Skip to content

৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘুরবো এবার খাগড়াছড়ি 

একের ভিতর অনেক জায়গা ঘুরতে চাইলে খাগড়াছড়ি অন্যতম একটি ভ্রমণ জায়গা হতে পারে। সেখানে একই সাথে ঝর্ণা, পাহাড় এবং নানা ধরনের লেক উপজাতীয় সংস্কৃতির বৈচিত্র্যতা। মিশ্র একটি অনুভূতি পাওয়া যাবে। 

এখানে রয়েছে আকাশ-পাহাড়ের মিতালী এক অনন্য সৌন্দর্য্য। চোখ যায় যেদিকেই সবুজ শুধু সেখানেই। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে আর রহস্যময়তায় ঘেরা খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমণবিলাসীদের জন্য আদর্শ স্থান। প্রকৃতির অনন্য সৌন্দর্য ছড়িয়ে আছে এ জেলার চারদিকে। 

খাগড়াছড়ি জেলার দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য রিছাং ঝর্না, আলুটিলা গুহা ও ঝর্ণা, দেবতা পুকুর, মহালছড়ি হ্রদ, পানছড়ি/শান্তিপুর অরণ্য কুটির, মানিকছড়ি মং রাজবাড়ি, হাতিমাথা পাহাড়, বিডিআর স্মৃতিসৌধ, রামগড় লেক ও চা বাগান পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। তবে খাগড়াছড়ি গিয়ে যদি সবাই কেউ চিন্তা করে থাকেন  এই জায়গাগুলোতে একই সাথে ঘুরে আসবেন তাহলে তা সম্ভব নয়। অবশ্যই ধাপে ধাপে যেতে হবে।  তাই সেই ক্ষেত্রে আমরা আজ ঘুরে আসবো কিছু  জায়গাতে।

দেবতা পুকুর

অন্যতম জনপ্রিয় জায়গা দেবতা পুকুর। খাগড়াছড়ি জেলার মাইসছড়ি এলাকার নুনছড়ি মৌজায় অবস্থিত সমুদ্র সমতল হতে প্রায় ৭০০ ফুট উপরে ৫ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত হ্রদটিই আসলে দেবতার পুকুর নামে পরিচিত। কথিত আছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের জল তৃঞ্চা নিবারণের জন্য স্বয়ং জল-দেবতা এ পুকুর খনন করেন। পুকুরের পানিকে স্থানীয় লোকজন দেবতার আশীর্বাদ বলে মনে করে। দেবতার অলৌকিকতায় পুকুরটি সৃষ্ট বলে এতো উঁচুতে অবস্থানের পরও পুকুরের জল কখনও শুকোয় না। ত্রিপুরাদের ধারণা, স্থানীয় ব্যক্তিদের আশীর্বাদস্বরূপ দেবতা নিজে এ পুকুর করে দিয়েছেন। তাদের মতে, এ পুকুরে গোসল করলে মনোবাসনা পূরণ হবে। খাগড়াছড়ি শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে হাজার ফুট উচ্চতায় পাহাড়ের ওপর এই পুকুরের অবস্থান। প্রতিবছর বৈসুকে এখানে তীর্থ মেলা বসে। খাগড়াছড়ি-মহালছড়ি-রাঙামাটি সড়কের সাত কিলোমিটার গেলে মাইচছড়ি। এই মাইচছড়ি থেকে চার কিলোমিটার পশ্চিমে গেলে নুনছড়ি গ্রাম। এই নুনছড়ি গ্রাম থেকে এক কিলোমিটারের পাহাড়ি পথ বেয়ে পাহাড়ের চূড়ায় উঠলেই দেবতা পুকুর। এ পুকুরের স্বচ্ছ স্থির জলরাশি পর্যটকদের মনে প্রশান্তি জোগাবে। স্বচ্ছ জলস্রোতে স্থির পাথর আপনাকে মোহিত করবেই। প্রকৃতির অপূর্ব সাজে মুগ্ধতায় শিহরিত হবে আপনার মন। ছবি প্রেমিক পর্যটকরা এখানে ছবি তোলেন অনেকেই। বাংলাদেশের আর কোথাও এত উঁচুতে এমন সলিল সঞ্চিত বারির আধার আর নেই। খাগড়াছড়ি জেলার অন্যতম একটি সুন্দর জায়গা দেবতা পুকুর। এই জলাশয়ের পানি কখনো শুকিয়ে যায়না এবং বৃষ্টি অথবা বর্ষাকালের সময় এই জলাশয়ের পানি আবার ভরে উঠে | আপনি যদি প্রকৃতির মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে চান তাহলে অবশ্যই দেবতা পুকুরে একবার হলেও ঘুরে আসতে হবে এবং সেখানকার মনোরঞ্জিত পরিবেশ আপনি উপভোগ করতে বাধ্য হবেন। (তথ্য সংগৃহীত) 

কিভাবে যাওয়া যায়

খাগড়াছড়ি-মহালছড়ি-রাঙ্গামাটি সড়কে জেলা সদর থেকে ১১কিঃ মিঃ দক্ষিণে মূল রাস্তা হতে ৪কিঃ মিঃ পশ্চিমে সদর উপজেলার নূনছড়ি মৌজায় চির প্রশান্তিময় দেবতার পুকুরের অবস্থান।

আলুটিলা গুহা 

আলুটিলা গুহা শুধু বাংলাদেশ নয় মূলত এটি বিশ্বে যতগুলো প্রাকৃতিক গুহা আছে আলুটিলা গুহা তার মধ্যে অন্যতম। এ গুহাটি খুবই অন্ধকার ও শীতল নয় বিশ্বের অন্যতম সুরঙ্গ গুহারখাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার মূল শহর থেকে ৭ কিলোমিটার পশ্চিমে সমুদ্র সমতল থেকে ৩ হাজার ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট আলুটিলা গুহা বা রহস্যময় সুড়ঙ্গ অবস্থিত। স্থানীয়রা একে বলে মাতাই হাকড় বা দেবতার গুহা। আলুটিলা খাগড়াছড়ি জেলার সবচেয়ে উঁচু পর্বত। লোকমুখে শোনা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় খাগড়াছড়িতে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় তখন এখানকার জনগণ এ পর্বত থেকেই বুনো আলু সংগ্রহ করে তা খেয়ে বেঁচে থাকত। তারপর থেকে এ পর্বতটি আলুটিলা নামেই পরিচিতি লাভ করে। এখনও এখানে নাকি প্রচুর পরিমাণে বুনো আলু পাওয়া যায়। আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে এর রহস্যময় সুড়ঙ্গ। পাহাড়ের চূড়া থেকে ২৬৬টি সিঁড়ির নীচে আলুটিলা পাহাড়ের পাদদেশে পাথর আর শিলা মাটির ভাঁজে গড়া এ রহস্যময় সুড়ঙ্গের অবস্থান। গুহামুখের ব্যাস প্রায় ১৮ফুট৷ আলুটিলার গুহায় যেতে হলে প্রথমেই আপনাকে টিকেট কেটে নিতে হবে মূল গেট থেকে। এরপর মশাল কিনে নিতে হবে। প্রধান গেট দিয়ে ঢোকার পরে বেশ খানিকটা পাহাড়ি পথ পেরুলেই মিলবে গুহার সন্ধান। গুহার পাথর গুলো পিচ্ছিল হবার কারনে পা পিছলে যায় এমন স্যান্ডেল বা জুতা পরা যাবে না। অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য মোবাইল টর্চ বা টর্চ লাইট নিয়ে যেতে পারেন সঙ্গে। অ্যাডভেঞ্চার ও ভ্রমন পিপাসুদের জীবনে অন্তত একবার হলেও ঘুরে আসা উচিত এই গুহাটি। অবশ্যই যথেষ্ট পরিমাণ সতর্কতা অবলম্বন করার চেষ্টা করবেন না হলে প্রাণের ঝুঁকি থাকতে পারে। 

(কিছু তথ্য সংগৃহীত) 

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে শান্তি, শ্যামলী, হানিফ ও অন্যান্য পরিবহনের বাসে খাগড়াছড়ি যেতে পারবেন৷ ভাড়া পড়বে ৫২০ টাকা। এছাড়াও বিআরটিসি খাগড়াছড়ি যায়। (BRTC) ও সেন্টমার্টিন পরিবহনের এসি বাস।

খাগড়াছড়ি শহর থেকে চান্দের গাড়ি অথবা লোকাল বাসে চড়ে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে যেতে হবে। অথবা সিএনজি করেও যেতে পারবেন। তাই সাজেক ভ্রমণের প্ল্যান করলে আলুটিলা গুহার সাথে অল্প সময়েই এছাড়া হাজাছড়া ঝর্ণাও দেখে নিতে পারেন৷

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ