ঈদে ঘরের কাজে নারীকে পুরুষ সহযোগিতা করুক
আর মাত্র ৪ দিন পরেই পালিত হতে যাচ্ছে মুসলমান সম্প্রদায়ের অন্যতম উৎসব ‘ঈদুল আজহা’। এই ঈদকে ঘিরে জনজীবনে ইতিমধ্যেই নানারকম আয়োজন চলছে। যেহুতু এটা কোরবানির ঈদ ফলে ঘরের কাজটাও এবার চতুর্গুণ। বাইরের আত্মীয়-স্বজনের আসা-যাওয়া তো আছেই। সেটা ঈদুল ফিতরের সময়ও থাকে। কিন্তু এবার একটু ভিন্ন। কারণ বাড়িতে কোরবানি দেওয়া থেকে শুরু করে নানাবিধ কাজ রয়েছে। সেক্ষেত্রে নারীদের একা হাতে সব সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়।
ঈদ মানে খুশি। ঈদ মানে আনন্দ। নানাবিধ আয়োজনের মাধ্যমে একটি দিনকে বিশেষভাবে মহিমান্বিত করার জন্যই এই আয়োজন। খোদার দরবারে শুকরিয়া আদায়ের জন্য মুসলমানরা ঈদুল আজহাতে কোরবানি দিয়ে থাকেন। যাদের সামর্থ্য আছে তারাই এতে অংশগ্রহণ করেন। এবং যাদের যথেষ্ট সাধ্য নেই, সমাজের দরিদ্র-মিসকিন যারা তারা সামর্থ্যবানদের কাছ থেকে সাহায্য গ্রহণ করেন। ফলে ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে ঘরে-ঘরে এর প্রস্তুতি চলছে বর্তমানে। জামা-কাপড় কেনাকাটা থেকে শুরু করে পরিবারের জন্য বিশেষ কিছু খাবারের মেন্যু ঠিক করা, কোরাবানি থাকলে সে সম্পর্কীয় যাবতীয় কাজ সবেই তোড়জোড় চলছে। উৎসবের এই আমেজে পরিবারের নারীটির প্রতি অধিকাংশই নজর দেন না। যা খুবই কষ্টদায়ক!
স্বভাবতই দেখা যায় কোনো পরিবারে একজনের ওপরই বাড়তি চাপ পড়ে। সংসারে মায়ের কাজের শেষ নেই। তিনি দিনান্ত পরিশ্রম করেন কোনো অভিযোগ ছাড়াই। তার এই কাজ চলতে থাকে পুরো উৎসবের সময়টাকে ঘিরে। একটু বিশ্রামের সুযোগও পান না। উৎসবকে ঘিরে গ্রাম-গঞ্জে দেখা যায়, বাড়ির নারীটি এর আয়োজনে ব্যস্ত। কাপড় পরিষ্কার, ঘর পরিষ্কার করা, ফ্রিজটা খানিক পরিষ্কার করা এমন নানাবিধ কাজে ব্যস্ত সময় পার করেন।
অতিথিরা বেড়াতে আসবেন ঈদে তাদের কিভাবে একটু ভিন্নভাবে আপ্যায়ন করা যায় সে বিষয়ও নজর এড়ায় না মায়েদের। তবে কোরবানির ঈদটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। কাজের চাপ পরিবারের নারীটির ওপর এত বেশি হয় যে, তিনি উৎসবটা ঠিকমতো পার করতে হিমশিম খেয়ে যান। মায়েদের এই কাজকে একটু সহজ করতে পারে পরিবারের সদস্যরাই। তারা যদি মায়ের দিকে বা পরিবারের নারী সদস্যটির প্রতি সহমর্মি হন তবে এ সমস্যা লাঘব করা সম্ভব।
পরিবারে যদি তিন থেকে চারজন সদস্য থাকেন তবে সবাই যদি কাজ ভাগ করে নেন তবে মায়েদের একটু বিশ্রাম হয়। তারাও অন্তত কিছুটা সময় ঈদের আনন্দে সামিল হতে পারেন। পরিবারের ছোট-বড়দের সঙ্গে একসঙ্গে বসে খেতে পারেন। কিছুটা আনন্দঘন সময় পার করতে পারেন। তাই এই ঈদটা হোক সহমর্মিতার-সহোযোগিতার। পরিবারের নারী সদস্যটির প্রতি সব কাজ চাপিয়ে দিয়ে ঈদ উদযাপন না হোক। নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবাই মিলে সবাইকে সাহায্য সহোযোগিতার মাধ্যমে একটি কল্যাণকর-সুন্দর ঈদ উদযাপনের ব্রত গ্রহণ করতে হবে। এতে অবশ্যই বাড়তি আনন্দ যুক্ত হবে। এবং নারীর কাজ কমবে। পরিবারের সদস্যদের আত্মিক সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হবে।