Skip to content

২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্পেনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় শহর সেভিয়া?

সেভিয়ার ঐতিহাসিক কেন্দ্রে অনেকগুলো আকর্ষণীয় স্থাপত্য আছে৷ শহরের রাস্তা ধরে হাঁটলে একসময় আপনি সেভিয়া ক্যাথিড্রাল দেখতে পাবেন৷ এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় গথিক ক্যাথিড্রাল৷

স্পেনের রাজা তৃতীয় ফার্দিনান্দ ১২৪৮ সালে মুরদের কাছ থেকে শহরটি দখল করার পর একটি মসজিদের জায়গায় এই গির্জাটি নির্মাণ করা হয়৷

তবে সেভিয়ায় শুধু ঐতিহাসিক ভবনই নেই, সেখানে ‘সেতা জে সেভিয়া’ বা ‘সেভিয়ার মাশরুম’ও আছে৷ ভবিষ্যৎমুখী এই কাঠের অবকাঠামোতে কেন্দ্রীয় বাজার আর ইভেন্টের জন্য জায়গা আছে৷ ভবনের একেবারে উপরে উঠলে শহরের একটা সু্ন্দর দৃশ্য দেখা যায়৷ সেইসঙ্গে সেভিয়ার দারুণ আবহাওয়াও উপভোগ করা যায়৷ সেভিয়ায় বছরে প্রায় ২,৯০০ ঘণ্টা সূর্যের আলো পাওয়া যায়! তবে গ্রীষ্মের সময় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস উঠতে পারে৷ এটি যদি আপনার কাছে অনেক মনে হয় তাহলে সেখানে বসন্ত বা শরতে যাওয়া ভালো৷

শহর সম্পর্কে ভালো ধারণা পাওয়ার পর ‘রয়েল আলকাজার অফ সেভিল’ ঘোরার জন্য অনেক সময় রাখতে পারেন, কারণ সেভিয়া গেলে সেখানে যেতেই হবে৷ ক্যাথিড্রালের কাছে পুরনো শহরের প্রান্তে এটি অবস্থিত৷ ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ এই রাজপ্রাসাদ এখনও স্পেনের রাজপরিবার ব্যবহার করে থাকে৷ টিকিটের দাম সাড়ে ১৩ ইউরো৷

সামুয়েল গারিন রদ্রিগেজ একজন ইতিহাসবিদ৷ তিনি দর্শনার্থীদের রাজপ্রাসাদ ঘুরিয়ে দেখান৷ তিনি জানান, ‘‘রয়েল আলকাজার সবসময় স্পেনের রাজার সিদ্ধান্ত নেয়ার জায়গা ছিল৷ ষোড়শ শতকে এটা ব্যবসায়ীদের কনসুলেট ছিল যেখান থেকে দক্ষিণ অ্যামেরিকায় সমুদ্রযাত্রার লাইসেন্স দেয়া হতো৷”

আলকাজার প্যালেসের পর আপনি পুরনো শহরের ঐতিহাসিক রাস্তাগুলো ঘুরে দেখতে পারেন৷ সবজায়গায় কমলার গন্ধ পাবেন৷ যদিও খেতে খুব তিতা৷ রদ্রিগেজ জানান, ‘‘রয়েল আলকাজারের একটি ঐতিহ্য আছে৷ বছরে একবার ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত সেখানে যান৷ এরপর সেভিয়ার মেয়রের সঙ্গে মিলে বিশেষ তিতা জ্যাম তৈরির জন্য কমলা বাছাই করেন৷ এরপর তা ব্রিটিশ রাজপরিবারে পাঠানো হয়৷”

পরের গন্তব্য ‘তোরে দেল ওরো’৷ গুয়াদালকেভির নদী দিয়ে শহরে ঢোকা জাহাজগুলোর উপর নজর রাখতে ১৩ শতকে এই গোল্ডেন টাওয়ারটি নির্মাণ করা হয়৷ রদ্রিগেজ বলেন, ‘‘এর নাম গোল্ডেন টাওয়ার এই কারণে নয় যে, সেখানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আনা সোনা রাখা হয়েছিল৷ বরং মর্টার আর খড় দিয়ে তৈরির কারণে টাওয়ারটি যে সোনালি রূপ পেয়েছে, সে কারণে এমন নামকরণ করা হয়েছে৷”

ফ্ল্যামেঙ্কো না দেখে সেভিয়া ছাড়লে সফর অপূর্ণ থেকে যাবে৷ সেভিয়ার অন্যতম সবচেয়ে পুরনো ফ্ল্যামেঙ্কোর মঞ্চ হচ্ছে লোস গাইয়োস৷ ৩৫ ইউরো দিয়ে আপনি একটি অথেনটিক শো দেখতে পারবেন৷ শেষ হতে এক ঘণ্টার একটু বেশি সময় লাগে৷ রাতে দুবার হয় এটি৷

সেভিয়াকে ফ্ল্যামেঙ্কোর জন্মস্থান বলে বিবেচনা করা হয়৷ ফ্ল্যামেঙ্কো শেখার জন্য সেখানে অনেক স্কুল আছে৷ আন্দালুসিয়ার রোমা সম্প্রদায় এটি শুরু করেছিল বলে ধারণা করা হয়৷ পরে ইহুদি ও মুরদের ঐতিহ্য ঢোকানো হয়৷

ফ্ল্যামেঙ্কো নাচিয়ে লুজিয়া লা ব্রনসে বলেন, ‘‘আন্দালুসিয়ার সংস্কৃতির একটি বড় অংশ ফ্ল্যামেঙ্কো৷ এখানকার বেশিরভাগ শিল্পী ছোটবেলা থেকেই ফ্ল্যামেঙ্কোর সঙ্গে বেড়ে ওঠেন৷ এটা জীবনযাপনের একটা পদ্ধতি৷ যখন আপনি নিজেকে ফ্ল্যামেঙ্কোতে সঁপে দেন তখন ঘুম থেকে ওঠা এবং ঘুমানো পর্যন্ত এর মধ্যেই বাস করেন৷”

সেভিয়া নিয়ে আমাদের রায় কী? স্পেনের সবচেয়ে সুন্দর শহর হিসেবে পরিচিত সেভিয়া অবশ্যই তার সুনাম ধরে রেখেছে৷ তবে অবশ্যই সৌন্দর্য্যের সংজ্ঞা একেকজনের কাছে একেকরকম৷

অনন্যা/এআই

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ