ষণেই নবম শ্রেণির বায়োলজি বইতে তারা ঠিক এর কাটা ছেড়া করছেন!
অভিভাবকদের মধ্যে একধরনের অদৃশ্য প্রতিযোগিতা কাজ করে। কার সন্তান কতটা মেধাবী সেই তকমা লাগাতে তারা ব্যস্ত। আর যখন তকমা লাগাতে তারা ব্যস্ত ঠিক তখনই এমন পরিবর্তন তারা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। এমনকি কোচিং বাণিজ্য যারা চালান তারা বিশেষভাবে এই শিক্ষা কারিকুলামের পিছনে উঠেপড়ে লেগেছেন। কারণ তার ব্যবসা রোহিত হচ্ছে। যারপরনাই আজ পরিবর্তনের জোয়ারকে তারা রোহিত করছে! অন্যদিকে গ্রুপ ওয়ার্ক, একস্ট্রা কারিকুলামের জন্য টাকা খরচ কোনকিছু বর্তমান অভিভাবকরা করতে চান না। তারা চান একটা অবাক করা রেজাল্ট। যা দিয়ে সন্তানকে নিক্তিতে দাঁড় করানো যাবে!
জীবনের সঙ্গে শিক্ষার সংযোগ থাকা অতীব জরুরি। যে শিক্ষায় আনন্দ নেই, জানার আগ্রহ নেই সেখানে কে কী শিখবে? শিক্ষার্থীদের নাচ, গান, শিল্প ও সংস্কৃতি চর্চাকেও তারা প্রশ্নবিদ্ধ করছেন। মোদ্দা কথা একশ্রেণি সন্তানকে তোতাপাখির মতো বুলি শেখাতে চান। এবং এর মধ্যেমে তারা পেতে চান ক্লাসের মেধাবী সন্তান। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার। তারা কোনভাবেই শ্রেণিবৈষম্যহীন সমাজ গঠন করতে চান না। কমোলমতি শিক্ষার্থীদের আনন্দ দিতে চান না। তারা চান সন্তানকে টাকার মেশিন বানাতে। মানুষ বানাতে নয়। ফলে এই অভিভাবকবৃন্দের অধিকাংশ না বুঝে-জেনে স্রোতে গা ভাসাচ্ছেন।
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষকদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর এই প্রশিক্ষণের ভিডিও ক্লিপ এডিটিং করে শিক্ষাক্রম সম্পর্কে নানামুখী প্রশ্ন তোলা হচ্ছে! যা নীতিগতভাবে যেমন অন্যায় তেমনই সামাজিক অবক্ষয়েরও চিত্র। শিক্ষা কারিকুলাম সম্পর্কে না জেনে বা না বুঝেই হুটহাট মনগড়া মন্তব্যে শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে দুর্বল করে তোলা হচ্ছে। তাদের বোঝানো হচ্ছে এই শিক্ষাব্যবস্থার কোন কার্যকরী ফল তারা ভবিষ্যতে পাবে না! ফলে শিক্ষার্থীরাও শিক্ষাবিমুখ হয়ে পড়বে এটাই স্বাভাবিক। এলক্ষে এখনই উপর্যুপরি সময় শিক্ষক প্রশিক্ষণের সময় আগেই শিক্ষকদের ফোন হস্তগত করা। এটা শুধু প্রশিক্ষণেরই অংশ নয় বরং এটাই বাঞ্ছনীয় হওয়া উচিত। শিক্ষক যখন ক্লাসে উপস্থিত থাকবেন তার কাছে বা শিক্ষার্থীদের কাছে স্মার্ট ফোন থাকা অনুচিত। এতে নানাভাবে শিক্ষা ব্যাহত হওয়া স্বাভাবিক। ফলে যারা এসব উস্কানিমূলক ভিডিও, কথাবার্তার ছড়িয়ে দিয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করছেন তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
ইতোমধ্যে শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনি কয়েকবার প্রেসমিটিং, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বর্তমান কারিকুলামের যৌক্তিক আলোচনা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন এই কারিকুলাম বহুদিনের গবেষণার ফল। শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট সময়ে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছাতে নতুন কারিকুলাম করা হচ্ছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রত্যাশা নতুন শিক্ষাক্রমের শিক্ষার্থীদের শুরু জ্ঞান অর্জন নয়, জ্ঞান অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে দক্ষতা, সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি, মূল্যবোধ শিখতে পারবে। সব কিছুর সমন্বয় ঘটিয়ে শিক্ষার্থীরা দক্ষ মানুষ হবে, নিজেরা চিন্তা করতে শিখবে, চিন্তার জগত প্রসারিত হবে, শিক্ষার্থীরা যা শিখবে তা প্রয়োগ করা শিখবে, সমস্যা চিহ্নিত করতে পারবে, তার সমাধান খুঁজে বের করতে পারবে। আমরা শিক্ষার্থীদের সেভাবে গড়ে তুলতে চাই।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে যে গন্তব্য আমরা ঠিক করেছি, সেই গন্তব্যে পৌঁছাতে হলে গতানুগতিক যে পড়াশোনা সেটি যথেষ্ট ছিল না। কাজেই আমরা নতুন শিক্ষাক্রমে যাচ্ছি, তাতে যেন সঠিক সময়ে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছাতে পারি। সেই প্রত্যাশায় নতুন কারিকুলামের জন্য সবাই আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’ তিনি বলেন, তিনি বলেছেন, নতুন যে শিক্ষাক্রম চালু হচ্ছে সেটা হবে আনন্দময়। শিক্ষার্থীরা আনন্দের সঙ্গে এ শিক্ষাক্রমে শিখতে পারবে। তারা সমাজকে এবং শিক্ষকদের প্রশ্ন করার মাধ্যমে শিখবে। তবে শিক্ষার্থীদের শুধু প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হয়ে উঠলেই চলবে না, ভালো মানুষ হতে হবে।’
শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি বলেছেন, দেশের ৮শ’র বেশি বিশেষজ্ঞ নতুন শিক্ষাক্রম তৈরীর জন্য কারিকুলাম প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি বলেন, সবাইকে কোনও না কোনভাবে এর সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওয়েবসাইটে রেখে জনগণের মতামত, পরামর্শ নেওয়া হয়েছে, সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। সবশেষে প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে, কিছু পরামর্শসহ তিনি তাতে অনুমোদন দিয়েছেন।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমা আখতারের স্বাক্ষরে একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। গণমাধ্যম বরাত জানা যায়, ‘সংশ্লিষ্ট সকলকে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রাক প্রাথমিক হতে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের একমাত্র জাতীয় প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের মানসম্পন্ন শিক্ষা উন্নয়ন ও প্রসারে এই প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমরা লক্ষ করছি, স্বার্থান্বেষী একটি গোষ্ঠী সম্প্রতি নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন ও ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জনমনে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে বা আমাদের জাতীয় সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের পরিপন্থী কাজকে শিক্ষাক্রমের কাজ বলে প্রচার করা হচ্ছে। নবির ছবি আঁকতে বলা হয়েছে লিখে মিথ্যাচার করছে। হিন্দি গানের সাথে স্কুলের পোশাক পরা কিছু ছেলেমেয়ে ও ব্যক্তির অশ্লীল নাচ আপলোড করে বলা হচ্ছে শিক্ষাক্রমের নির্দেশনা-যা সর্বৈব মিথ্যা। কিছু লোক ব্যাঙের লাফ বা হাঁসের ডাক দিচ্ছে এমন ভিডিও আপলোড করে বলা হচ্ছে এটা নতুন শিক্ষাক্রমের শিক্ষক প্রশিক্ষণের অংশ যা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার।
নতুন শিক্ষাক্রমে সকল ধর্ম বর্ণের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শনের কথা বলা হয়েছে। আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে ভবিষ্যত প্রজন্মের মধ্যে বিকশিত করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মিথ্যা অপপ্রচারের মাধ্যমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমকে বিপন্ন করার প্রচেষ্টা যারা করছেন তাদের এরূপ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য সতর্ক করা যাচ্ছে। শিক্ষাক্রমের কোনো ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলে তা আমাদের জানালে আমরা অবশ্যই তা বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় সংশোধন পরিমার্জন করবো। কিন্তু অপপ্রচার করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এমতাবস্থায় সর্বসাধারণকে মিথ্যা প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হবার জন্য এনসিটিবি অনুরোধ জানাচ্ছে এবং এরূপ মিথ্যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড, শেয়ার বা কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।’
বর্তমান কারিকুলাম নিয়ে যে ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তা নিতান্তই একশ্রেণির হুজুগের ফল।
দেশ ও জাতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই এমন গুজব ও উস্কানিমূলক কথাবার্তা, ভিডিও ছাড়ানো হচ্ছে। তারা পরিবর্তনকে মানতে নারাজ তাই যেভাবেই হোক এর নেতিবাচক দিক তুলে ধরেছেন। অতিরঞ্জিত কথা, ভিডিও দেখিয়ে জনগণের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি করছেন। কোমলমতি শিশুদের শিক্ষা সবসময় আনন্দদায়ক ও প্রাকটিকাল হওয়ায়ই উচিত। এর মধ্যে দিয়ে তাদের সঠিক বোধের জাগরণ ঘটবে। ফলে না বুঝে, না জেনে গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসানো বাদ দিন। সঠিকতার চর্চা করতে শিখুন। পরিবর্তনকে মেনে নিয়ে তার থেকে ভালোটা নেওয়ার চেষ্টা করুন। শুভবোধের উদয় হোক। জাতির ভেতরের কুসংস্কার, সাম্প্রদায়িক মনোবৃত্তির বিনাশ হোক। জাগরণ ঘটুক প্রকৃত শিক্ষা, সংস্কৃতি, রুচি ও মানবতার চর্চা।